খুলনা, বাংলাদেশ | ২রা আষাঢ়, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ | ১৬ই জুন, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

Breaking News

  ড. ইউনূস ও তারেক রহমানের বৈঠকের পর রাজনীতিতে গুণগত পরিবর্তন হয়েছে : ড. মঈন খান
  শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী কামালের বিরুদ্ধে পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের নির্দেশ
  কক্সবাজারের রামুতে বাস-কাভার্ডভ্যানের সংঘর্ষে নিহত ৩, আহত ১০
স্বেচ্ছাশ্রমে মেরামতের পর দুপুরে উপছে পড়া জোয়ার

আশাশুনির খোলপেটুয়া নদীর দয়ারঘাটের বেড়িবাঁধে ফের ভাঙ্গন

সাতক্ষীরা প্রতিনিধি

সাতক্ষীরার আশাশুনি উপজেলা সদরের দয়ারঘাট এলাকায় ভেঙ্গে যাওয়া পাউবো’র বেড়িবাঁধ স্বেচ্ছাশ্রমে মেরামতের পর বুধবার (৩১ মার্চ) দুপুরের খোলপেটুয়া নদীর প্রবল জোয়ারের তোড়ে তা আবারও ভেঙ্গে গেছে। এর আগে মঙ্গলবার দুপুরে এই বাঁধ ভেঙ্গে যায়। এতে আশাশুনি উপজেলা সদরের চারটি গ্রাম প্লাবিত হয়ে পড়ে।

স্থানীয় বাসিন্দা মঈনুল হোসেন জানান, পাউবো’র বিকল্প রিং বাঁধ ভেঙ্গে পানিবন্দী হয়ে উপজেলা সদর ইউনিয়নের দয়ারঘাট, দক্ষিন জেলেখালী, জেলেখালীসহ আশাশুনি সদরের ইউনিয়নের চারটি গ্রামের চার শতাধিক পরিবার মানবেতর জীবন যাপন করছে। পানিতে ভেসে গেছে দুই শতাধিক মৎস্য ঘের ও শতাধিক বিঘা ফসলি জমি। প্রানি প্রবাহিত হচ্ছে সেখানকার প্রধান প্রধান সড়কের উপর দিয়ে। অবর্ণনীয় দুর্ভোগের মধ্যে পড়েছে প্লাবিত এলাকার মানুষ।

তিনি আরো বলেন, আম্পানে দয়ারঘাট ও জেলেখালী পয়েন্টে পাউবো’র বেড়িবাঁধ ভেঙ্গে যাওয়ার পর তাৎক্ষনিক ভাঙ্গন পয়েন্টে বিকল্প রিং বাঁধ দিয়ে কোন রকম পানি আটকানো হয়। এই বাঁধ মেরামতে প্রয়োজনীয় বরাদ্দও দেয়া হয়। কিন্তু বরাদ্দের পরও মূল বাঁধে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান কাজ না করায় আবারও ভাঙ্গনের কবলে পড়তে হয়েছে বলে দাবী করেন তিনি।

স্থানীয় ক্ষতিগ্রস্ত গ্রামবাসীর অভিযোগ, ঘূর্নিঝড় আম্পানের ক্ষতি পুষিয়ে উঠে ঘুরে দাঁড়ানোর আগেই পানি উন্নয়ন বোর্ডের উদাসীনতার কারনে আবারও প্লাবিত হলো আশাশুনি উপজেলা সদরের চার গ্রাম। যদিও পানি উন্নয়ন বোর্ড কর্তৃপক্ষ বলছেন, স্বেচ্ছাশ্রমে এলাকাবাসির মাধ্যমে দ্রুতই মেরামত করা হবে এই বিকল্প রিং বাঁধ।

এর আগে মঙ্গলবার দুপুরে সুপার মুন পূর্নিমার প্রভাবে খোলপেটুয়া নদীর পানি স্বাভাবিকের চেয়ে বৃদ্ধি পাওয়ায় আশাশুনি উপজেলা সদরের দয়ারঘাট এলাকায় দেয়া বিকল্প রিংবাঁধ উপচে পানি ভিতরে ঢুকতে শুরু করে। এক পর্যায় ওই রিং বাঁধের পাঁচটি পয়েন্টে ভেঙ্গে প্রবল বেগে নদীর পানি ঢুকতে থাকে লোকালয়ে। মুহুর্তের মধ্যে নদীর পানিতে ভেসে যায় আশাশুনিবাসির প্রধান আয়ের উৎস মৎস্য ঘের। তলিয়ে গেছে ক্ষেতের ফসল। পনিবন্দি হয়ে পড়ে চার গ্রামের প্রায় চারশ” পরিবার। স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানের নেতৃত্বে বুধবার সকাল থেকে স্বোচ্ছাশ্রমে বাঁধ মেরামতের কাজ শুরু করে কোন রকমে পানি আটকানো সম্ভব হলেও দুপুরের জোয়ারের তা আবারও ভেঙ্গে যায়। ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাবাসির একটাই দাবি, ত্রান নয়, টেকসই বেড়িবাঁধ চাই।

আশাশুনি সদর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান স.ম সেলিম রেজা মিলন জানান, বার বার বলার পরও দয়ারঘাটের দুটি পয়েন্টে ৯ মাসেও বাঁধ নির্মান করা সম্ভব হয়নি। আর এজন্য পানি উন্নয়ন বোর্ডের উদাসীনতাকে দায়ি করেন এই জন প্রতিনিধি।

সাতক্ষীরা পানি উন্নয়ন বোর্ড বিভাগ-২ এর নির্বাহী প্রকৌশলী সুধাংশু কুমার সরকার জানান, স্বেচ্ছাশ্রমে এলাকাবাসির মাধ্যমে দ্রুতই মেরামত করা হবে এই বিকল্প রিং বাঁধ। তিনি আরো জানান, জাইকার জন্য এ বাঁধ মেরামতে দেরী হলেও জরুরী ভিত্তিতে ঠিকাদার নিয়োগ দেয়া হয়েছে। টেকসই বেড়িবাঁধ নির্মাণের জন্য ইতিমধ্যে ১ কোটি ৩৮ লাখ টাকার কাজের টেন্ডার হয়েছে। অচিরেই কাজ শুরু হবে বলে তিনি আরো জানান।

খুলনা গেজেট/কেএম




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!