খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবসায় প্রশাসন ডিসিপ্লিনের শিক্ষার্থী মেহেদী হাসান তুরস্কের আফিয়ন কোচাটেপে বিশ্ববিদ্যালয়-এ ইরাসমাস প্লাস এক্সচেঞ্জ প্রোগ্রামের আওতায় অধ্যয়নের সুযোগ পেয়েছেন। খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় এবং আফিয়ন কোচাটেপে বিশ্ববিদ্যালয়, তুরস্ক-এর মধ্যে স্বাক্ষরিত সমঝোতা স্মারকের (এমওইউ) আওতায় উভয় বিশ্ববিদ্যালয় ইরাসমাস প্লাস প্রকল্পের মাধ্যমে সংযুক্ত রয়েছে। এই প্রোগ্রামের অধীনে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের জন্য এক্সচেঞ্জ প্রোগ্রামের সুযোগ রয়েছে।
২০২৪ সালের নভেম্বর মাসে আফিয়ন কোচাটেপে বিশ্ববিদ্যালয়, তুরস্ক-এর আন্তর্জাতিক সম্পর্ক অফিস (আইআরও) খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের দি অফিস অব ইন্টারন্যাশনাল অ্যাফেয়ার্সের সঙ্গে যোগাযোগ করে শিক্ষার্থী মনোনয়নের জন্য আহ্বান জানায়। এরপর খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের দি অফিস অব ইন্টারন্যাশনাল অ্যাফেয়ার্স অফিস সংশ্লিষ্ট ডিসিপ্লিনের শিক্ষার্থীদের থেকে আবেদন আহ্বান করে এবং কঠোর নির্বাচনী প্রক্রিয়ার মাধ্যমে ব্যবসায় প্রশাসন ডিসিপ্লিনের শিক্ষার্থী মেহেদী হাসানকে মনোনীত করে। পরবর্তীতে আফিয়ন কোচাটেপে বিশ্ববিদ্যালয়ের আইআরও টিম এই মনোনয়নকে স্বীকৃতি প্রদান করে এবং এর মাধ্যমে মেহেদী হাসান খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম শিক্ষার্থী হিসেবে ইরাসমাস প্লাস প্রকল্পের আওতায় আফিয়ন কোচাটেপে বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থী বিনিময় কর্মসূচিতে অংশগ্রহণের সুযোগ পান।
আগামীকাল শুক্রবার (৬ জানুয়ারি) তিনি এই কর্মসূচিতে অংশগ্রহণের জন্য তুরস্কের উদ্দেশ্যে যাত্রা করবেন। তার এই সাফল্যে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের কার্যালয়ে এক শুভেচ্ছা অনুষ্ঠান আয়োজন করা হয়। এ সময় উপাচার্য প্রফেসর ড. মোঃ রেজাউল করিম এবং উপ-উপাচার্য প্রফেসর ড. মোঃ হারুনর রশীদ খান মেহেদী হোসেনকে শুভেচ্ছা জানান।
উপাচার্য প্রফেসর ড. মোঃ রেজাউল করিম বলেন, ‘আমরা চাই এই ধরনের আন্তর্জাতিক এক্সচেঞ্জ প্রোগ্রামে নিয়মিত অংশ নিতে, যা আমাদের আন্তর্জাতিক সুখ্যাতি বৃদ্ধি করবে এবং একাডেমিক উৎকর্ষের মাধ্যমে আমরা বৈশ্বিক পরিমণ্ডলে অবদান রাখতে পারব।’ তিনি মেহেদী হাসানের প্রশংসা করে বলেন, ‘তুমি এখন আফিয়ন কোচাটেপে বিশ্ববিদ্যালয়ে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক দূত। তোমার সাফল্য আমাদের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, কারণ এটি প্রমাণ করবে যে, উন্নয়নশীল বিশ্বে অবস্থিত খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় কীভাবে উৎকৃষ্ট মানের গ্র্যাজুয়েট তৈরি করছে।’ মেহেদী হাসানের এই অসাধারণ অর্জনের মাধ্যমে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের জন্য ভবিষ্যতে আরও আন্তর্জাতিক সুযোগ সৃষ্টি হবে বলে সংশ্লিষ্টরা আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের দি অফিস অব ইন্টারন্যাশনাল অ্যাফেয়ার্সের পরিচালক প্রফেসর ড. মোঃ আশিক উর রহমান বলেন, ‘আমাদের শিক্ষার্থীদের আন্তর্জাতিক পর্যায়ে পড়াশোনার সুযোগ দিতে আমরা কাজ করে যাচ্ছি। মেহেদী হাসানের এই সুযোগ তার শিক্ষাজীবনের জন্য গুরুত্বপূর্ণ এবং আশা করি ভবিষ্যতে আরও শিক্ষার্থী এই ধরনের সুযোগ পাবে।’
তিনি বিশ্বের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের উচ্চশিক্ষার সুযোগ ও গবেষণা সহযোগিতা বৃদ্ধির উদ্যোগ গ্রহণে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যালামনাইদের প্রতি আহ্বান জানান। একইসঙ্গে তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকমণ্ডলী ও প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের উদ্যোগে নেওয়া যেকোনো আন্তর্জাতিক কোলাবরেশনে সর্বাত্মক সহযোগিতা করবেন বলে প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।
এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রেজারার প্রফেসর ড. মোঃ নূরুন্নবী, ব্যবসায় প্রশাসন ডিসিপ্লিন প্রধান প্রফেসর শেখ মাহমুদুল হাসান, খানবাহাদুর আহছানউল্লাহ হলের প্রভোস্ট প্রফেসর শরিফ মোহাম্মদ খান, সিলেকশন কমিটির সদস্য ও খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় এবং আফিয়ন কোচাটেপে বিশ্ববিদ্যালয়, তুরস্ক-এর মধ্যে স্বাক্ষরিত এমওইউ’র অন্যতম উদ্যোক্তা, ফরেস্ট্রি এন্ড উড টেকনোলজি ডিসিপ্লিনের প্রফেসর ড. মোঃ ওয়াসিউল ইসলাম।
খুলনা গেজেট/ টিএ