মোংলা বন্দরে মিথ্যা ঘোষণা দিয়ে আমদানী নিষিদ্ধ পোস্তদানা আটকের ঘটনায় শিপিং এজেন্টসহ দুই আমদানীকারকের বিরুদ্ধে থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে।
রবিবার (১৬ আগস্ট) দুপুরে মোংলা কাস্টমস হাউজ এর সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা মোঃ ইমদাদুল হক বাদী হয়ে কন্টেইনার বোঝাই পণ্য আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান ঢাকার মেসার্স তাজ ট্রডার্স ও চকবাজারের চম্পাতলি লেনের ০৬/১০ এর মেসার্স আয়শা ট্রেডার্স এবং শিপিং এজেন্ট মেসার্স ওসান ট্রেডার্স লিঃ এর বিরুদ্ধে ১৯৭৪ সালের বিশেষ ক্ষমতা আইনের ২৫-(বি)-১ (বি) ধারায় মোংলা থানায় মামলা (নং-১৪) দায়ের করেন।
এ বিষয়ে মোংলা থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ ইকবাল বাহার চৌধুরী জানায়, মোংলা বন্দরে মিথ্যা ঘোষণা দিয়ে বিদেশ থেকে এক পণ্যের পরিবর্তে নিষিদ্ধ অন্য পণ্য আমদানী করার ঘটনায় শিপিং এজেন্টসহ দুই আমদানীকারকের বিরুদ্ধে মামলা করেছে মোংলা কাস্টমস হাউজ। এ মামলার সুত্র ধরে কারা এর সাথে জড়িত এবং আমদানীর সাথে সংশ্লিষ্টদের গ্রেফতার ও ঘটনার মুল রহস্য উধঘাটনের জন্য তদন্তসহ গ্রেফতারে অভিযান শুরু হয়েছে জানিয়েছেন পুলিশের এই কর্মকর্তা।
মোংলা বন্দরের কাষ্টমস হাউজ’র করা মামলার সুত্রে জানা যায়, কন্টেইনারবাহী একটি বিদেশী বাণিজ্যিক জাহাজ ‘এমভি সানভিওর ভিউ’ মালয়েশিয়ার তানজান পিলিপাস বন্দর থেকে ছেড়ে আসে। সিঙ্গাপুরে যাত্রা বিরতির পর এ জাহাজটি গত ৯ আগষ্ট মোংলার বন্দরের জেটিতে কন্টেইনার খালাস শেষ করে চলে যায়। তবে এ জাহাজটি বন্দের নোঙ্গরের আগেই কাস্টমস কর্তৃপক্ষ গোপন সংবাদের ভিত্তিতে জানতে পারে আমদানী নিষিদ্ধ পণ্য এবং মদের চালান ও কন্টেইনারে থাকা পণ্য সিএন্ডএফ ও বন্দর জেটি থেকে অসাধু লোকদের সহায়তায় কন্টেইনার ভেঙ্গে মাদকের কাচামালগুলো সরিয়ে নেয়া হবে। এ খবরের ভিত্তিতে বন্দরে জেটিতে খালাসের পর পরই ওই আমদানীকারকদের আনা ৪টি কন্টেইনার শনাক্ত ও নজরদারীতে রাখে কাস্টমস। ১২ আগস্ট আমদানীকারকসহ সংশ্লিষ্ট সকলকে চিঠির মাধ্যমে কন্টেইনার ৪টি উম্মুক্তভাবে খুলে কাইক পরিক্ষার করার জন্য তাদের জানানো হয়। চিঠির জবাব না পেয়ে পুনরায় চিঠির মাধ্যমে কাস্টমস পরিক্ষা-নিরীক্ষা করে ওই কন্টেইনারে থাকা পন্য খালাসের জন্য জানায় আমদানীকারকদের। কিন্ত চিঠি পাওয়ার পরেও আমদানীকারক প্রতিষ্ঠান এতে কোন কর্নপাত না করায় তাদের সন্দেহ আরো বেড়ে যায়। বৃহস্পতিবার সকাল ১১টায় বন্দর কর্তৃপক্ষ, কাষ্টমস, সিএন্ডএফ এজেন্ট, শিপিং এজেন্ট, চেম্বার অফ কামার্সসহ সংশ্লিস্ট সকলের উপস্থিতিতে বন্দর জেটিতে এ কন্টেইনার খুলে আমদানী নিষিদ্ধ ২ হাজার ৬শ’ ৬৯ টি বস্তায় ৬৮ হাজার ২ শ’ ৬৫ কেজি পোস্তদানা পাওয়া যায়। প্রতি কন্টেইনারে ১৮ মেঃ টন করে চারটি কন্টিনারে মোট ৭২ মেঃ টন পোস্তদানা ছিল। যার আনুমানিক মুল্য ১৮ কোটি টাকা বলে জানায় কাস্টমসের এক কর্মকর্তারা। পরে মোংলা বন্দরে টেনিসবল ও পাটি স্প্রে নামে আনা আমদানী নিষিদ্ধ ৪টি কন্টেইনার বোঝাই পোস্তদানা জব্দ করে মোংলা কাস্টম কর্তৃপক্ষ। আমদানিকারকরা তাদের কাগজপত্রে টেনিসবল ও পাটি স্প্রে’র চালান থাকলেও নিষিদ্ধ পোস্তদানা আমদানী করে তারা।
খুলনা গেজেট / এমএম