খুলনা, বাংলাদেশ | ২৯ কার্তিক, ১৪৩১ | ১৪ নভেম্বর, ২০২৪

Breaking News

  চার উপদেষ্টার আশ্বাসে ভোর ৪টায় হাসপাতালে ফিরলেন আহতরা

ইউল্যাবের সেই ছাত্রীর এক বন্ধুও মারা গেছে

গেজেট ডেস্ক

চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাজধানীতে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্রী রোববার মারা গেছেন। পরিবারের অভিযোগ মৃত্যুর আগে তাকে ধর্ষণ করা হয়েছিল। এতে থানায় যে মামলা হয়েছিল সেখানে আরাফাত নামে ছাত্রীর এক বন্ধুর নাম ছিল। পুলিশ বলছে, মামলার আসামি আরাফাতেরও মৃত্যু হয়েছে।

পুলিশের ধারণা, অতিরিক্ত মদ্যপান বা মদে বিষক্রিয়ার কারণে এমনটি হতে পারে। সোমবার মধ্যরাতে আলোচিত এই ঘটনা নিয়ে সংবাদ সম্মেলন করেন তেজগাঁও বিভাগের উপ-কমিশনার (ডিসি) হারুন অর রশিদ। সেখানেই তিনি এসব তথ্য জানান। এ ঘটনায় আরেক যুবককে খুঁজছে পুলিশ। তার নাম-পরিচয় এখনও জানতে পারেনি তারা।

ইউল্যাবের ওই ছাত্রীর মৃত্যুর পর যেকটি নাম ঘুরে ফিরে এসেছে তার মধ্যে রয়েছে- ওই ছাত্রীর বন্ধু মর্তুজা রায়হান চৌধুরী, নুহাত আলম তাফসির, আরাফাত ও নেহা। এদের মধ্যে মর্তুজা ও নুহাতকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

ডিসি হারুন বলেন, আমরা শুনেছি নেহার বন্ধু বিমানবন্দর থেকে মদ এনে উত্তরার ব্যাম্বুসুট রেস্টুরেন্টে খেয়েছে। আমরা সেই ছেলের নাম-পরিচয় এখনও পাইনি। তাকে খোঁজা হচ্ছে। সেই মদ্যপানের কারণেই কিছু হয়েছে কি-না বা মদে বিষক্রিয়া হয়েছে কি-না তা আমরা তদন্ত করছি। এছাড়াও উত্তরার যে রেস্টুরেন্ট থেকে এই মদ্যপান করা হয়েছিল, তাদের লাইসেন্স আছে কি-না তা তদন্ত করা হচ্ছে।

ইউল্যাবের ছাত্রীর মৃত্যুর বিষয়ে তিনি বলেন, ওই তরুণীর ভিসেরা নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে, পাশাপাশি গ্রেপ্তার দুই আসামিকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। এই দুই মিলে তদন্তে প্রাথমিকভাবে আমাদের মনে হয়েছে, অতিরিক্ত মদ্যপান, মদে বিষক্রিয়া অথবা বেশি মদ পান করিয়ে ধর্ষণের ঘটনাও ঘটতে পারে।

ডিসি বলেন, এ ঘটনায় আরাফাত নামের অন্যতম আসামি একটি হাসপাতালে মারা গেছেন। এছাড়াও নেহা নামের আরেক বান্ধবী অসুস্থ হয়েছিলেন। চিকিৎসা শেষে তিনি বাসায় ফিরেছেন।

ইউল্যাবের ওই ছাত্রীর মৃত্যুর ঘটনাটি জানা যায় রোববার রাতে; যদিও তিনি মারা যান রোববার সকালে। রাতেই এই ঘটনায় একটি মামলা দায়ের হয় মোহাম্মদপুর থানায়। সেখানে ওই তরুণীকে মদ্যপান করিয়ে ধর্ষণ ও হত্যার কথা বলা হয়েছে। এতে সহযোগী হিসেবে ৪ জনের কথা বলা হয়।

মোহাম্মদপুর থানার ওসি রোববার রাতে বলেছিলেন, তরুণীর মৃত্যুর কারণ এখনও নিশ্চিত করে বলা যাচ্ছে না। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন পেলে বিস্তারিত বলা যাবে। ময়নাতদন্তের জন্য নিহতের মরদেহ শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে রাখা আছে।

৫ আসামির মধ্যে ওই তরুণীর বন্ধু মর্তুজা রায়হান চৌধুরীকে (২১) ধর্ষণকারী হিসেবে উল্লেখ করা হয়। অন্য চার আসামির মধ্যে তিন জন- নুহাত আলম তাফসির (২১), আরাফাত (২৮) ও নেহা (২৫)। আরেকজনের নাম জানা যায়নি। মামলায় অজ্ঞাত হিসেবে তাকে উল্লেখ করা হয়েছে।

মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, গত ২৮ জানুয়ারি বিকেল ৪টায় মর্তুজা রায়হান ওই তরুণীকে নিয়ে মিরপুর থেকে আসামি আরাফাতের বাসায় যান। আরাফাতের বাসায় স্কুটার রেখে আরাফাত, ওই তরুণী ও রায়হান একসাথে উবারে করে উত্তরা ৩ নম্বর সেক্টরের ব্যাম্বুসুট রেস্টুরেন্টে যান। সেখানে আগে থেকেই আরেক আসামি নেহা এবং একজন সহপাঠী (তরুণ) উপস্থিত ছিলেন। সেখানে আসামিরা ওই তরুণীকে জোর করে ‘অধিক মাত্রায়’ মদপান করান। মদ্যপানের একপর্যায়ে তরুণী অসুস্থ বোধ করলে রায়হান তাকে মোহাম্মদপুরে তার এক বান্ধবীর বাসায় পৌঁছে দেয়ার কথা বলে নুহাত নামে একজনের বাসায় নিয়ে যান। সেখানে তরুণীকে একটি রুমে নিয়ে ধর্ষণ করেন রায়হান। এ সময় রায়হানের বন্ধুরাও রুমে ছিলেন। তাদের চোখের সামনেই ধর্ষণ করা হয়।

ধর্ষণের পর রাতে ওই তরুণী অসুস্থ হয়ে বমি করলে রায়হান তার আরেক বন্ধু অসিম খান কোকোকে ফোন দেন। সেই বন্ধু পরদিন এসে ওই তরুণীকে প্রথমে ইবনে সিনা ও পরে আনোয়ার খান মডার্ন মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেন। দুই দিন লাইফ সাপোর্টে থাকার পর রোববার তরুণী মারা যান।

খুলনা গেজেট/এনএম




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!