খুলনা, বাংলাদেশ | ২ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ | ১৭ নভেম্বর, ২০২৪

Breaking News

  দেশ টিভির ব্যবস্থাপনা পরিচালক গ্রেপ্তার

ইউক্রেন দাবি মানলেই হামলা বন্ধ হবে, এরদোয়ানকে পুতিন

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

ইউক্রেনে সামরিক অভিযান বন্ধ করতে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়্যেপ এরদোয়ান। পাশাপাশি ইউক্রেনের প্রেসিডেন্টের সঙ্গে বৈঠক করতে পুতিনকে পরামর্শও দিয়েছেন তিনি।

তুরস্কের প্রেসিডেন্টের কার্যালয়ের মুখপাত্র ইব্রাহিম কালিন এক সংবাদ সম্মেলনে এই তথ্য জানিয়েছেন। রোববার রাজধানী আঙ্কারায় আয়োজিত ওই সংবাদ সম্মেলনে কালিন বলেন, ‘রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে টেলিফোন করেছেন আমাদের প্রেসিডেন্ট। টেলিফোনে তিনি ইউক্রেনে রুশ সামরিক অভিযান বন্ধের আহ্বান জানিয়েছেন এবং বলেছেন যত দ্রুত সম্ভব রাশিয়ার উচিত যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করা এবং কূটনৈতিক সংলাপকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার সুযোগ সৃষ্টি করা।’

‘ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদোমির জেলেনস্কির সঙ্গে বৈঠকের পরামর্শও রুশ প্রেসিডেন্টকে দিয়েছেন আমাদের প্রেসিডেন্ট। আরও বলেছেন, দুই দেশের শীর্ষ পর্যায়ের এই বৈঠকের আয়োজন করতে তুরস্ক আগ্রহী।’

এদিকে, শনিবার এক সংবাদ সম্মেলনে তুরস্কের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মেভলুত কাভুসোগলু জানিয়েছিলেন, আগামী ১১ মার্চ থেকে ১৩ মার্চ তুরস্কভিত্তিক পররাষ্ট্রনীতি গবেষণা সংস্থা আনতালিয়া ডিপ্লোম্যাসি ফোরামের সম্মেলন হবে। সেখানে বিভিন্ন বৈদেশিক প্রতিনিধির মতো রাশিয়া ও ইউক্রেনের প্রতিনিধিও উপস্থিত থাকবেন বলে আশা করছেন তিনি।

ইতোমধ্যে দুই দেশের সরকার বরাবর সম্মেলনের নিমন্ত্রণপত্র পাঠানো হয়েছে এবং মস্কো-কিয়েভ তাদের প্রতিনিধি পাঠাতে সম্মত হয়েছে বলেও শনিবারের সংবাদ সম্মেলনে উল্লেখ করেছিলেন কাভুসোগলু। রাশিয়ার পক্ষে দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই লাভরভের উপস্থিত থাকার সম্ভাবনা আছে।

রোববারের সংবাদ সম্মেলনে সেই প্রসঙ্গ টেনে ইব্রাহিম কালিন বলেন, ‘আমরা বিশ্বাস করি, সম্মেলনে ‍দুই দেশের প্রতিনিধিদের বৈঠকের একটি ইতিবাচক প্রভাব পড়বে, বিশেষ করে উভয় দেশের বর্তমান পরিস্থিতিতে। এমনকি সেটি পুতিন ও জেলেনস্কির মধ্যে বৈঠকের পরিবেশ সৃষ্টিতেও ইতিবাচক ভূমিকা রাখতে পারে।’

গত ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে সামরিক অভিযান শুরুর পর যুক্তরাষ্ট্র ও তার নেতৃত্বাধীন জোট ন্যাটোর সদস্যরাষ্ট্রগুলো যখন রাশিয়ার বিরুদ্ধে একের পর এক নিষেধাজ্ঞা জারি শুরু করে। সে সময় এরদোয়ান তার বিরোধিতা করেছিলেন।

তিনি বলেছিলেন, রাশিয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা অর্থহীন, কারণ রাশিয়া ন্যাটোকে হুমকি মনে করে।

ইউক্রেন ইস্যুতে আন্তর্জাতিক রাজনীতিতে তুরস্কের অবস্থান বেশ স্বতন্ত্র। কারণ, এই দেশটি একই সঙ্গে ইউক্রেন ও রাশিয়া— উভয়েরই ঘনিষ্ঠ মিত্র হিসেবে পরিচিত। পাশাপাশি, যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন সামরিক জোট ন্যাটোর অন্যতম সদস্য তুরস্ক।

জ্বালানি সম্পদের জন্য রাশিয়ার ওপর ব্যাপকভাবে নির্ভরশীল তুরস্ক। ২০১৯ সালে রাশিয়ার কাছ থেকে ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা প্রযুক্তি কেনে তুরষ্ক, যা দুই দেশের বন্ধুত্বপূর্ণ বাণিজ্যিক সম্পর্ককে আরও এক ধাপ এগিয়ে নিয়ে যায়।

তবে সম্প্রতি তুরস্কের ওপর কিছুটা ক্ষুব্ধ মস্কো। কারণ জ্বালানি সম্পদ, বিশেষ করে গ্যাসের জন্য রাশিয়ার ওপর ব্যাপকভাবে নির্ভরশীল এই দেশটি ইউক্রেনের সঙ্গেও বাণিজ্যিক ও কূটনৈতিক সম্পর্ক ধরে রাখতে আগ্রহী।

বার্তাসংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদন অনুযায়ী, গত বছর তুরস্কে মোট ব্যবহৃত জ্বালানি গ্যাসের ৪৬ শতাংশই এসেছে রাশিয়া থেকে। অন্যদিকে, একই বছর ইউক্রেনের কাছে অত্যাধুনিক প্রযুক্তির কিছু সামরিক ড্রোন বিক্রি করেছে তুরস্ক এবং প্রতিশ্রুতি দিয়েছে প্রয়োজনে আরও ড্রোন সরবরাহ করা হবে। এই ব্যাপারটিই ক্ষুব্ধ করেছে মস্কোকে।

গত ডিসেম্বর থেকে ইউক্রেন সীমান্তে যখন সেনা মোতায়েন শুরু করে রাশিয়া, ন্যাটোর অন্যান্য সদস্যরাষ্ট্রের মতো তুরস্কও তার সমালোচনা করেছিল। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে তাল মিলিয়ে ন্যাটোর অন্যান্য সদস্যরাষ্ট্রগুলো রাশিয়ার বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞার হুঁশিয়ারি দেওয়া শুরু করার পর থেকেই রহস্যজনকভাবে নিশ্চুপ হয়ে যায় দেশটি।

রোববারের সংবাদ সম্মেলনে কালিন বলেন, ‘রাশিয়া-ইউক্রেন উভয়ই আমাদের কাছে গুরুত্বপূর্ণ এবং আমরা কাউকেই হারাতে চাই না।’

 

খুলনা গেজেট/এএ




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!