খুলনা, বাংলাদেশ | ২ কার্তিক, ১৪৩১ | ১৮ অক্টোবর, ২০২৪

Breaking News

  দেশে ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গুতে ৩ জনের মৃত্যু, হাসপাতালে ভর্তি ৪১১
তদন্তে মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ

ইস্টার্ণগেট ট্রিপল মার্ডার মামলা প্রশমনে গ্রামবাসীর বিরুদ্ধে আসামীর স্ত্রীর মামলা

নিজস্ব প্রতিবেদক

দল-মতের উর্দ্ধে উঠে অন্যায়ের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনের রোল মডেল খুলনা মহানগরীর ইস্টার্ণগেট মশিয়ালী। চিহিৃত অবৈধ অস্ত্রধারীদের বুলেটের সামনে বুক পেতে দিয়ে তিনজন প্রাণ দিয়েছেন; তবুও পিছপা হয়নি এলাকাবাসী। ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনে ট্রিপল মার্ডার মামলার মূল অভিযুক্তদের গ্রেফতার ও অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারের দাবিতে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়েছিলেন তারা। কিন্তু এবার ঐক্যবদ্ধ গ্রামবাসীর আন্দোলন প্রশমিত করতে ট্রিপল হত্যা মামলার মূল অভিযুক্ত শেখ জাকারিয়ার ভাই মিল্টনের স্ত্রী বাদী হয়ে নিরীহ গ্রামবাসীর বিরুদ্ধে মামলা করেছেন। নগর গোয়েন্দা পুলিশকে এজাহারটির তদন্তভার দিয়েছে আদালত। এতে নতুন করে উত্তেজনার সৃষ্টি হয়েছে ইস্টার্ণগেট।

সূত্রমতে, ইস্টার্ণগেটে শেখ জাকারিয়া-জাফরিন ও মিল্টন বাহিনীর গুলিতে গ্রামের নিরীহ তিনজন নিহত ও ৮-১০জন গুলিবিদ্ধের ঘটনার এক মাস ৪ দিন পরে ট্রিপল মার্ডার মামলার মূল আসামী মিল্টনের স্ত্রী শারমিন সুলতানা বাদী হয়ে অগ্নিসংযোগ ও লুটপাট করে প্রায় সোয়া দুই কোটি টাকার ক্ষতি সাধনের অভিযোগ এনে খুলনার মুখ্য মহানগর ম্যাজিস্ট্রেট-২ এর আদালতে ৫৩জনকে আসামী করে অভিযোগ করেছেন (যার সি আর নং ৭০)। আদালত অভিযোগটি আমলে নিয়ে ডিবি পুলিশকে আগামী ৬ অক্টোবরের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের জন্য আদেশ দিয়েছে।
এদিকে, নিরীহ গ্রামবাসীকে এবং হত্যা পরবর্তী আন্দোলন সংগ্রামকারীদের বিরুদ্ধে মামলা করায় এলাকায় নতুন করে উত্তেজনা দেখা দিয়েছে। ওই অভিযোগের প্রতিবাদে মশিয়ালী গ্রামবাসী ঘোষনা করেছে প্রতিবাদ সভা, মানববন্ধনসহ বিভিন্ন কর্মসুচি।

মিল্টনের স্ত্রী শারমিন সুলতানার অভিযোগে উল্লেখ করা হয়, মশিয়ালী গ্রামের মৃত বারিক শেখের ছেলে মোঃ মুজিবর শেখকে সিএন্ডবি’র একটি বাসা থেকে তিন রাউন্ড বন্দুকের গুলি ও দুই রাউন্ড পিস্তলের গুলিসহ পুলিশ গ্রেফতার করলে অভিযুক্ত আসামীরা তার স্বামী মিল্টনসহ মিল্টনের দুই ভাই জাকারিয়া ও জাফরিন (নিরীহ) মুজিবর শেখকে গুলিসহ পুলিশকে ধরিয়ে দিয়েছে এমন কথা এলাকায় ছড়িয়ে দিয়ে গন্ডগোল সৃষ্টি করে। অবৈধ জনতা দলবদ্ধ হয়ে অভিযুক্ত আসামীরা রাম দা, লোহার রড, তাদের নিকট থাকা বিভিন্ন অস্ত্রপাতি নিয়ে অতর্কিতভাবে মিল্টনসহ তার ভাইদের উপর হামলা করে। উভয়পক্ষের মধ্যে প্রচন্ড মারামারির একপর্যায়ে ঘটনাস্থলে একাধিক ব্যক্তির মৃত্যু ঘটে। মৃত্যুর ঘটনার পর এক নং আসামী শহিদুল শেখের (৪৮) নেতৃত্বে অভিযুক্ত আসামীরা মিল্টনের বাড়িতে প্রবেশ করে লুটপাট করে ঘরের মধ্যে থাকা আসবাপত্রে কেরোসিন ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেয়। এতে দুই কোটি ১৫ লাখ ১৯ হাজার ৭৮৮ টাকার ক্ষতিসহ বিভিন্ন কাগজপত্র পুড়ে যায়। এছাড়া অভিযুক্তরা মিল্টনের দুই ভাই জাকারিয়া ও জাফরিনসহ ১৪/১৫টি বাড়িতে একই কায়দায় পুড়িয়ে দেয়।

মুখ্য মহানগর আদালতের বিচারক আগামী ধার্য্য ৬ অক্টোবরের মধ্যে ডিবি পুলিশকে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের জন্য আদেশ দিয়েছেন।

অপরদিকে, মলিয়ালীর আলোচিত ট্রিপল মার্ডার মামলার মূল আসামীসহ অভিযুক্ত আসামীদের গ্রেফতার এবং অস্ত্র উদ্ধারের দাবিতে গ্রামবাসীর চলমান আন্দোলনের সামনের সারির ব্যক্তিসহ গ্রামের নিরীহ ৫৩জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ দাখিল করায় গ্রামে নতুন করে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়েছে। মিছিল মিটিংসহ বিভিন্ন কর্মসুচি ঘোষনা করা হয়েছে। আগামীকাল (২৭ আগস্ট) শুক্রবার বিকেল ৪টায় বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সভা থেকে নুতন কর্মসুচি ঘোষনা করা হতে পারে বলে জানিয়েছেন আন্দোলনকারীরা। এছাড়া ৪ সেপ্টেম্বর স্মরণ সভাসহ বিভিন্ন কর্মসুচি রয়েছে।

প্রসঙ্গত: গত ১৬ জুলাই মশিয়ালী গ্রামের জাকারিয়া-জাফরিন ও মিল্টন বাহিনীর গুলিতে তিনজন নিহত হওয়ার ঘটনার খানজাহান আলী থানায় ২২জনের নাম উল্লেখ করে মামলা করেন গুলিতে নিহত কলেজ ছাত্র সাইফুলের পিতা সাইদুৃল ইসলাম। এই মামলায় এখন পর্যন্ত মূল আসামী জাকারিয়া ও মিল্টনসহ অন্য আসামীদের গ্রেফতার ও ব্যবহৃত অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার করতে পারেনি পুলিশ। তবে এ পর্যন্ত মামলার এজাহারভুক্ত ২২জন আসামীর মধ্যে ১০জনেক গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

 

খুলনা গেজেট/এআইএন




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!