পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান কারাগারে। চারটি মামলায় তাকে কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। আর এবার প্রধানমন্ত্রী হওয়ার দৌড়ে যিনি এগিয়ে আছেন, সেই সাবেক প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফকে একের এক মামলা থেকে খালাস দেওয়া হয়েছে।
বিশ্লেষকেরা বলছেন, এটা নির্বাচন নয়, সিলেকশন। নির্বাচনে যে নওয়াজ শরিফ ও তার দল জয় পাবে, সেটা আগেই বলে দেওয়া সম্ভব হচ্ছে। পাকিস্তান এমন একটি দেশ, যেখানে কোনো সরকারই ক্ষমতার পূর্ণ মেয়াদ ভোগ করতে পারেনি। কোনো না কোনো অজুহাতে তাদের ক্ষমতাচ্যুত করা হয়েছে বা হতে হয়েছে।
দেশটির সামরিক বাহিনী মুখ্য সব রাজনীতিকদের মুক্তি আর জেলবন্দির পেছন ভূমিকা পালন করছে বলে বিশ্লেষকদের ধারণা। যদিও সামরিক বাহিনী প্রথম থেকেই এসব অভিযোগ অস্বীকার করছে। অথচ নওয়াজ শরিফই একসময় সামরিক বাহিনীর চক্ষুশূল ছিলেন বলে বিভিন্ন সময় আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের খবরে এসেছে। এদিকে নির্বাচনের আগের দিনই বোমা বিস্ফোরণে অন্তত ২৮ জনের প্রাণ গেছে।
নির্বাচন আয়োজনে এক বছর বিলম্ব ঘটে। অর্থনৈতিক সংকট এবং জঙ্গি হামলায় বিপর্যস্ত পাকিস্তানে ভবিষ্যত্টাই হুমকির মুখে। কারণ নির্বাচনে যিনিই জিতুন না কেন, তিনি দেশটির এই সংকট কতটা মোকাবিলা করতে পারবেন, তা নিয়ে সংশয় আছে। পাকিস্তানে বর্তমানে জনপ্রিয় নেতা ইমরান খান। তাকে ক্ষমতাচ্যুত করে ক্ষমতায় আসেন নওয়াজ শরিফের ভাই শাহবাজ শরিফ। তাঁর আমলে নওয়াজ শরিফকে একের পর এক মামলা থেকে মুক্তি দেওয়া হয় আইন পরিবর্তন করে। আর ইমরান খানকে উলটো গ্রেফতার করে কারাগারে ঢুকিয়ে বিভিন্ন মামলায় কারাদণ্ড দেওয়া হয়।
৭৪ বছর বয়সী নওয়াজ শরিফ চতুর্থবার প্রধানমন্ত্রী হওয়ার চেষ্টায় আছেন। বিদেশ থেকে ফিরিয়ে এনে তাকে ক্ষমতায় বসানো হচ্ছে। যদিও নওয়াজ শরিফকে পাকিস্তান পিপলস পার্টির ৩৫ বছর বয়সী বিলাওয়াল ভুট্টোর চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে হতে পারে। কারণ বিলাওয়াল ইতিমধ্যে নির্বাচনে কারচুপির আশঙ্কা করেছেন। এমনকি তিনি বলেছেন, একজনকে ক্ষমতায় বসানোর সব পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। নওয়াজ প্রধানমন্ত্রী হলে তিনি পররাষ্ট্রমন্ত্রীও হবেন না বলে ঘোষণা দিয়েছেন।
পাকিস্তানে ভারতের সাবেক রাষ্ট্রদূত অজয় বিসারিয়া বার্তা সংস্থা এএনআইকে দেওয়া সাক্ষাত্কারে বলেছেন, পাকিস্তানের নির্বাচনে কী হবে তা এখনই বলে দেওয়া যায়। সেনা আগে থেকে ঠিক করে রেখেছে কাকে তারা প্রধানমন্ত্রী হিসেবে চায় এবং সম্ভবত সেই মানুষটি হলেন নওয়াজ শরিফ। তাই ৮ ফেব্রুয়ারি (আজ) যা হবে, তা ইলেকশন না বলে সিলেকশন বা বাছাই করে নেওয়া বলাটাই ভালো। —ডন, বিবিসি ও ডয়চেভেলে