খুলনা, বাংলাদেশ | ১ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ | ১৬ নভেম্বর, ২০২৪

Breaking News

  আগামীর বাংলাদেশ হবে ন্যায়বিচার, মানবাধিকার, বাক স্বাধীনতার : ড. ইউনূস
  জুলাই-আগস্টে নিহতদের পূর্ণাঙ্গ তালিকা প্রকাশে সময় লাগবে : উপদেষ্টা আসিফ

ইভ্যালির কার্যালয়ে তালা, ফোন করে মিলছে না সাড়া

গে‌জেট ডেস্ক

আলোচিত ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান ইভ্যালির ভবিষ্যৎ নিয়ে শঙ্কায় পড়েছেন গ্রাহক ও বিক্রেতারা। প্রতিষ্ঠানটির কার্যালয় বেশ কিছুদিন ধরে বন্ধ। হটলাইনে ফোন করেও সাড়া মিলছে না। তাই পণ্য সরবরাহকারী বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান পাওনা নিয়ে এবং ক্রেতারা পণ্যের প্রাপ্তি নিয়ে দুশ্চিন্তায় রয়েছেন। তাদের আশঙ্কা, দেনা শোধ না করেই যুবক, ইউনিপের মতো ইভ্যালিও বন্ধ হতে পারে।

ইভ্যালির ফেসবুক পেজে ক্রেতা ও বিক্রেতারা নানা অভিযোগ করছেন। তারা বলছেন, বেশ কিছুদিন ধরে ইভ্যালির ধানমন্ডি কার্যালয়ে তালা ঝুলছে। কাস্টমার কেয়ারে ফোন করে কাউকে পাওয়া যাচ্ছে না। এমনকি ইভ্যালির ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ রাসেলেরও খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না।

বিশাল ছাড়ের মাধ্যমে পণ্য বিক্রি করে বাজারে সাড়া ফেলে দেওয়া ইভ্যালিকে নিয়ে বেশ কিছুদিন ধরে নানা আলোচনা হচ্ছে। ২০১৮ সালে প্রতিষ্ঠার পর মাত্র আড়াই বছরে দেশের ই-কমার্স খাতে বড় ধরনের ধাক্কা দেয় ইভ্যালি।

মোটরসাইকেল, ফ্রিজ, এসি, প্রাইভেটকার, খাদ্যদ্রব্য, ইলেক্ট্রনিক পণ্য বিক্রিতে সাড়া ফেলে। এসব পণ্য কিনতে গ্রাহককে আগাম অর্থ দিতে হতো। পণ্য দেওয়া হতো কয়েক মাস পর।

গ্রাহকদের অভিযোগ, দেড় মাসের মধ্যে পণ্য দেওয়ার কথা থাকলেও অধিকাংশ সময় ছয় মাস থেকে এক বছর পর পণ্য মিলত। আবার এর চেয়ে বেশি সময় পরও পণ্য না পাওয়ার সংখ্যাও কম নয়। এসব অনিয়ম নিয়ে গণমাধ্যম আর সামাজিক মাধ্যম সরব হয়ে ওঠে। এরপর বাণিজ্য মন্ত্রণালয় বাংলাদেশ ব্যাংককে ইভ্যালির লেনদেন খতিয়ে দেখার অনুরোধ করে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদন অনুসারে, গত ১৪ মার্চ পর্যন্ত ইভ্যালির মোট সম্পদ ছিল ৯১ কোটি ৬৯ লাখ টাকা (চলতি সম্পদ ৬৫ কোটি ১৭ লাখ টাকা) এবং মোট দায় ছিল ৪০৭ কোটি ১৮ লাখ টাকা। এর মধ্যে গ্রাহকের কাছে ইভ্যালির দায় ২১৩ কোটি ৯৪ লাখ এবং ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের কাছে দায় ১৮৯ কোটি ৮৫ লাখ টাকা। এই প্রতিবেদনের পর বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অনুরোধে অনিয়ম খতিয়ে দেখতে অনুসন্ধান শুরু করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। ইভ্যালিসহ ১৪টি ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।

এ ছাড়া চলতি মাসের শুরুতে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় থেকে জারি করা এক নীতিমালায় বলা হয়, অনলাইন মার্কেটপ্লেসগুলোকে পণ্যের অর্ডার নেওয়ার ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তা সরবরাহ করতে হবে এবং ১০ শতাংশের বেশি অগ্রিম টাকা নেওয়া যাবে না।

পাশাপাশি গ্রাহকদের অভিযোগের বিষয়ে ইভ্যালির কাছে ব্যাখ্যা চেয়ে চিঠি দিয়েছে ই-ক্যাব। কয়েকটি ব্যাংক তাদের কার্ডের মাধ্যমে ইভ্যালি থেকে পণ্য কেনার সুযোগ বন্ধ করে দিয়েছিল। অনেক পণ্য সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানও ইভ্যালির সঙ্গে ব্যবসা বন্ধের কথা জানাতে শুরু করেছে।

শুক্রবার ধানমন্ডির সোবহানবাগ এলাকায় ইভ্যালির কার্যালয়ের সামনে গিয়ে দেখা যায়, গ্রাহকদের অনেকেই নিজেদের পণ্য নিতে বা অগ্রিম অর্থ ফেরত নেওয়ার জন্য জড়ো হয়েছেন। বিক্রেতারাও নিজেদের বকেয়া আদায়ের জন্য ইভ্যালি কার্যালয়ে এসেছেন। প্রতিষ্ঠানটির অফিস তালাবদ্ধ। স্থানীয় চা বিক্রেতা ও ভবনের নিরাপত্তাকর্মীরা জানায়, ১ জুলাই থেকে শুরু হওয়া কঠোর লকডাউনের আগে থেকেই ইভ্যালির অফিস বন্ধ রয়েছে। অফিসের সামনে স্বাক্ষর ও তারিখবিহীন নোটিশ টানানো হয়েছে। তাতে লেখা রয়েছে- ‘মহামারি পরিস্থিতির কারণে সরকারি স্বাস্থ্যবিধি মেনে হোম অফিস চালু আছে। ফলে এই অফিস থেকে সশরীরে কোনো সেবা দেওয়া হবে না। অনলাইন গ্রাহকসেবা ও পণ্য সরবরাহ চালু থাকবে।’

শুক্রবার ইভ্যালির ফেসবুক পেজেও এ ধরনের নোটিশের দেখা মিলেছে। এসব বিষয়ে কথা বলতে ইভ্যালির ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ রাসেলের একাধিক ফোন নম্বরে যোগাযোগ করা হলেও তা বন্ধ পাওয়া যায়। ইভ্যালির ওয়েবসাইট থেকে পাওয়া হটলাইনে ফোন করা হলেও কেউ সাড়া দেয়নি।

 

খুলনা গেজেট/এমএইচবি




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!