শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি বলেছেন, চাঁদপুর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য জমি অধিগ্রহণের ক্ষেত্রে কোনো দুর্নীতি হয়নি। এখানে কারো দুর্নীতির অভিপ্রায় থাকতে পারে। তবে এর সঙ্গে আমার কিংবা আমার পরিবারের কেউ জড়িত নয়।
আজ বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় নিজের সরকারি বাসভবনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে চাঁদপুর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের জমি অধিগ্রহণের ক্ষেত্রে তার পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে নানা অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগের জবাবে শিক্ষামন্ত্রী এসব কথা বলেন। এসময় তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের জমি অধিগ্রহণের বিষয়ে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন।
মন্ত্রী বলেন, চাঁদপুরে যখনই কোনো উন্নয়নকাজে হাত দেওয়া হয় একটি মহল এর প্রবল বিরোধিতা করে থাকে। তবে কোনো ষড়যন্ত্র কিংবা চক্রান্ত এ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠায় বাধা হবে না। উন্নয়নকাজ ও একাডেমিক কার্যক্রম এগিয়ে যাবে।
শিক্ষামন্ত্রী আরও বলেন, দুর্নীতি তদন্ত ও অনুসন্ধানে সরকারের বেশ কয়েকটি সংস্থা রয়েছে। আমি আশা করবো ওইসব সংস্থা তদন্ত করে প্রকৃত তথ্য বের করবে। দুর্নীতি হয়ে থাকলে যারা জড়িত বলে প্রমাণ পাওয়া যাবে, তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
অভিযোগের বিষয়ে সংবাদ সম্মেলনে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, চাঁদপুর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য যে জমি চিহ্নিত আছে, সেখানে আমার বা আমার পরিবারের কারও কোনো জমি নেই। গত ১৩ বছরে আমার নির্বাচনী এলাকায় অনেক অবকাঠামো হয়েছে, হচ্ছে। আজ পর্যন্ত অধিগ্রহণকৃত জায়গায় আমার বা আমার পরিবারের কারও এক ছটাক জমিও ছিল না। চাঁদপুরে আমার কোনো জমিই নেই।
এক প্রশ্নের জবাবে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, যে জমি অধিগ্রহণ করা হচ্ছে, সেটা আইনসম্মতভাবে অধিগ্রহণ বা প্রাক্কলন হয়েছে কি না, এটা ভূমি মন্ত্রণালয় দেখবে। এটা তাদের কাজ বা সরকারের অন্য কোনো কর্তৃপক্ষ থাকলে তারা দেখবে। সেই জায়গায় যদি জমির মূল্য সঠিক না হয়, তাহলে সে ব্যাপারে যা ব্যবস্থা নেওয়ার সেটাও সরকারই নেবে। সেখানেও আমার কোনো বিষয় নেই। আমার যেটা দেখার দরকার, আমার এলাকায় যে বিশ্ববিদ্যালয়টি স্থাপন করার কথা, সেটি যথাসময়ে স্থাপিত হবে। এটা যেন ভূমি সংক্রান্ত কোনো সমস্যার কারণে ঝুলে না যায়, বিলম্বিত না হয়।
ডা. দীপু মনি বলেন, ‘এর আগে চাঁদপুর মেডিকেল কলেজের জায়গার অধিগ্রহণ নিয়ে এই রকম একটা মহল প্রশ্ন তুলেছিল। যখনই কোনো বড় উন্নয়নমূলক কাজের কথা হয়, তখনই এই জমি ভেঙে যাবে, এটা নষ্ট হবে, এরকম নানান কিছু বলা হয়। এই বলে মেডিকেল কলেজের জমি অধিগ্রহণের কাজটাও দীর্ঘায়িত হচ্ছে। হাইমচরে বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল হওয়ার কথা, সিদ্ধান্ত হয়ে আছে। সেটার জমি অধিগ্রহণ কাজও হচ্ছে ধীরে। তার কারণ একটা মহল কিছুতেই চাইছে না—ওইখানে (চাঁদপুর-৩) আমার মাধ্যমে এই বড় বড় কাজ হোক। সব জায়গায়ই রাজনৈতিক বিরোধিতা থাকে। রাজনৈতিক নানান রকম দ্বন্দ্ব-কলহ থাকে। আমার ওখানেও হয়তো কম-বেশি কিছু আছে।
উল্লেখ্য, ২০১৯ সালের ২৩ ডিসেম্বর ‘চাঁদপুর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় আইন-২০১৯’এর খসড়ার চূড়ান্ত অনুমোদন দেয় মন্ত্রিসভা। সংসদে চাঁদপুর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনে বিল পাস হয় ২০২০ সালের ৯ সেপ্টেম্বর। ১৫ সেপ্টেম্বর সরকারি গেজেটের মধ্য দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের যাত্রা শুরু। ইতোমধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য চাঁদপুর জেলা শহর থেকে চার কিলোমিটার দক্ষিণে চাঁদপুর–হাইমচর উপজেলা সড়কের ঠিক পূর্বপাশে সদর উপজেলার লক্ষ্মীপুর গ্রামে ৬০ একর জায়গা অধিগ্রহণের কাজ চলছে। এই কাজেই দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে।
খুলনা গেজেট/এএ