জলবায়ু পরিবর্তনের কারনে উপকূলীয় এলাকায় নানা ধরনের রোগের প্রকোপ বেড়েছে। বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিম উপকূলীয় এলাকা হিসেবে সাতক্ষীরা জেলার শ্যামনগর উপজেলা এবং খুলনা জেলার কয়রা উপজেলা অত্যান্ত জলবায়ু ঝুঁকিপূর্ন এলাকা। দূর্গম এলাকা হওয়ায় এসব এলাকার অধিকাংশ মানুষ দারিদ্র্য সীমার নীচে বসবাস করে। এলাকাগুলোর রাস্তা ঘাটের অবস্থা অত্যন্ত নাজুক। অনেক জাগায় নদী পথই এক মাএ যাতায়াতের মাধ্যম। তাই এসব এলাকায় গড়ে ওঠেনি ভাল কোন হাসপাতাল। নেই কোন ভাল চিকিৎসক। গ্রামের ডাক্তার দিয়েই চলে তাদের চিকিৎসা। এখানে নেই কোন ভাল ঔষধের দোকান। দু-একটি থাকলেও সেখানে ঔষধ বিক্রি হয় চড়া দামে। প্রত্যন্ত এলাকা থেকে কাউকে ভাল চিকিৎসা সেবা নিতে হলে তাকে যেতে হয় ৩০-৪০ কিলোমিটার পথ অতিক্রম করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে। আর্থিক সংকটের কারনে সেটাও সম্ভব হয়ে ওঠেনা কারো কারো ক্ষেত্রে।
উপকুলীয় অসহায় এসব মানুষের এই কষ্টের কথা চিন্তা কওে সাতক্ষীরার শ্যামনগরস্থ বেসরকারি উন্নয়ন সংগঠন লিডার্স প্রতি মাসে শ্যামনগর উপজেলার ৪ টি ইউনিয়নের এবং কয়রা উপজেলার ২ টি ইউনিয়নের মোট ১৪ টি দূর্গম স্থানে প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা ক্যাম্পের আয়োজন করে থাকে। ক্যাম্পগুলোতে নারী ও শিশু সহ সকল কার্ডধারীদের বিনামূল্যে ঔষধের ব্যবস্থাপত্র সহ ৮০ শতাংশ ছাড়ে ঔষধ প্রদান করা হয়।
প্রতি মাসের মত ডিসেম্বর ২০২০ মাসে ১৪ টি স্থানে স্বাস্থ্যসেবা প্রদান করা হয়েছে। ক্যাম্পগুলো থেকে এ মাসে মোট ৪৮৬ জন রোগী স্বাস্থ্যসেবা গ্রহণ করেছে। যাদের মধ্যে পুরুষ ১২৭ জন, নারী ৩০১ জন এবং শিশু ৫৮ জন। রোগীগুলোর মধ্যে পানি বাহিত রোগে ভুগছিলেন ১০ শতাংশ, চর্মরোগে ১২ শতাংশ, উচ্চরক্তচাপে শতাংশ, ঋতুকালীন সমস্যায় শতাংশ, সাধারন সর্দি কাশি- জ্বরে ১৩ শতাংশ, অপুষ্টি ও সাধারন দূর্বলতায় ৮ শতাংশ, মাজা ও পিঠে ব্যথায় ৪৬ শতাংশ এবং অন্যান্য রোগে ভুগছিলেন ২ শতাংশ রোগী।
কয়রা উপজেলার প্রত্যন্ত একটি গ্রাম কাশীরহাটখোলা। ঘূর্ণিঝড় আম্ফামের কারনে অধিকাংশ মানুষের ঘরবাড়ি প্লাবিত হয়ে আছে। তাই তারা ঠায় নিয়েছে রাস্তার উপর। এ গ্রামেরই দরিদ্র কৃষক গোপাল মন্ডল বলছিলেন, লিডার্স এর স্বাস্থ্যসেবা কার্যক্রমে আমরা খুবই উপকৃত হচ্ছি। আমাদের খুব কাছে এসে এ সেবা প্রদান করার কারনে আমরা খুব সহজেই স্বাস্থ্যসেবা নিতে পারছি। একদিকে যেমন টাকাও খরচ হচ্ছে না অন্যদিকে আমাদের সময়ও নষ্ট হচ্ছে না। লিডার্স এর এ রকম উদ্দোগের জন্য লিডার্স এর প্রতি ধন্যবাদ জ্ঞাপন করছি।