ঝিনাইদহের কালীগঞ্জে চার ঘণ্টায় পাগলা কুকুরের কামড়ে শিশু ও নারীসহ আহত হয়েছেন অন্তত ১৭ জন। সোমবার সকাল ৮টা থেকে বেলা ১২টা পর্যন্ত শহরের মধুগঞ্জ বাজার, বলিদাপাড়া ও বড় রায়গ্রামসহ পার্শ্ববর্তী এলাকার মানুষকে কামড়ে জখম করে কুকুরটি।
কালীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক ইমরান হোসেন এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, দুপুর পর্যন্ত ২০ জনকে কালীগঞ্জ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। তাদের মধ্যে দুইজনের অবস্থা গুরুতর হওয়ায় ঝিনাইদহ হাসপাতালে রেফার্ড করা হয়েছে।
স্থানীয়রা জানান, সোমবার সকালে কালীগঞ্জ উপজেলার রায়গ্রাম থেকে প্রথমে সাদা রঙের একটি কুকুর কামড়ানো শুরু করে। এরপর একে একে পথচারী, দোকানি, স্কুলছাত্রী ও শিশুদের কামড়ায়। স্থানীয়রা কুকুরটিকে ধাওয়া করলে সেখান থেকে দৌড়ে বলিদাপাড়া, নিশ্চিন্তপুর ও হেলাই গ্রামের মানুষকে কামড়িয়ে জখম করে।
হাসপাতালে ভর্তি শহরের বলিদাপাাড়ার রাখি বেগম নামে এক গৃহবধূ বলেন, ‘সকালে বাড়ির পাশে কাজ করছিলাম। হঠাৎ একটি কুকুর এসে আমার ওপর হামলে পড়ে। কিছু বুঝে ওঠার আগেই আমার হাত কামড়ে ধরে। অনেক চেষ্টা করেও ছাড়াতে পারছিলাম না। এ সময় প্রতিবেশীদের সহযোগিতায় মুক্ত হই।’
হাসপাতালে চিকিৎসাধীন কালীগঞ্জ শহরের নিশ্চিন্তপুর গ্রামের বাসিন্দা সঞ্জিত কুমার কালু বলেন, ‘সকাল ১১টার দিকে আমি বাড়ি থেকে বের হলে একটি কুকুর পা কামড়ে ধরে। অনেক চেষ্টা করেও ছাড়ানো যাচ্ছিল না। এ সময় আমি নিজেই কুকুরের মুখের মধ্যে দুই হাত দিয়ে ছাড়িয়ে নিই। কুকুরের দাঁতে আমার দুই হাতের ছয়টি আঙুল ক্ষতিগ্রস্ত হয়।’
কালীগঞ্জ শহরের সংরক্ষিত কাউন্সিলর শামছুন্নাহার বীনা বলেন, ‘আমার এলাকায় ১০ জন নারী-পুরুষকে পাগলা কুকুরে কামড়িয়েছে। তাদেরকে হাসপাতালে ভর্তি ও চিকিৎসায় সহযোগিতা করেছি।’
কালীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক ইমরান হোসেন বলেন, ‘কুকুরে কামড়ানো ১৭ জন রোগী দুপুর পর্যন্ত ভর্তি হন। তাদের শরীরের বিভিন্ন স্থানে কুকুরে কামড়ানোর চিহ্ন রয়েছে। কামড়ের আঘাত বেশি গুরুতর হওয়ায় দুইজনকে ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালে রেফার্ড করা হয়েছে। বাকিদের প্রাথমিক চিকিৎসা ও ভ্যাক্সিন দিয়ে বাড়ি পাঠানো হয়েছে।’ কুকুরে কামড়ানো রোগীদের জন্য হাসপাতালে পর্যাপ্ত ভ্যাক্সিন মজুত রয়েছে বলে জানান এই চিকিৎসক।
এ ঘটনার পরে কালীগঞ্জ পৌরসভার মেয়র আশরাফুল আলম আশরাফ আহতদের দেখতে হাসপাতালে যান। তিনি হাসপাতালে রোগীদের চিকিৎসাসেবা পর্যবেক্ষণ ও ভ্যাক্সিন সরবরাহের বিষয়টি দেখভাল করেন।
উল্লেখ্য, কালীগঞ্জে ছয় মাস আগেও একদিনে তিন ঘণ্টায় ৩৫ জন খ্যাপা কুকুরের কামড়ে জখম হয়েছিলেন।