খুলনা শহরের শেখপাড়া চামড়াপট্টির শেষ দোকানটি বন্ধ হয়ে গেছে ২০১৯ সালে। এখন সেখানে কোনো চামড়ার দোকান নেই। গত পাঁচ বছরে চামড়া বেচাকেনার জন্য নতুন কোনো বাজারও তৈরি হয়নি। ফলে সংরক্ষণের জায়গা না থাকায় প্রতিবছর কোরবানির ঈদে বিপুল সংখ্যক চামড়া নিয়ে বিপাকে পড়ছেন ব্যবসায়ীরা। এ অবস্থায় এবারও শেরে বাংলা সড়ক এবং শেখপাড়া বি কে রায় সড়কেই চামড়া সংরক্ষণের অনুমতি চেয়েছেন তারা।
ব্যবসায়ীরা জানান, সংরক্ষণের স্থানে দুর্গন্ধ তৈরি হওয়ায় আবাসিক এলাকায় কেউ চামড়ার দোকান ভাড়া দিতে চান না। খুলনা সিটি করপোরেশনের (কেসিসি) কাছে বারবার তারা চামড়া বেচাকেনার জন্য পৃথক মার্কেট তৈরির দাবি জানাচ্ছেন। কিন্তু আশ্বাস দিয়েও কেসিসি তা রাখেনি। এর মধ্যেই আরেকটি কোরবানির ঈদ চলে আসায় এবারও বিপুল সংখ্যক চামড়া সংরক্ষণ নিয়ে সমস্যায় পড়তে হবে তাদের।
এ ছাড়া খুলনার চামড়া ব্যবসায়ীদের বিপুল পরিমাণ টাকা ঢাকার ট্যানারি মালিক ও আড়তদারদের কাছে বকেয়া রয়েছে। ঈদের মাত্র এক সপ্তাহ বাকি থাকলেও বকেয়া টাকা কেউ পরিশোধ করেননি। ফলে এ বছর চামড়া কেনার মতো পুঁজি নেই কারও কাছে। ব্যাংকও চামড়া ব্যবসায়ীদের ঋণ দেয় না। ফলে সংরক্ষণের জায়গার মতো পুঁজি সংকটও ভোগাচ্ছে তাদের।
জানা গেছে, বর্তমানে নগরীর জিরো পয়েন্টে দুটি গুদামে এবং নগরীর ট্রাক টার্মিনালের পাশে এক ব্যবসায়ীর বাড়িতে চামড়া মজুত করা হয়। ছোট ব্যবসায়ীরা সারা বছর চামড়া কিনে এ দুই স্থানেই মজুত করেন। কিন্তু কোরবানির ঈদে বিপুল পরিমাণ চামড়া আসায় সেখানে মজুত রাখা সম্ভব হয় না।
খুলনা কাঁচা চামড়া ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক কার্তিক ঘোষ বলেন, সংরক্ষণের জায়গা না থাকায় প্রতিদিন কসাইখানা থেকেই চামড়া বিক্রি করে দেওয়া হয়। কিছু কসাই মাংসের দোকানে স্বল্প পরিসরে চামড়া সংরক্ষণ করেন। সংরক্ষণের জায়গা না থাকায় অধিকাংশ ব্যবসায়ী ব্যবসা থেকে নিজেদের গুটিয়ে নিয়েছেন।
কাঁচা চামড়া ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি আবদুস সালাম ঢালী বলেন, সরকারের বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তাদের অবহেলায় খুলনার চামড়া ব্যবসা ধ্বংস হয়ে গেছে। গত সাত-আট বছর ধরে আমরা চামড়ার জন্য পৃথক মার্কেট তৈরির দাবি জানাচ্ছি। কেউ আমাদের ডাকে সাড়া দেয় না। এ অবস্থায় চামড়া ব্যবসার জন্য পৃথক মার্কেট, ঈদে চামড়া সংরক্ষণে নির্ধারিত জায়গা, ট্যানারি মালিক ও আড়তদারের কাছ থেকে বকেয়া পরিশোধের উদ্যোগ নিতে হবে।
এ বিষয়ে খুলনা সিটি মেয়র তালুকদার আবদুল খালেক বলেন, বিশ্বব্যাংকের অর্থায়নে খুলনায় আধুনিক কসাইখানা নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এর আশপাশে চামড়ার জন্য পৃথক মার্কেট তৈরির বিয়ষটি বিবেচনায় রয়েছে।
খুলনা গেজেট/এইচ