র্যাগিংয়ের নামে কুষ্টিয়ার ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) ছাত্রীকে বিবস্ত্র করে ভিডিও ধারণে অভিযুক্ত দুই শিক্ষার্থীকে ক্যাম্পাস ছাড়ার নির্দেশ দিয়েছে হাইকোর্ট।
এক রিট আবেদনের প্রাথমিক শুনানি শেষে বৃহস্পতিবার বিচারপতি জে বি এম হাসান ও বিচারপতি রাজিক আল জলিলের হাইকোর্টে বেঞ্চ এ আদেশ দেয়।
এ ঘটনায় একজন জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট, নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও একজন সহকারী শিক্ষকের সমন্বয়ে তদন্ত কমিটি করতে কুষ্টিয়া জেলা প্রশাসককে নির্দেশ দিয়েছে আদালত। তিন দিনের মধ্যে কমিটি গঠন করে রিপোর্ট দিতে বলা হয়েছে পরবর্তী ৭ দিনের মধ্যে।
ছাত্রীর অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনের করা কমিটির রিপোর্টও ১০ দিনের মধ্যে জমা দিতে বলা হয়েছে। নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বলা হয়েছে নির্যাতনের শিকার শিক্ষার্থীর।
আদালত বলেছে, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে এ ধরনের ঘটনা উদ্বেগজনক।
ইবির দেশরত্ন শেখ হাসিনা হলের গণরুমে নবীন এক শিক্ষার্থীকে রোববার রাতে সাড়ে ৪ ঘণ্টা আটকে রেখে নির্যাতন চালানোর অভিযোগ ওঠে।
ওই ছাত্রী লিখিত অভিযোগে বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সহসভাপতি সানজিদা চৌধুরীর নেতৃত্বে তার অনুসারীরা নির্যাতন চালিয়েছেন। একপর্যায়ে তারা আমাকে বিবস্ত্র করে ভিডিও ধারণ, গালাগাল, ময়লা জিনিসপত্র জিহ্বা দিয়ে চাটানোসহ নানামুখী অমানুষিক নির্যাতন করেন।
‘এমনকি এ কথা কাউকে বললে মেরে ফেলার এবং শিয়াল-কুকুর দিয়ে খাওয়ানোরও হুমকি দেন ওই ছাত্রলীগ নেত্রী। তাদের ধারণ করা ভিডিও ভাইরাল করারও হুমকি দেয়া হয়।’
এদিকে অভিযুক্ত সানজিদা চৌধুরী অন্তরা অভিযোগ অস্বীকার করে বলেছেন, এগুলো মিথ্যা ও বানোয়াট। তিনি প্রশাসনের কাছে পাল্টা অভিযোগপত্র দিয়েছেন।
র্যাগিংয়ের নামে ছাত্রীকে বিবস্ত্র করে ভিডিও ধারণের ঘটনা তদন্তে বুধবার ৫ সদস্যের কমিটি গঠন করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
কমিটির সদস্য সচিব মো. আলীবদ্দীন খান বলেন, ‘আমরা শনিবার বসে আলাপ-আলোচনা করে কাজ শুরু করব। যত দ্রুত সম্ভব ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত করে প্রশাসনে প্রতিবেদন জমা দেয়া হবে। দেশরত্ন শেখ হাসিনা হলের ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে জরুরি ভিত্তিতে সাত কর্মদিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে।’
একই ঘটনায় হল প্রশাসন চার সদস্যের তদন্ত কমিটি করে। ৭ দিনের মধ্যে এ কমিটির সদস্যদের প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে। চূড়ান্ত প্রতিবেদনের ওপর ভিত্তি করে পরবর্তী ব্যবস্থা নেবে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
খুলনা গেজেট/ বি এম এস