মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মধ্যস্থতায় সংযুক্ত আরব আমিরাত ও ইসরাইলের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপনের বিষয়টিতে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেছেন ইহুদিবাদী রাষ্ট্রটির প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু।
ডোনাল্ড ট্রাম্পের এই ঘোষণার পর নেতানিয়াহু হিব্রু ভাষায় এক টুইটে আজকের দিনটিকে ‘এক ঐতিহাসিক দিন’ বলে আখ্যায়িত করেছেন।
তিনি বলেন, এই চুক্তি ইসরাইলকে একটি ঐতিহাসিক দিন উপহার দিয়েছে। ইসরাইল রাষ্ট্রের জন্য ঐতিহাসিক এই দিনের বিষয়ে আমি স্থানীয় সময় রাত ৮টায় বিশেষ ঘোষণা দেব।
যুক্তরাষ্ট্রে সংযুক্ত আরব আমিরাতের রাষ্ট্রদূত ইউসেফ আল ওতাইবা বলেছেন, ‘এটি ঐ অঞ্চলে কূটনীতির বিজয়।’ তিনি একে আরব-ইসরাইল সম্পর্কে এক গুরুত্বপূর্ণ অগ্রগতি বলে বর্ণনা করে বলেন, এর ফলে উত্তেজনা কমবে এবং অনেক ইতিবাচক পরিবর্তন হবে।
বৃহস্পতিবার ট্রাম্প, ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু ও আবুধাবির ক্রাউন প্রিন্স শেখ মোহাম্মদ বিন জায়েদের মধ্যে টেলিফোন কলে একটি চুক্তিতে উপনীত হয়েছে।
বিবিসি জানিয়েছে, এটি ইসরাইলের সঙ্গে তৃতীয় কোনো আরব রাষ্ট্রের শান্তি চুক্তি। এর আগে মিসর ১৯৭৯ সালে এবং জর্ডান ১৯৯৪ সালে ইসরাইলের সঙ্গে শান্তি চুক্তি করে।
সামনের দিনগুলোতে ইসরাইল এবং সংযুক্ত আরব আমিরাতের প্রতিনিধিরা বিনিয়োগ, পর্যটন, সরাসরি ফ্লাইট, নিরাপত্তা, টেলিযোগাযোগ, জ্বালানি, স্বাস্থ্য, সংস্কৃতিসহ নানা বিষয়ে দ্বিপাক্ষিক চুক্তি করার জন্য বৈঠকে বসবেন।
এদিকে, ইসরায়েলের সাথে সম্পর্ক স্বাভাবিক করতে সংযুক্ত আরব আমিরাতের স্বাক্ষরিত চুক্তির নিন্দা জানিয়েছে গাজা নিয়ন্ত্রণকারী সশস্ত্র সংগঠন হামাস। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প চুক্তি স্বাক্ষরের ঘোষণা দেয়ার হামাসের পক্ষ থেকে এই চুক্তিকে ফিলিস্তিনিদের পিঠে ছুরিকাঘাত বলে উল্লেখ করা হয়েছে। তুরস্কের রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা আনাদোলু এজেন্সি এখবর জানিয়েছে।
১৯৪৮ সালে ইসরায়েলের স্বাধীনতার ঘোষণার পর ইসরায়েল ও আরবের মধ্যে এটি তৃতীয় চুক্তি। এর আগে মিসর ১৯৭৯ সালে ও জর্ডান ১৯৯৪ সালে চুক্তি স্বাক্ষর করেছিল। এখন পর্যন্ত উপসাগরীয় কোনও আরব দেশের সঙ্গে ইসরায়েলের কূটনৈতিক সম্পর্ক নেই। তবে ইরানের আঞ্চলিক প্রভাব মোকাবিলায় ইসরায়েলের সঙ্গে এসব দেশের অনানুষ্ঠানিক যোগাযোগ রয়েছে।
হামাসের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, এই চুক্তি ফিলিস্তিনিদের কোনও স্বার্থের অনকূলে নয়। এতে ফিলিস্তিনি জনগণের অধিকারকে অগ্রাহ্য করা হয়েছে।
এক বিবৃতিতে সংগঠনটি বলেছে, ইসরায়েলের সঙ্গে এই চুক্তি ফিলিস্তিনি জনগণের পিঠে ষড়যন্ত্রমূলক ছুরিকাঘাত। আরেকটি ফিলিস্তিনি সংগঠন পপুলার রেসিস্ট্যান্স কমিটি চুক্তিটিকে ফিলিস্তিনিদের বিরুদ্ধে বড় ধরনের ষড়যন্ত্র বলে আখ্যায়িত করেছে। ইসলামিক জিহাদ মুভমেন্টের পক্ষ থেকে নতুন চুক্তিকে আত্মসমর্পণের সঙ্গে তুলনা করা হয়েছে।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বৃহস্পতিবার ঘোষণা দেন, ইসরায়েল ও সংযুক্ত আরব আমিরাত সম্পর্ক স্বাভাবিক করতে সমঝোতায় পৌঁছেছে। এই লক্ষ্যে একটি চুক্তি স্বাক্ষর হয়েছে। ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু, আবুধাবির যুবরাজ মোহাম্মদ বিন জায়েদ ও ট্রাম্প এক যৌথ বিবৃতিতে বলেছেন, তাদের আশা এই বিরাট ঐতিহাসিক পদক্ষেপ মধ্যপ্রাচ্যে শান্তির অগ্রগতিকে এগিয়ে নেবে।
খুলনা গেজেট/এআইএন