ইসরায়েল অধিকৃত জেরুজালেমের নিকটবর্তী এলাকায় ভয়াবহ দাবানলের দ্রুত বিস্তারের প্রেক্ষাপটে ‘জাতীয় জরুরি অবস্থা’ ঘোষণা করা হয়েছে। প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরাইল কাৎজ জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেন। পরিস্থিতি এতটাই গুরুতর যে, এটিকে সাম্প্রতিক বছরগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বড় দাবানল হিসেবে আশঙ্কা করা হচ্ছে, যার ফলে বহু বেসামরিক নাগরিক চরম ঝুঁকির মধ্যে পড়েছেন।
জেরুজালেম পোস্টের বরাত দিয়ে আল-মনিটরের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা এবং মানুষের জীবন রক্ষার্থে জরুরি ভিত্তিতে অগ্নিনির্বাপণ কর্মীদের সহায়তার জন্য সেনা মোতায়েনের নির্দেশ দিয়েছেন প্রতিরক্ষামন্ত্রী।
উদ্ধারকারী সংস্থা ম্যাগেন ডেভিড অ্যাডম (এমডিএ) জানিয়েছে, এ পর্যন্ত ২২ জন আহত ব্যক্তিকে চিকিৎসা প্রদান করা হয়েছে, যাদের মধ্যে ১২ জনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। আহতদের অধিকাংশই ধোঁয়ায় শ্বাসকষ্টে ভুগছেন।
ইসরাইল কাৎজ বিবৃতিতে বলেন, ‘আমরা একটি জাতীয় জরুরি অবস্থার মুখোমুখি এবং জীবন বাঁচাতে ও আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে সব বাহিনীকে একত্রিত করতে হবে।’
টাইমস অব ইসরায়েলের খবরে বলা হয়েছে, তীব্র তাপপ্রবাহ ও প্রবল বাতাসের কারণে দাবানলের সূত্রপাত হয়েছে, যা আগুন নিয়ন্ত্রণে বড় বাধা সৃষ্টি করছে। নেভে শালোম, বেকোয়া, তাওজ এবং নাচশোনসহ বেশ কয়েকটি সম্প্রদায়ের লোকজনকে ইতোমধ্যে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। মেসিলাত জিওনের বাসিন্দাদেরও সরিয়ে নেওয়ার প্রয়োজন হতে পারে বলে পুলিশকে প্রস্তুত থাকতে বলা হয়েছে।
দাবানলের কারণে জেরুজালেম ও তেল আবিবের প্রধান সংযোগকারী মহাসড়ক রুট-১ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। পুলিশ জনসাধারণকে ওই এলাকা এড়িয়ে চলার অনুরোধ জানিয়েছে। এছাড়া জেরুজালেম ও তেল আবিবের মধ্যে ট্রেন চলাচলও বাতিল করা হয়েছে।
উদ্ধারকারী সংস্থা জানিয়েছে, ৬৩টি অগ্নিনির্বাপক দল এবং ১১টি বিমান আগুন নেভানোর কাজে নিয়োজিত রয়েছে। জেরুজালেমের অগ্নিনির্বাপণ বিভাগের কমান্ডার শমুলিক ফ্রিডম্যান এই দাবানলকে ইসরায়েলের ইতিহাসে সম্ভবত সবচেয়ে বড় বলে উল্লেখ করেছেন।
এদিকে, জেরুজালেমের উপকণ্ঠে এশতাওল বনেও বিশাল দাবানল ছড়িয়ে পড়েছে, যার কারণে স্থানীয় আরও কিছু সম্প্রদায়কে সরিয়ে নিতে হয়েছে এবং রাস্তাঘাট বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। এক সপ্তাহের মধ্যে এটি দ্বিতীয় দাবানলের ঘটনা, যার জেরে তেল আবিবের পশ্চিমে বিভিন্ন এলাকা থেকে বাসিন্দাদের সরিয়ে নিতে হচ্ছে। ইসরায়েলের অগ্নিনির্বাপণ ও উদ্ধার পরিষেবা জানিয়েছে, জেরুজালেমের পাহাড়ের অন্তত পাঁচটি স্থানে আগুন জ্বলছে।
খুলনা গেজেট/এএজে