দখলদার ইসরায়েলের সামরিক অবকাঠামো লক্ষ্য করে মঙ্গলবার রাতে ব্যাপক হামলা চালিয়েছে ইরান। এরমধ্যে অন্যতম ছিল নেভাতিম বিমান ঘাঁটি।
যুক্তরাষ্ট্রের সংবাদমাধ্যম সিএনএন হামলার ভিডিও বিশ্লেষণ করে জানিয়েছে, নেভাতিম ঘাঁটিতে অন্তত কয়েক ডজন মিসাইল ছুড়েছে ইরান। যেগুলো একের পর এক ঘাঁটিতে আঘাত হানতে দেখা গেছে।
সংবাদমাধ্যমটি জানিয়েছে, তারা যে দুটি ভিডিও বিশ্লেষণ করেছে সেগুলোর মধ্যে একটি ধারণ করা হয়েছে আরাত আন-নাকাব শহর থেকে। এটি বিমান ঘাঁটির ঠিক দক্ষিণ দিকে অবস্থিত। ভিডিওতে যেসব ভবন দেখা গেছে; সেগুলোর সঙ্গে পুরোনো ছবির সাদৃশ্যতা খুঁজে পেয়ে সিএনএন নিশ্চিত করেছে; ভিডিওটি ঘাঁটির পাশ থেকেই ধারণ করা হয়েছে।
ভিডিওতে দেখা যায়, মিসাইল ঠেকানোর একটি প্রতিরোধী মিসাইল ব্যাটারি থেকে ছুড়ছে ইসরায়েলি বাহিনী। এছাড়া ঘাঁটির কন্ট্রোল টাওয়ারও ভিডিওতে দেখা যাচ্ছিল। ঠিক তখনই ঘাঁটিতে মিসাইল পড়তে থাকে এবং সেগুলো বিস্ফোরিত হতে থাকে। এরপর ওই ঘাঁটি থেকে ধোঁয়ার কুণ্ডলি বের হওয়া শুরু করে। তখনও ঘাঁটিতে একের পর এক মিসাইল পড়তে ও বিস্ফোরিত হতে থাকে।
তবে ঘাঁটির কোন কোন অবকাঠামো লক্ষ্য করে এতগুলো মিসাইল ছোড়া হয়েছে সেটি রাতের অন্ধকারে বোঝা যায়নি বলে জানিয়েছে সিএনএন। তারা ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনীর (আইডিএফ) কাছে এ ব্যাপারে জানতে যোগাযোগ করলেও কোনো সাড়া পায়নি।
এর আগে গত ১৩ এপ্রিল দখলদার ইসরায়েলে মিসাইল ছুড়েছিল ইরান। সেবারও নেভাতিম নামের এই ঘাঁটিকে লক্ষ্য করা হয়েছিল। তবে ওই সময় ঘাঁটির ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ কম হয়েছিল। প্রতিরক্ষা বাহিনীর মুখপাত্র ড্যানিয়ে হ্যাগারি ওই সময় জানিয়েছিলেন, ঘাঁটির রানওয়েও সচল আছে।
৯০ শতাংশ মিসাইল লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হেনেছে : ইরান
ইরানের চৌকস ইসলামিক বিপ্লবী গার্ড জানিয়েছে, দখলদার ইসরায়েলে ছোড়া মিসাইলের ৯০ শতাংশ নির্দিষ্ট লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হেনেছে। মঙ্গলবার (১ অক্টোবর) ইসরায়েলকে লক্ষ্য করে অভূতপূর্ব মিসাইল হামলা চালায় ইরান। এতে ব্যবহার করা হয় অন্তত ২০০টি ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র।
বিপ্লবী গার্ডের বরাতে ইরানের রাষ্ট্রীয় টিভি চ্যানেল জানিয়েছে, মিসাইল দিয়ে লক্ষ্য করা হয়েছিল দখলদার ইসরায়েলের বিমান ও রাডার ঘাঁটি। এছাড়া হামাস ও হিজবুল্লাহর কমান্ডারদের হত্যা পরিকল্পনার সঙ্গে যারা জড়িত ছিল তাদেরও লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত করা হয়।
ইরান জানিয়েছে, আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত নিজস্ব প্রতিরক্ষা নিশ্চিতেই ইসরায়েলকে লক্ষ্য করে মঙ্গলবার রাতে হামলা চালানো হয়েছে।
এদিকে ইরানের হামলার পর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অসংখ্য ছবি ও ভিডিও প্রকাশিত হচ্ছে। এতে দেখা যাচ্ছে, মিসাইলের আঘাতে কোথাও কোথাও গভীর খাদের সৃষ্টি হয়েছে। কোথাও ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ে আছে মিসাইলের ধ্বংসাবশেষ।
ইরানের এই হামলার কঠোর জবাব দেওয়ার হুমকি দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। দেশটির জাতীয় নিরাপত্তা পরামর্শক জ্যাক সুলিভান বলেছেন, ইসরায়েলের সঙ্গে আলোচনা করে উপযুক্ত সময়ে তারা জবাব দেবেন।
খুলনা গেজেট/এইচ