খুলনা, বাংলাদেশ | ১৮ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ | ৩ ডিসেম্বর, ২০২৪

Breaking News

  আগরতলায় সহকারী হাইকমিশনে হামলায় ৩ পুলিশ বরখাস্ত, গ্রেপ্তার ৭
  ভারতীয় সব বাংলা চ্যানেল সম্প্রচার বন্ধ চেয়ে করা রিটের শুনানি বুধবার

ঈদে মিলাদুন্নবী কী? যেভাবে উদযাপন শুরু হয়েছে

গেজেট ডেস্ক 

মহানবী হজরত মুহাম্মদ সা.-এর শুভাগমনের দিনকে ঈদে মিলাদুন্নবী হিসেবে পালন করা হয়। প্রতি হিজরি বর্ষের রবিউল আওয়াল মাসের ১২ তারিখে মিলাদুন্নবী পালন করেন অনেকে। এই দিবসটি বর্তমানে অনেকে সমারোহে পালন করলেও মুসলিম বিশ্বে ঈদে মিলাদুন্নবী পালন নিয়ে বির্তক রয়েছে।

ঈদে মিলাদুন্নবী একটি নির্দিষ্ট তারিখে অর্থাৎ, ১২ রবিউল আওয়াল পালন করা হয়। অথচ হাদিসের আলোকে রাসূল সা.-এর জন্মের বছর সম্পর্কে স্পষ্টভাবে জানা গেলেও তাঁর জন্মের তারিখ সর্ম্পকে স্পষ্ট কিছু জানা যায় না।

রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের জন্মের সাল সম্পর্কে কায়স ইবনে মাখরামা রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন, আমি ও রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম দুজনেই ‘হাতীর বছরে’ জন্মগ্রহণ করেছি। উসমান ইবন আফফান রাদিয়াল্লাহু আনহু কুবাস ইবন আশইয়ামকে প্রশ্ন করেন: আপনি বড় না রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বড়? তিনি উত্তরে বলেন: রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আমার থেকে বড়, আর আমি তাঁর পূর্বে জন্মগ্রহণ করেছি।

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ‘হাতীর বছরে’ জন্মগ্রহণ করেন। হাতীর বছর অর্থাৎ যে বছর আবরাহা হাতী নিয়ে কাবা ঘর ধ্বংসের জন্য মক্কা আক্রমণ করেছিল। ঐতিহাসিকদের মতে এ বছর ৫৭০ বা ৫৭১ খ্রীষ্টাব্দ ছিল।

হাদিস শরিফের আলোকে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের জন্ম বছর সম্পর্কে জানতে পারি। কিন্তু রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের কোনো হাদিসে তাঁর জন্মমাস ও জন্ম তারিখ সম্পর্কে কোনো তথ্য পাওয়া যায় না। এ কারণে পরবর্তী যুগের আলেম ও ঐতিহাসিকগণ তাঁর জন্মতারিখ সম্পর্কে অনেক মতভেদ করেছেন।

রাসূল সা.-এর জন্মদিন সম্পর্কে ইসলামের প্রথম যুগের আলেম ও ঐতিহাসিকদের মতামতের বিভিন্নতা থেকে সহজেই অনুমান করা যায় যে, প্রথম যুগে, সাহাবী, তাবেয়ী ও তাবে-তাবেয়ীদের মধ্যে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের জন্মদিন পালন বা উদযাপন করার প্রচলন ছিল না। কারণ, প্রচলন থাকলে এ ধরণের মতবিরোধের কোন সুযোগ থাকত না।

নবম হিজরী শতকের অন্যতম আলেম ও ঐতিহাসিক আল্লামা ইবনে হাজর আল-আসকালানী (মৃত্যু: ৮৫২হি: ১৪৪৯খ্রি:) লিখেছেন: ‘মাওলিদ পালন মূলত: বিদয়াত। ইসলামের সম্মানিত প্রথম তিন শতাব্দীর সালফে সালেহীনদের কোন একজনও এ কাজ করেন নি।’

ঐতিহাসিক ও ফকিহদের মতে হিজরি ৪র্থ শতাব্দীর মাঝামাঝি শিয়া সম্প্রদায়ের উদ্যোগে প্রথম এই উৎসব শুরু হয়।

প্রথম যুগগুলোর পরে মীলাদ অনুষ্ঠান বা ঈদে মীলাদুন্নবী উদযাপনের শুরু হয়েছে। ইতিহাসের আলোকে জানা যায় মিশরের ইসমাঈলী শিয়া শাসকগণ রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় ২ ঈদ ছাড়াও আরও বিভিন্ন দিন পালন করতেন, এর মধ্যে অধিকাংশই ছিল জন্মদিন।

তারা অত্যন্ত আনন্দ, উৎসব ও উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে ৫টি জন্মদিন পালন করতেন:

১) রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের জন্মদিন,
২) আলী রাদিয়াল্লাহু আনহুর জন্মদিন,
৩) ফাতেমা রাদিয়াল্লাহু আনহার জন্মদিন,
৪) হাসান রাদিয়াল্লাহু আনহুর জন্মদিন ও
৫) হুসাইন রাদিয়াল্লাহু আনহুর জন্মদিন।

হিজরী ৪র্থ শতাব্দীর মাঝামাঝি থেকে মিশরে এই উদযাপন শুরু হয়। এ যুগকে আববাসীয় খেলাফতের দুর্বলতার যুগ হিসাবে চিহ্নিত করেছেন ঐতিহাসিকগণ।

খুলনা গেজেট/এএজে




খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!