চুয়াডাঙ্গার সীমান্তবর্তী উপজেলা জীবননগর মনোহরপুর ইটভাটার নির্গত বিষাক্ত ধোয়ায় পার্শ্ববর্তী অনেক আবাদি জমির ফসল পুড়ে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে । ইটভাটার নির্গত বিষাক্ত ধোঁয়ায় কারণে এই কৃষকদের এই ক্ষতি হয়েছে বলে জানিয়েছেন কৃষি কর্মকর্তা। প্রতিবছরই ফসলের ক্ষতি হওয়ায় ফসলি জমি ও পলিটেকনিক স্কুল এন্ড কলেজের নিকট থেকে মা-বাবা ব্রিকস সরিয়ে নিতে ও ফসলের ক্ষতির দাবীতে উপজেলা প্রশাসন ও কৃষি কর্মকর্তার নিকট আবেদন করেছেন ভুক্তভোগী কৃষক ।
উপজেলার মনোহরপুর ইউনিয়নের মনোহরপুর গ্রামের মা-বাবা ইটভাটায় ইট পোড়ানোর সময় ভাটার নির্গত বিষাক্ত ধোঁয়া বাতাসের কারণে প্রবাহিত হওয়ায় কৃষকের অনেক আবাদি জমির ধান,পটল,পুইশাক, কলা,পেয়ারা ও আমবাগানের ব্যাপক ক্ষতি হয়। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী কৃষক ও তাঁদের পরিবারের সদস্যরা আবাদি জমির ফসলের ক্ষতিপূরণের দাবিতে উপজেলা নির্বাহী অফিসার, কৃষি কর্মকর্তা ও বনবিভাগের নিকট আবেদন করেছেন।
স্থানীয় কৃষক ওবাইদুর রহমান বলেন, আমাদের আবাদি জমির পাশে ইট ভাটার কারণে বরাবরই আমরা ক্ষতিগ্রস্ত হই। এবারে আমি প্রায় তিন বিঘা জমিতে ধান ও পাট চাষ করেছি। কিন্তু ভাটার নির্গত বিষাক্ত ধোঁয়া ও ছাইয়ের কারণে আমার সব ফসল জমিতেই নষ্ট হয়ে যাচ্ছে । এছাড়াও আমাদের এলাকার ভুট্টা,কলা,লাউ,পুইশাক, আম বাগানসহ সকল ফসলের ক্ষতি হয়েছে।
এ নিয়ে ভুক্তভোগী কৃষক মনোহরপুর গ্রামের ফজলুল হক মিলন বলেন, আমি ৩ একর জমি বর্গা নিয়ে পেয়ারা বাগান করেছি। পেয়ারা বাগানে ফুল ফল আসতে শুরু করেছে।মা- বাবা ইটভাটার বিষাক্ত এসব ধোঁয়া ও ছাই পেয়ারা গাছের ফুল ফল এবং গাছের পাতা নষ্ট হয়ে গেছে। এখন আমি কি করব! আমার স্বপ্ন খেতেই পুড়ে গেল। শুধু আমি নই এই এলাকার শতাধিক কৃষকের স্বপ্নের ফসল এই ভাটার গ্যাসে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে।
এ ছাড়া কৃষক শিমুল, কৃষক আবু বক্কর সিদ্দিক, কৃষক ফজলু, কৃষক সাজিবুলসহ অনেক কৃষকেরই ফসলের ক্ষতি হয়েছে। এই কৃষকের দাবি দ্রুত পুড়ে যাওয়া ফসলের ক্ষতিপূরণ ও পরবর্তীতে এমনটা যেন আর না ঘটে তার স্থায়ী সমাধান করা হোক এবং যে ক্ষতি সাধিত হয়েছে তা কৃষকদের দিয়ে দেওয়া হোক এমনটি মনে করেন ভুক্তভোগী কৃষক।
জমির ধান পুড়ে যাওয়ার বিষয়ে ‘মা-বাবা ব্রীকস’ ভাটার মালিক শাহাজান বলেন, জমির ফসল ও গাছ বিষাক্ত ধোঁয়া ও ছাইয়ের কারণে পোড়া যেতে পারে। কয়লার আগুনের কার্বনের কারণে পোড়া যায়। আবহাওয়া ও চিবনীতে যেসব গ্যাস বাহির হয় সেগুলার কারণে পোড়া যায়। আমরা কৃষকদের নিয়ে বসে এসব ক্ষতিপূরণ কীভাবে দেওয়া যায়, সে বিষয়ে কথা বলার চেষ্টা করতেছি।
এ নিয়ে জীবননগর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শিরিন শারমিন বলেন, ইট ভাটার নির্গত বিষাক্ত ধোঁয়ার কারণে ফসলের ক্ষতি হয়। আমরা একটা অভিযোগ পেয়েছি । অভিযোগের বিষয়টি যাচাই-বাছাই করে আমরা মা-বাবা ব্রিকসের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করবো। আমরা কৃষকদের পাশে আছি।
এ বিষয়ে জীবননগর উপজেলা নির্বাহী অফিসার আরিফুল ইসলাম বলেন, মা- বাবা ইট ভাটার নির্গত বিষাক্ত ধোঁয়া ও ছাইয়ের কারণে ফসলের ক্ষতি হয়েছে এই বিষয়ে মনোহরপুর গ্রামের কৃষকদের পক্ষ থেকে একটা অভিযোগ পেয়েছি। ‘ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের ক্ষতি পূরণের ব্যবস্থা করা হবে। ভাটাটি অবৈধ হলে ঐ ইট ভাটার বিরুদ্ধেও আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
খুলনা গেজেট/ টি আই