ইউক্রেনে যুদ্ধের এক মাসে রাশিয়ার ৭ থেকে ১৫ হাজারের বেশি সৈন্য নিহত হয়েছে বলে ধারণা করছে পশ্চিমা সামরিক জোট ন্যাটো। বুধবার জোটের জ্যেষ্ঠ একজন কর্মকর্তা মার্কিন বার্তাসংস্থা এপিকে রুশ সৈন্যদের প্রাণহানির এই তথ্য জানিয়েছেন।
তিনি বলেছেন, ইউক্রেনে লড়াইয়ে রাশিয়ার সামরিক বাহিনীর ৩০ হাজার থেকে ৪০ হাজার সৈন্য নিহত অথবা আহত হয়েছেন।
যদিও গত ২ মার্চ একবার পরিসংখ্যান প্রকাশ করে রাশিয়া বলেছে, ইউক্রেনে অভিযানে যাওয়া রুশ সামরিক বাহিনীর ৪৯৮ সদস্য নিহত হয়েছেন। এরপর ইউক্রেন যুদ্ধে রুশ সৈন্যদের হতাহতের ব্যাপারে আর কোনো পরিসংখ্যান প্রকাশ করেনি মস্কো।
এপি বলছে, ইউক্রেনে মাত্র এক মাসের লড়াইয়ে রাশিয়া ১৫ হাজার সৈন্য হারালেও আফগানিস্তান যুদ্ধে একই সংখ্যক রুশ সৈন্যের প্রাণ গেছে প্রায় ১০ বছরে। রাশিয়ার সৈন্য হতাহতের ব্যাপারে ন্যাটোর এই অনুমান ইউক্রেনীয় কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে করা হয়েছে বলে জোটের ওই কর্মকর্তা জানিয়েছেন।
একই যুদ্ধে ইউক্রেনের কত সৈন্য হতাহত হয়েছে সে বিষয়ে খুব কমই তথ্য প্রকাশ করছে কিয়েভ। এমনকি পশ্চিমারাও ইউক্রেনীয় সৈন্যদের হতাহতের ব্যাপারে কোনো ধারণার কথা জানায়নি।
তবে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি প্রায় দুই সপ্তাহ আগে একবার বলেছিলেন, রাশিয়ার সৈন্যদের বিরুদ্ধে পাল্টা প্রতিরোধ গড়ে তোলার সময় ইউক্রেনের প্রায় এক হাজার ৩০০ সৈন্য নিহত হয়েছেন।
গত ২৪ ফেব্রুয়ারি রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন দক্ষিণাঞ্চলীয় প্রতিবেশি এই দেশটিতে সামরিক অভিযান শুরুর নির্দেশ দেন। ইউক্রেনকে নব্য নাৎসিমুক্ত এবং কট্টর জাতীয়তাবাদীদের হাত থেকে রক্ষার লক্ষ্যে রাশিয়ার এই অভিযানের এক মাস হলেও সংকট সমাধানের লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না।
ইউক্রেনের বিভিন্ন শহরে ব্যাপক গোলাবর্ষণ এবং ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করছে রাশিয়ার সৈন্যরা। এতে বেসামরিক হাজার হাজার মানুষের প্রাণহানি এবং লাখ লাখ মানুষ অবরুদ্ধ হয়ে পড়েছেন।
রুশ সৈন্যরা চারদিক থেকে ঘিরে গোলাবর্ষণ অব্যাহত রাখায় দেশটির দক্ষিণাঞ্চলীয় মারিউপোল শহরে ভয়াবহ মানবিক সংকট তৈরি হয়েছে। মারিউপোলের রাস্তায় রাস্তায় মানুষের লাশ পড়ে থাকতে দেখা গেছে। শহরটিতে খাবার, পানি ও ওষুধের তীব্র সংকটের মুখে মরতে বসেছেন হাজার হাজার মানুষ। রাশিয়ার অব্যাহত হামলায় ইউক্রেনে এখন পর্যন্ত এক কোটিরও বেশি মানুষ গৃহহীন হয়েছেন।
খুলনা গেজেট/ এস আই