শীত পড়তে শুরু করেছে। এই সময়ে ঘরে ঘরে শিশুদের জ্বরজারি ও সর্দি-কাশি লেগেই আছে। এ ছাড়া নিউমোনিয়া ও হাঁপানির প্রকোপ বেড়ে যায় শীতে। শীতে শিশুদের ঘন ঘন সর্দি লাগে। ঠাণ্ডা থেকে অনেকের ভাইরাল জ্বর হয়। তাই তাদের জন্য চাই বাড়তি যত্ন।
শিশুরা অসুস্থ হলেও আতঙ্কের কিছু নেই। ভাইরাসজনিত ঠাণ্ডা-জ্বর একটু সতর্কতা অবলম্বন করলে ৭ থেকে ১০ দিনের মধ্যে ভালো হয়ে যায়।
আসুন জেনে নিই শিশুর জ্বর ও ঠাণ্ডাজনিত অসুখ রোধে কী করবেন–
শীতের এই সময়ে শিশুর জ্বর ও ঠাণ্ডাজনিত অসুখ রোধে অভিভাবকদের সচেতন হতে হবে। এ ছাড়া কয়েকটি কাজ করলে এ সময়ে আপনার শিশু সুস্থ থাকবে।
১. অভ্যাসবশত শীতেও অনেকে এসি ও ফ্যান ছেড়ে ঘুমিয়ে পড়েন। এতে শিশুর ঠাণ্ডা লেগে যেতে পারে। এ সময় ফ্যান ও এসি না চালানো ভালো।
২. আপনি যেহেতু শিশুর যত্ন নিয়ে থাকেন। তাই আপনার হাত সব সময় জীবাণুমুক্ত ও পরিষ্কার রাখতে হবে। শিশুকে খাবার খাওয়ানোর আগে অবশ্যই হাত ধুয়ে নিন।
৩. শীতের সময়ে শিশুকে কুসুম গরম পানি দিয়ে গোসল করান। এ ছাড়া কুসুম গরম পানি খাওয়াতে পারেন।
৪. শিশুকে অবশ্যই শীতের কাপড় পরাতে হবে। বেশি শীতে পায়ে মোজা পরানো ও মাথা ডেকে রাখতে পারেন।
৫. শীতের এ সময়ে যে কাজটি করা সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন তা হলো- সকালে গায়ে রোদ লাগানো। রোদে থাকা ভিটামিন ডি শিশুর শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াবে ও তাকে সুস্থ রাখবে।
শিশু আক্রান্ত হলে কী করবেন
শিশু সাধারণ সর্দি-কাশি ও ভাইরাল জ্বরে আক্রান্ত হলে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। শিশুর ঠাণ্ডা লেগে নাক দিয়ে পানি গড়িয়ে পড়তে দিন ও টিস্যু দিয়ে মুছে দিন।
ছয় মাস বয়সের নিচে কেবল মায়ের বুকের দুধ বারবার দিন। ছয় মাস বয়সের বেশি শিশুর কাশি থাকলে কুসুম গরম পানিতে মধু, আদার রস বা তুলসী পাতার রস, লেবু দিয়ে গরম পানি বা চা ইত্যাদি দিতে পারেন। এগুলো কফ তরল করতে সাহায্য করবে।
সর্দি-কাশি বা অরুচির জন্য শিশু একবারে বেশি খেতে পারে না, তাই বারবার খাওয়ানোর চেষ্টা করুন।
পানিশূন্যতা রোধে তরল খাবার বেশি দিন। ভিটামিন সি-যুক্ত ফল, যেমন– লেবু, কমলা, মালটা, আমলকী ইত্যাদি খাওয়াতে পারেন। এতে ঠাণ্ডার সমস্যা কমবে।
কখন হাসপাতালে যাবেন
শিশু আক্রান্ত হলেও তার সাধারণ যত্ন ও পুষ্টি বজায় রাখলে এই সমস্যা সাত থেকে ১০ দিনের মধ্যে ভালো হয়ে যায়। যদি শিশু সুস্থ না হয় তাকে তার কয়েকটি বিষয় খেয়াল রাখতে হবে। কারণ অনেক শিশুর ক্ষেত্রে এটি জটিলও হতে পারে।
শিশু যদি ঘন ঘন শ্বাস নেয়, নিঃশ্বাসের সঙ্গে পাঁজর ভেতর দিকে দেবে যায়, শিশু খাওয়া বন্ধ করে দেয় ও নিস্তেজ হয়ে পড়ে, খিঁচুনি হয় বা জ্বর অনেক বেড়ে যায় বা দীর্ঘস্থায়ী হয়, তবে অবশ্যই তাকে হাসপাতালে নিয়ে যেতে হবে।
লেখক: শিশু বিশেষজ্ঞ ও সহযোগী অধ্যাপক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়।
খূলনা গেজেট/কেএম