অস্কার-বাফটা-গ্র্যামি জয়ী সংগীত পরিচালক এ আর রহমান। খুব ছোটবেলায় বাবাকে হারিয়েছেন। এরপর জীবিকার সন্ধানে কাজে নামতে হয়েছে তাকে। সম্প্রতি সেই দিনগুলোরই স্মৃতিচারণ করলেন তিনি।
এ আর রহমানের বাবা আরকে শেখরও একজন জনপ্রিয় মিউজিশিয়ান ছিলেন। দক্ষিণী সিনেমার অনেক নামি নির্মাতার সঙ্গে কাজ করেছেন। এ আর রহমানের বয়স যখন ৯ বছর তখন তিনি মারা যান। হঠাৎ বাবার মৃত্যুর কারণে তাদের পরিবারে নেমে আসে দুর্যোগ।
এ আর রহমানের ভাষায়, ‘আমার ছেলেবেলা আর দশজনের মতো ছিল না। অনেকটাই একা একা কাটাতাম। বাবার চিকিৎসার জন্য বেশিভাগ সময় হাসপাতালেই থাকতে হতো। বয়স যখন ১১ অথবা ১২ তখন কাজ শুরু করি। খেলাধুলা করার সুযোগ পাইনি। তবে যতটুকু সময় পেতাম সংগীত নিয়েই থাকতাম। একদিক থেকে এটা আমার জন্য আশীর্বাদ ছিল।’
বাবা যখন অসুস্থ হন এ আর রহমান তখন চতুর্থ শ্রেণীর ছাত্র। হঠাৎ একদিন বাবা অসুস্থ বলে তাকে স্কুল থেকে দ্রুত বাসায় নিয়ে আসা হয়। এরপর চার বছর অসুস্থতার সঙ্গে যুদ্ধ করে ১৯৭৬ সালে তার বাবার মৃত্যু হয়। বরণ্য এই গায়ক বলেন, ‘আমি তাকে পোড়ানোর দিনটি আজও মনে করতে পারি। তার চিতায় আগুন দেওয়া। আমার বয়স তখন ৯ বছর। এই একটি দৃশ্য আমি ভুলতে পারি না। সেই স্মৃতি আমাকে এখনো তাড়া করে বেড়ায়। তবে এটি আমাকে জীবনের মানে বুঝতেও সাহায্য করে, কারণ সবকিছু খুব অল্প বয়সেই দেখেছি। ফলে এমন কিছু পেয়েছি যা অন্য সাধারণ বাচ্চারা পায়নি।’
বাবা মারা যাওয়ার পর পুরো পরিবারের দায়িত্ব আসে ছোট্ট এ আর রহমানের কাঁধে। পাঁচ সদস্যের পরিবারের খাবার জোগাতে স্কুল ছেড়ে কাজে নেমে পড়েন তিনি। বাবার যন্ত্র ভাড়া দিতেন। এরপর পিয়ানো বাজানোর কাজ করেন। এতে তাকে সাহায্য করেন বাবার বন্ধু প্রয়াত সুরকার এ.কে অর্জুনা। শুরুতে তার আয় ছিল মাত্র ৫০ রুপি। এরপর ধীরে ধীরে নিজের ক্যারিয়ার গড়তে শুরু করেন। বিজ্ঞাপনে জিঙ্গেল তৈরি করে পরিচিতি পান। ‘রোজা’ সিনেমার গানের মাধ্যমে রুপালি জগতে নাম লেখান। এরপরের ইতিহাসটা সবার জানা। এখন বিশ্ব দরবারে জনপ্রিয় একটি নাম এ আর রহমান।
খুলনা গেজেট/ আ হ আ