অবৈধভাবে সাগর পাড়ি দিয়ে ইতালি যাওয়ার পথে মাদারীপুর জেলার এক তরুণের মৃত্যু হয়েছে। ঝোড়ো বাতাসে তিউনিসিয়ার ভূমধ্যসাগরে থাকা অবস্থায় প্রচণ্ড ঠাণ্ডায় মারা যান মাদারীপুরের তরুণ জয় তালুকদার।
জয় তালুকদার সদর উপজেলার পেয়ারপুর ইউনিয়নের বড়াইলবাড়ি গ্রামের প্রেমানন্দ তালুকদারের ছেলে। এ সময় গুরুতর অসুস্থ হয়েছেন একই এলাকার ৬ জন। তারা হলেন- মিন্টু, প্রদীপ, টুটুল, তন্ময়, রিয়াজ ও সবুজ। এখনো তারা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন বলে জানিয়েছেন তাদের স্বজনরা। তাদের অবস্থা আশঙ্কাজনক।
শুক্রবার (২৮ জানুয়ারি) জয়ের মৃত্যুর খবর পান স্বজনেরা। এতে পরিবারে বইছে শোকের মাতম।
জানা গেছে, গত ২২ জানুয়ারি অবৈধভাবে সমুদ্রপথে লিবিয়া হয়ে ইঞ্জিনচালিত নৌকায় ইতালির উদ্দেশে রওনা হন জয়সহ তার গ্রামের বেশ কয়েকজন। তিউনিসিয়ার ভূমধ্যসাগরে গেলে প্রবল ঝোড়ো বাতাসের পর টানা ছয় ঘণ্টা বৃষ্টিপাতের কবলে পড়েন তারা। এ সময় নৌকার চালক দিক হারিয়ে ফেলেন। পরে ইতালির পুলিশকে খবর দিলে তারা এসে সবাইকে উদ্ধার করে। এ সময় অসুস্থ বেশ কয়েকজনকে হাসপাতালে নিয়ে যায় পুলিশ। এর আগেই প্রচণ্ড ঠাণ্ডায় মারা যান জয়।
এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, মাদারীপুর সদর উপজেলার বড়াইলবাড়ী গ্রামের সোনামিয়া খানের ছেলে জামাল খান এলাকার যুবকদের ইতালি নেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে প্রত্যেক পরিবারের কাছ থেকে সাত লাখ টাকা করে নেয়। এ ঘটনার পর জামাল খানের বাড়িতে গিয়ে তার কোনো সন্ধান পাওয়া যায়নি। মামলার পরে এলাকা ছেড়ে গা ঢাকা দেন তিনি। দীর্ঘদিন ধরে তিনি মানবপাচারের সঙ্গে জড়িত বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
পুলিশের একটি সূত্র থেকে জানা যায়, জামাল খানের নামে দেশের বিভিন্ন থানায় কমপক্ষে ১০টি মামলা রয়েছে।
নিহত জয়ের বাবা পলাশ তালুকদার বলেন, ধার-দেনা করে সাত লাখ টাকা দিয়েছি জামালকে। আমার ছেলে মারা গেল অথচ জামাল একটু খোঁজও নিল না।
মাদারীপুর পুলিশ সুপার গোলাম মস্তফা রাসেল জানান, পুলিশ আইনগত ব্যবস্থা নেবে। তবে অধিকাংশ সময় নিহতের পরিবার মামলা করে না। আমরা ক্ষতিগ্রস্তদের সব ধরনের আইনি সহায়তা দেবো।