ধান উৎপাদনে সর্বাধিক উৎপাদনশীল মৌসুম হচ্ছে বোরো। এ কথা অনস্বীকার্য যে, বোরোর উপর ভিত্তি করেই দেশের খাদ্য নিরাপত্তার ভিত্তি রচিত হয়েছে। কারণ দেশের মোট উৎপাদনের প্রায় ৫৮ শতাংশ আসে এই মৌসুম থেকেই। তাই গ্রাম-বাংলার প্রত্যেক কৃষকের বাড়িতে এখন বোরো কেন্দ্রিক ব্যস্ততা রয়েছে। ক্ষেতের পাকা ধান কাটা, মাড়াই-ঝাড়াই, শুকানো, সিদ্ধ করা, ঘরে তোলাসহ নানা কাজে ব্যস্ত সময় পারে করছেন কিষান-কিষানিরা।
তবে উপকূলীয় জেলা সাতক্ষীরায় কয়েক বছর পর পরই চাষীদের বদলাতে হয় ধানের জাত । লবনাক্ত আবহাওয়াতে নানা রকম রোগে আক্রান্ত হয় এ জেলার ধান গাছ। এবার কৃষকদের জন্য সম্ভবনার নতুন দিগন্ত হয়ে এসছে পাতা পোড়া রোগ প্রতিরোধী বোরো ধানের জাত -৬৪,৫৩।
সাতক্ষীরার দেবহাটা উপজেলায় এই জাতের ধান চাষ করে ব্যাপক ভাবে সাফল্য পেয়েছেন চাষিরা। ৩৩ শতাংশ জমিতে ফলন পাওয়া যাচ্ছে ৩৩ মন। ফলে হাঁসি ফুটেছে এ জেলার চাষিদের মুখে। অতিতে চাষকৃত যেকোন ধানের চেয়ে হেক্টরে ২ টনের ও বেশী উৎপাদন হচ্ছে নতুন জাতের এই ধান। দেবহাটা উপজেলা সদরের ধান চাষী আকরাম গাজী দীর্ঘদিন যাবত রড মিনিকেট যাতের ধান চাষ করেন কিন্তু এবছর ৬৪,৫৩ জাতের ধানের ফলন দেখে আগামীতে তার নিজ জমিতে ও নতুন জাতের এই ধান চাষ করার আগ্রহ প্রকাশ করেন।
কৃষিবি মো. মানছুর রহমান জানান উচ্চফলনশীল হওয়ার ফলে এ ধানের জীবনকাল ১৪০ দিন থেকে ১৪৫ দিন। রোগ প্রতিরোধী অধিকফলন সম্পন্ন হওয়ায় অন্যান্য ধানের চেয়ে এই ধান চাষে আগ্রহ প্রকাশ করছে কৃষকরা।
প্রত্যাশা অনুযায়ী ফলন পাওয়াতে কৃষক যেন আবার সেই অতীতের সুদিন ফিরে পেয়েছে। আগামীতে নতুন জাতের এই ধান, এ জেলার অনেক চাষীরা চাষ করবেন বলে জনান দেবহাটা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শরীফ মোহাম্মদ তিতুমীর।
তিনি আরও বলেন, উচ্চ ফলনশীল রোগ মুক্ত এই ধানের চাষে এ অঞ্চলের মানুষ অতীতের তুলনায় এখন বেশি পরিমাণে লাভবান হবে এছাড়া নতুন জাতের এই ধান চাষীদের মাঝে ছড়িয়ে দিতে কৃষি সম্প্রচারার অধিদপ্তর ভূমিকা রাখবে।
ঝড় জলোচ্ছ্বাস আর লবনাক্তা আবহার মধ্য দিয়ে ধান চাষ করে যাচ্ছেন সাতক্ষীরার উপকূলবর্তী কৃষকরা। আগামীতে এই ধান এ অঞ্চলের কৃষকের মুখে ফোটাবে প্রশান্তির হাসি এমনটাই মনে করছেন কৃষকরা।
খুলনা গেজেট/এএজে