কেন্দ্রীয় কর্মসুচির অংশ হিসেবে ঝিনাইদহে জেলা বিএনপির বিক্ষোভ ও প্রতিবাদ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। আজ বুধবার (২ মার্চ) দুপুরে ঝিনাইদহ প্রেসক্লাবের সামনে এ বিক্ষোভ ও প্রতিবাদ সভা জেলা বিএনপির আহবায়ক এ্যাড এস এম মশিয়ূর রহমানের সভাপতিত্বে শুরু হয়। চাল, ডাল, তেল ও গ্যাসসহ নিত্যপণ্যের মুল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদে ঝিনাইদহ জেলা বিএনপি এই সমাবেশের আয়োজন করে।
বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির ভারপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক অনিন্দ্য ইসলাম অমিত বলেছেন, দেশে বিদেশে ভোট চোর হিসেবে পরিচিত এই সরকার গণতন্ত্র ও মানুষের কথা বলার অধিকার হরণ করেছে। প্রতিবাদ করলেই খুন গুম করেছে। ৫ হাজারেরও বেশি দেশপ্রেমিক জনগনকে পঙ্গু করে দিয়েছে। তিনি বলেন, ওয়ান ইলেভেনে কুশিলবদের ষড়যন্ত্রে চোলাগলি পথ দিয়ে ক্ষমতায় এসে শেখ হাসিনা বিডিআরের ৫৭ জন অফিসারকে হত্যা করেছে। বন্দরগুলোতে প্রভুদের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে। আর সাংবাদিকরা এসব কথা যাতে লিখতে না পারে সে জন্য ডিজিটাল সিকিউরিটি আইন প্রণয়ন করেছে। সাগর রুণির মতো দেশপ্রেমিক কৃতি সাংবাদিকদের হত্যা করে বিচারিক প্রক্রিয়া অচল করে রাখা হয়েছে।
জনতার মুর্হুমুহু করতালির মধ্য দিয়ে অনিন্দ্য ইসলাম অমিত আরো বলেন, সরকার এখন ভাতে মারার জন্য একের পর নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্যের দাম বৃদ্ধি করেছে। জনগণের প্রতি এই সরকারের কোন দয়ামায়া নেই। তারা ফ্যাসিষ্ট। দেশের মানুষ আজ তেল, চিনি, চাল, ডাল কিনতে নিঃস্ব হয়ে যাচ্ছে। আর সরকার ব্যস্ত মেগা প্রকল্প নিয়ে। কারণ এই প্রকল্পের মাধ্যমে লুটপাট করা যায়। জনগন ও রাষ্ট্রের টাকা পাচার করা যায়। তিনি প্রশ্ন রেখে বলেন, দেশের জনগণ যদি নাই বাঁচে তবে পদ্মা সেতু আর মেট্রো রেল দিয়ে কি হবে ? মানুষ বিহীন এই দেশে কারা চড়বে এই রেলে ?
ঝিনাইদহ জেলা বিএনপির আহবায়ক এ্যাড এস এম মশিয়ূর রহমানের সভাপতিত্বে ও সদস্য সচিব এ্যড এম এ মজিদের পরিচালানায় সমাবেশে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা বাবু জয়ন্ত কুমার কুন্ডু, আমিরুজ্জামান খান শিমুল, সাবেক এমপি আব্দুল ওহাব, শাহানা রহমান রানী, জাহিদুজ্জামান মনা, এড মুন্সি কামাল আজাদ পান্নু, আনোয়ারুল ইসলাম বাদশা, আব্দুল মজিদ বিশ্বাস, আলমগীর হোসেন আলম, সালাহউদ্দীন বুলবুল সিডল, আব্দুর রাজ্জাক, জিন্নাতুল হক, তহুরা খাতুন, কামরুন্নাহার লিজি, আব্দুল হামিদ, আহসান হাবিব রণক, আশরাফুল ইসলাম পিন্টু, পলি খাতুন, নার্গিস সুলতানা দিবা, সৌমেনুজ্জামান সোমেন, মুশফিকুর রহমান মানিকসহ ৬ উপজেলার বিএনপি, শ্রমিকদল, কৃষকদল, সেচ্ছাসেবকদল, যবদল ও ছাত্রদলের প্রমুখ নেতা বক্তব্য রাখেন।
কেন্দ্রীয় বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক অনিন্দ্য ইসলাম অমিত আরো বলেন, বাংলাদেশে এখন মোটা চাল ৪৮ টাকার উপরে। অথচ বিএনপির সময় মোটা চাল ছিল মাত্র ১৬ টাকা কেজি। তিনি বলেন জনগনকে বাঁচানোর কোন মাথা ব্যাথা নেই হাসিনা সরকারের। তারা জানে জনগনের ভোটে তারা নির্বাচিত হয়নি। রাতের বেলা প্রশাসনের লোকজন ভোট কেটে তাদের পাশ করিয়েছে। তিনি বলেন, শেখ হাসিনাকে তার দলের লোকজন গনতন্ত্রের মানষকন্যা হিসেবে ডাকে। কিন্তু দেশের কোথায় আজ গনতন্ত্র বিদ্যমান তা আ’লীগ প্রমান করুন। অমিত বলেন, তাদের স্লোগান ‘সোনার বাংলা’ আজ শ্বশানে পরিণত হচ্ছে। নিত্যপন্য কিনতে গিয়ে প্রতিদিন মানুষ ফকির হচ্ছেন।
অমিত বলেন শেখ মুজিবের ডাকে নয় বরং শহীদ জিয়ার আহবানে সাড়া দিয়ে দেশের মানুষ অস্ত্র হাতে নিয়ে যুদ্ধ করেছেন। এই জন্য আওয়ামী লীগে কোন মুক্তিযোদ্ধা নেই। নেই বীরপ্রতিক, বীরবিক্রম ও বীরশ্রেষ্ঠ।
তিনি অভিযোগ করে বলেন, জনগনের দৃষ্টি সরানোর জন্য আওয়ামী লীগের ল্যাবরোটরিতে শতভাগ পরীক্ষিত আমলাদের নিয়ে নির্বাচন কমিশন গঠন করা হয়েছে। এই সিইসি বিতর্কিত ও আদালত কর্তৃক অবৈধ ঘোষিত। অথচ এমন একজন ব্যক্তিকে সিইসি বানিয়ে জনগণের দাবির সাথে প্রতারণা করা হয়েছে। শেখ হাসিনাকে ক্ষমতায় রেখে নির্বাচন হলে তা সুষ্ঠ হবে না বলে বিএনপির এই তরুণ নেতা মনে করেন।