খুলনা মহানগরীর ইস্টার্ণগেট ট্রিপল মার্ডারে সন্ত্রাসী শেখ জাকারিয়াসহ অন্য আসামীদের আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে গ্রেফতারে ব্যর্থ হলে কঠোর আন্দোলনের হুশিয়ারি দিয়েছে মশিয়ালী এলাকাবাসী। বৃহস্পতিবার (১৩ আগস্ট) বেলা ১২টায় খুলনা প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে এমনি হুশিয়ারি উচ্চারণ করেছেন তারা। এরআগে প্রেসক্লাবের সামনে মানববন্ধন করে তারা।
আগামীকাল শুক্রবার (১৪ আগস্ট) আসরবাদ এলাকায় বিক্ষোভ মিছিল করবে এলাকাবাসী।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন শহীদ পরিবারের পক্ষে মাসুম বিল্লাহ। ইস্টার্ণগেট ট্রিপল হত্যাকান্ডের অভিযুক্ত শেখ জাকারিয়া, মিল্টন, জাফরীন, কবির, জিহাদ, জাহাঙ্গীর, মিঠু পারভেজ, আলমগীর মোরাদসহ সন্ত্রাসীদের অবিলম্বে গ্রেফতারপূর্বক দৃষ্টান্তমুলক সর্বোচ্চ শাস্তির দাবি জানিয়েছেন। এলাকার চিহিৃত সন্ত্রাসীদের অবৈধ আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার না হওয়া পর্যন্ত স্থানীয়রা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন বলেও জানিয়েছেন তারা।
এসময়ে উপস্থিত ছিলেন শেখ আবিদ হোসেন, মনিরুল ইসলাম, সরদার আঃ হামিদ, শিরিনা বেগম, তরিকুল ইসলাম, এসএম বকতিয়ার পারভেজ, রবিউল ইসলাম, রেজোয়ান আকুঞ্জি রাজা, মাসুম বিল্লাহ, আমিরুল ইসলাম, কেসমত আলী, শাহিদুল, মুজিবার রহমান, মিটুল, সাজ্জাদ, আঃ সালাম গাজী, বাবলু ইউসুপ গাজী, তবিবুর রহমান ও সাবিনা প্রমুখ।
প্রসঙ্গত্ব, গত ১৬ জুলাই রাতে খুলনা মহানগরীর ইস্টার্ণগেটের মশিয়ালী এলাকায় শেখ জাকারিয়া বাহিনীর গুলিতে নিহত হন আটরা-গিলাতলা ইউনিয়নের মশিয়ালী গ্রামের মৃত বারিক শেখের ছেলে মোঃ নজরুল ইসলাম (৬০) ও একই গ্রামের মোঃ ইউনুচ আলীর ছেলে গোলাম রসুল (৩০)। এসময়ে গুলিবিদ্ধ হন মোঃ সাইফুল ইসলাম, আফসার শেখ, শামীম, রবি, খলিলুর রহমান ও মশিয়ার রহমানসহ আরও কয়েকজন। গুলিবিদ্ধ সাইফুল ইসলাম পরদিন সকালে মারা যান। অপরদিকে, বিক্ষুব্ধ গ্রামবাসীর গণপিটুনিতে জাকারিয়ার চাচাতো ভাই জিহাদ শেখকে নিহত হয়। এঘটনায় মোট ৪জন নিহতের ঘটনা ঘটেছিল।
পরে নিহত মোঃ সাইফুল ইসলামের পিতা মোঃ শহিদুল ইসলাম বাদী হয়ে খানজাহান আলী থানায় ২২জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত ১৫-১৬জনকে আসামী করে মামলা দায়ের (যার নং-১২, ১৮-৭-২০২০ইং) করেছেন। মামলার এজাহারভুক্ত আসামীরা হল- মশিয়ালী গ্রামের মৃত হাসান আলি শেখের ছেলে মোঃ মিল্টন শেখ (৪৫), মোঃ জাকারিয়া শেখ (৩৭), মোঃ জাফরিন শেখ (৩২) ও মোঃ কবির শেখ (৫০), একই এলাকার মোঃ নুরু শেখের ছেলে মোঃ রাজু শেখ (২৮), মোঃ ইলিয়াসের ছেলে মোঃ আশিক (২২), মোঃ মোকছেদ শেখের ছেলে মোঃ জুয়েল শেখ (৪০), মোঃ আলমগীর শেখ (৩৮), মোঃ জাহাঙ্গীর শেখ (৩৫) ও মোঃ মুরাদ শেখ (৩২), আব্দুল জব্বারের ছেলে মোঃ আরিফ (৩৩), মোঃ নুর ইসলামের ছেলে মোঃ হাসান (২০), মোঃ ফারুকের ছেলে মোঃ রবিন (২০), মোঃ ইনছার আলি ছেলে মোঃ বাবু (২০), মৃত আক্তার আকুঞ্জির ছেলে মোঃ রহিম আকুঞ্জি (২২), মৃত সালাম আকুঞ্জির ছেলে মোঃ তৌহিদ আকুঞ্জি (২২), মোঃ বাবুল শেখের ছেলে মোঃ মিঠু শেখ (৩৩), মৃত আদিল শেখের ছেলে মোঃ আজিম শেখ (৩৫), মোঃ নিজার শেখের ছেলে মোঃ নাজমুল শেখ (২২), মোঃ কুরবান শেখের ছেলে মোঃ আরমান শেখ (২০), মোঃ জমির উদ্দিনের ছেলে মোঃ মনিরুল (২৭) ও ইব্রাহিম শেখের ছেলে মোঃ নুর ইসলাম (২০)।
মামলাটিতে এ পর্যন্ত পাঁচজন আসামীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। সন্ত্রাসী শেখ জাকারিয়ার বাড়ীর সংলগ্ন এলাকা থেকে একাধিক আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে। যদিও হত্যাকান্ডের মূল খলনায়ক শেখ জাকারিয়া ও তার ভাই মিল্টনকে গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ। ফলে এলাকাবাসীর মধ্যে এখনো চাপা ক্ষোভ বিরাজ করছে।
খুলনা গেজেট/এআইএন