খুলনা, বাংলাদেশ | ১০ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ | ২৫ নভেম্বর, ২০২৪

Breaking News

  হাইব্রিড মডেলে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি, রাজি পাকিস্তান; ভারতের ম্যাচ দুবাইয়ে : বিসিবিআই সূত্র
  গুমের দায়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ২২ সদস্য চাকরিচ্যুত, গুম কমিশনের সুপারিশে এমন সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে

উচ্চমূল্যেই স্থিতিশীল পেঁয়াজের দাম

কামাল মোস্তফা

একমাসেরও অধিক সময় ধরে পেঁয়াজের বাজার উচ্চমূল্যেই স্থিতিশীল রয়েছে। সরকার ৫ শতাংশ শুল্ক প্রত্যাহার, টিসিবির ট্রাক সেল, ই-কমার্সের মাধ্যমে পেঁয়াজ বিক্রিসহ নানা পদক্ষেপের পরও স্বাভাবিক হয়নি পেঁয়াজের দাম। এভাবে চলতে থাকলে মানুষের দূর্ভোগের সীমা থাকবে না। ব্যবসায়ীরা বলছেন, পেঁয়াজের দাম নতুন করে বাড়েনি, স্থিতিশীল রয়েছে। ক্রেতাদের অভিযোগ দাম স্থিতিশীল, তবে তা উচ্চমূল্যে। দাম স্বাভাবিক পর্যায়ে এসে স্থিতিশীল থাকলেই তখন তাকে আমরা স্থিতিশীল বলতে পারি।

এদিকে ভারত পেঁয়াজ রপ্তানি বন্ধ করায় পাইকারি ও খুচরা বাজারে ভারতীয় পেঁয়াজের সংকট দেখা দিয়েছে। দেশি পেঁয়াজ থাকলেও তা বিক্রি হচ্ছে উচ্চমূল্যেই। অথচ দাবি করা হয়েছিল দেশে আগামি তিন মাসের পেঁয়াজের মজুদ রয়েছে। টিসিবি ৩০ টাকা কেজি দরে পেঁয়াজ বিক্রি করলেও বাজারমূল্য তা কোন প্রভাব ফেলতে পারেনি।সরকারের নানান পদক্ষেপের পরও পেঁয়াজের দাম সাধারণ ক্রেতাদের নাগালের বাইরে রয়েছে।

খুলনা মহানগরীর বিভিন্ন পাইকারি ও খুচরা বাজার ঘুরে দেখা গেছে, প্রতি কেজি দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৭২-৭৬ টাকা। ভারতীয় পেঁয়াজ ৭০-৭২ টাকায়। খুচরা বাজারে দেশি পেঁয়াজ ৯০-৯৫ টাকা এবং ভারতীয় পেঁয়াজ কেজি প্রতি ৮০ টাকা। এ রকম দাম গেল এক মাসেরও বেশি সময় ধরে চলছে। অথচ গত সেপ্টেম্বর মাসের শুরুতে খুলনা মহানগরীর বিভিন্ন খুচরা বাজারগুলোতে প্রতি কেজি দেশি পেঁয়াজ ৩৫-৪০ টাকা এবং ভারতীয় পেঁয়াজ ২৮-৩০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। সে সময় হঠাৎ করেই দাম বাড়তে শুরু করে এবং তা ১২০ টাকা কেজিতে গিয়ে পৌছে।

পাইকারি ব্যবসায়ী নিউ হক বানিজ্য ভান্ডারের মালিক আব্দুল আজিজ বলেন, পেঁয়াজের বাজার প্রায় ক্রেতাশূন্য। বেচাকেনা খুবই কম। ভারতীয় পেঁয়াজ না থাকায় শুধু দেশি পেঁয়াজ বিক্রি করতে হচ্ছে। দাম বেশি হওয়ায় চাহিদা কম। তিনি জানান, ভারতীয় বা অন্যদেশ থেকে আমদানি করা পেঁয়াজ না আসা পর্যন্ত দাম কমার সম্ভাবনা নেই।

খুচরা ব্যবসায়ী শওকত হোসেন বলেন, মানুষ পেঁয়াজ খুব কমই কিনছে। ভারতীয় পেঁয়াজ বাজারে নেই বললেই চলে। নতুন পেঁয়াজ না আসলে দাম কমবে না।

বেসরকারি ব্যাংকের কর্মকর্তা শাহানা ইয়াসমীন জানান, পেঁয়াজ খাওয়া কমিয়ে দিয়েছি। সেই যে পেঁয়াজের দাম বাড়লো তা আর কমার কোন লক্ষণ নেই, সেখানেই থেমে আছে। তাহলে কি সরকার এসব পেঁয়াজ সিন্ডিকেটের কাছে অসহায়। দাম কমানোর ব্যাপারে কোন পদক্ষেপই চোখে পড়ছে না। সেই সাথে প্রতিটা নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের দাম বেড়েছে। এভাবে চলতে থাকলে সাধারণ মানুষের জীবন দূর্বিসহ হয়ে উঠবে।

উল্লেখ্য, সরকারের কঠোর হুশিয়ারি সত্ত্বেও পেঁয়াজের দাম স্বাভাবিক হয়নি। ভারত-বাংলাদেশে বন্যাসহ নানা অজুহাতে এক শ্রেণির ব্যবসায়ী পেঁয়াজের দাম বাড়ায় বলে অভিযোগ আছে। সেই সময় পেঁয়াজের মূল্য বাড়ার পর তা আর কমেনি। সেসময় বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের টাস্ক ফোর্স কমিটির বৈঠকে জানানো হয়েছিল, দেশে পর্যাপ্ত পেঁয়াজ মজুত রয়েছে। পেঁয়াজের সংকট বা মূল্য বাড়ার কোন সংগত কারণ নেই। পেঁয়াজের অবৈধ মজুত বা কৃত্রিম সংকট সৃষ্টির মাধ্যমে মূল্য বাড়ার চেষ্টা করা হলে সরকার আইন মোতাবেক কঠোর ব্যবস্থা নেবে। এছাড়া বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের মনিটরিং টিম এবং বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অধীন জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতর বাজার মনিটরিং আরও জোরদার করা হয়েছে বলে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের এক প্রেসবিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছিল।

এদিকে গেল মাসের প্রথম ২০ দিনে ভারতের বিকল্প দেশগুলো থেকে পৌনে ৬ লাখ টন পেঁয়াজ আমদানির অনুমতি নিয়েছিল ব্যবসায়ীরা। এত কম সময়ে বিকল্প দেশ থেকে পেঁয়াজ আমদানির অনুমতি সংগ্রহে এটি রেকর্ড বলে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা জানিয়েছিল। এ মাসের শুরু থেকে এসব পেঁয়াজ চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে আমদানি শুরু হওয়ার কথা কিন্তু এখনো তা পৌছেনি।

 

খুলনা গেজেট / এমএম




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!