পূর্ব ইউরোপের দেশ ইউক্রেনে সম্ভাব্য যুদ্ধাপরাধের তদন্ত শুরু হচ্ছে। আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের (আইসিসি) প্রসিকিউটর করিম এ এ খান এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন। বৃহস্পতিবার (৩ মার্চ) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আলজাজিরা।
প্রসিকিউটর করিম এ এ খান জানিয়েছেন, আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত (আইসিসি) ইউক্রেনে রুশ কার্যকলাপের তদন্ত শুরু করছে। এক বিবৃতিতে তিনি বলেন, ‘আমি কিছুক্ষণ আগে আইসিসি প্রেসিডেন্সিকে অবিলম্বে পরিস্থিতির সক্রিয় তদন্তের বিষয়ে এগিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্তের কথা অবহিত করেছি। প্রমাণ সংগ্রহে আমাদের কাজ এখন শুরু হচ্ছে।’
তিনি আরও বলেন, আইসিসি মূলত সংস্থার মূল লক্ষ্যে কাজ করবে, যেখানে বলা হয়েছে আদালতের এখতিয়ারের মধ্যে থাকা অপরাধের জন্য জবাবদিহি নিশ্চিত করতে হবে। এক টুইট বার্তায় করিম খান বলেন, ‘৩৯টি দেশের রেফারেল পাওয়ার পর ইউক্রেনে আনুষ্ঠানিকভাবে সক্রিয় তদন্ত শুরু হচ্ছে।’
এর আগে গত সোমবার তিনি জানান, ইউক্রেনে যুদ্ধপরাধের অভিযোগের জন্য আদালতের অনুমোদন চাইবেন তিনি। তিনি বলেছিলেন, ‘প্রসিকিউটরের কার্যালয় যেকোনো ব্যক্তির মাধ্যমে ইউক্রেনের ভূখণ্ডের যেকোনো অংশে যুদ্ধপরাধ, মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ বা গণহত্যার অতীত ও বর্তমান অভিযোগের প্রমাণ সংগ্রহ করা শুরু করবে।’
সেসময় তিনি আরও জানান, তদন্তে তারা ইউক্রেনের বর্তমান লড়াই এবং ২০১৪ সালে দেশটির ওপর প্রথম রুশ আগ্রাসনের সময় ইউক্রেনে কোনো যুদ্ধাপরাধ সংগঠিত হয়েছে কি না সেটি খতিয়ে দেখা হবে।
উল্লেখ্য, গত ২৪ ফেব্রুয়ারি থেকে ইউক্রেনে লাগাতার হামলা চালাচ্ছে রাশিয়া। অন্য দেশগুলো যেন এই ব্যাপারে হস্তক্ষেপ না করতে হুঁশিয়ারিও দিয়েছেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। নাক গলালে হাতে-নাতে তার ফল পাবে বলেও হুমকি দিয়েছেন রুশ প্রেসিডেন্ট।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর এবারই প্রথম ইউরোপের প্রথম দেশ হিসাবে রাশিয়ার সশস্ত্র বাহিনী স্থল, আকাশ এবং সমুদ্রপথে ইউক্রেনে সবচেয়ে বড় এই হামলা শুরু করে। একসঙ্গে তিন দিক দিয়ে হওয়া এই হামলায় ইউক্রেনের বিভিন্ন শহরে রাশিয়ার ক্ষেপণাস্ত্র পড়েছে বৃষ্টির মতো।
এছাড়া ইউক্রেনের ওপর ভয়ঙ্কর ক্লাস্টার বোমা এবং ভ্যাকুয়াম বোমা ব্যবহার করার অভিযোগ উঠেছে রাশিয়ার বিরুদ্ধে। এ নিয়ে ইতোমধ্যেই সরব হয়েছে একাধিক মানবাধিকার সংগঠন।
একইসঙ্গে ইউক্রেনের রাষ্ট্রদূত ওকসানা মারাকারোভাও রাশিয়ার বিরুদ্ধে ক্লাস্টার বোমা এবং ভ্যাকুয়াম বোমা ব্যবহার করার অভিযোগ তুলেছেন। এখন যদি সত্যিই রাশিয়া ক্লাস্টার বোমা এবং ভ্যাকুয়াম বোমা ইউক্রেনের ওপর নিক্ষেপ করে থাকে তবে তা হবে সম্ভবত যুদ্ধাপরাধ।
খুলনা গেজেট/ এস আই