সন্ধ্যা থেকে মেঘের ঘনঘটা। সাথে গুড়ি গুড়ি বৃষ্টি আর বজ্রপাত। এরই মধ্যে নগরীর সান্ধ্য বাজারে ভোজন রসিকদের ভিড় ইলিশ মাছ কিনতে। মধ্য রাত পার হলেই রূপালী ইলিশ ২২ দিনের জন্য পাওয়া যাবে না। তাই বাজারে ক্রেতাদের সমাগম স্বাভাবিক দিনের তুলনায় একটু বেশী।
নড়াইল কলেজের শিক্ষক সোহেলী শাহরিয়ার দুই জোড়া ইলিশ (৭ কেজি) ক্রয় করেছেন ১১ হাজার ৪ শ টাকায়। অর্থাৎ সাড়ে তিন কেজি ওজনের এক জোড়ার দাম নিয়েছে ৫ হাজার ৭ শ টাকা। যা ছিল খুলনা সান্ধ্য বাজারের সবচেয়ে বড় মাছ। মাছ গুলো দেখে তিনি লোভ সামলাতে না পেরে কিনে নেন। সাথে তার পরিবারের সদস্যরাও ছিলেন।
এ ব্যাপারে তিনি জানান, স্বাভাবিক সময়ে এরকম বড় ইলিশ বাজারে সাধারণত পাওয়া যায় না, তাই নেওয়া।
মাছ বিক্রেতা মুরাদ হোসেন গাজী জানান, রাত ১২ টা পর্যন্ত সময় আছে। সন্ধ্যা থেকে বৃষ্টি হচ্ছে। যদি ক্রেতা তেমন না আসে তাহলে কী করবেন, ভেবে মাছগুলো এক প্রকার লসে বিক্রি করছেন বলে খুলনা গেজেটকে জানিয়েছেন তিনি।
ঐ মাছ বিক্রেতা আরও জানান, বাজারে ভাল মাছের সংখ্যা খুব কম। তিনি চার মণ ইলিশ ক্রয় করেছেন। আজ তা বিক্রির শেষ দিন। গত বছরের এই দিনে প্রচুর মাছ বিক্রয় করেছেন। এ বছর ভারতে মাছ রপ্তানির কারণে তেমন ক্রয় করতে পারেননি। বড় বড় মাছ এলসি’র কর্মকর্তারা ক্রয় করে নিয়ে গেছেন। মাছের সরবরাহ তেমন একটা নেই। যা আছে তাও বেশী দাম। তিনি আজ পৌনে দু’কেজি ওজনের মাছের মণ ক্রয় করেছেন ৭০ হাজার টাকায়। যা গত বছরে ক্রয় করেছিলেন ৫০ হাজার টাকায়। মাছের দাম স্বাভাবিকের তুলনায় অনেক বেশী। অনেকেই ইলিশ মাছের দাম শুনে চলে যাচ্ছেন।
ওই বাজারের অপর মাছ বিক্রেতা মোঃ শহিদুল ইসলাম জানান, গত বছরের তুলনায় এবার মাছের সরবরাহ কম। দাম একটু বেশী। আজ প্রায় পৌনে চার লাখ টাকার মাছ বাজারে এনেছেন তিনি। দাম সহনীয় হলে অনেকে নিয়ে যেত। ৭ শ গ্রাম ওজনের ইলিশ মাছ ৯০০ টাকা, ৮ শ গ্রাম সাইজ ১১ শ টাকা, পৌনে দু’কেজি ওজনের ইলিশ ১৯ শ থেকে দু’হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে তার দোকানে। বৃষ্টি কম হলে বাজারে অনেক মানুষ আসবে বলে তার বিশ্বাস।
মাছ বিক্রেতা পান্না জানান, এলসি না হলে বাজারে মাছের সরবরাহ বাড়ত। প্রতিবেশী দেশ ভারতে ইলিশ মাছে সয়লাব, আর দেশের মানুষ মাছ কিনতে পারছে না। দাম বেশী হওয়ায় অনেকে বড় মাছ ক্রয় করতে না পেরে ছোট নিচ্ছে। অনেকের বড় সাইজের মাছ ধরা রয়েছে। যাদের আয় বেশী তারা বড় মাছ ক্রয় করতে পারছেন। আবার অনেকে মাছের দাম শুনে খালি হাতে ফিরে যাচ্ছে।
সকালে নগরীর মিস্ত্রিপাড়া বাজারে কথা হয় মৃত্যুঞ্জয়ের সাথে। তিনি আধা কেজি ও তিনশ’গ্রাম সাইজের প্রায় ২ মণ ইলিশ মাছ বাজারে এনেছিলেন। সেখানে ক্রেতাদের আগমন বেশ ছিল। দাম দরে না মেলায় তার আধা মণ মাছ ধরা রয়েছে। ২২ দিন বিক্রি করতে পারবেন না জেনে বরফ দিয়ে তা সংরক্ষণ করার ব্যবস্থা করেছেন।
খুলনা গেজেট/এএ