ইউক্রেনের ওপর রাশিয়ার হামলার বর্ষপূর্তির ঠিক আগে আবারও পরমাণু অস্ত্র প্রয়োগের প্রচ্ছন্ন হুমকি দিলেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। তিনি বলেছেন, জলে, স্থলে ও অন্তরীক্ষে পরমাণু অস্ত্র বহনকারী ক্ষেপণাস্ত্র কাঠামোকে বাড়তি গুরুত্ব দেওয়া হবে। সেইসঙ্গে চলতি বছরই একাধিক পরমাণু অস্ত্র বহনে সক্ষম সারমাত ইন্টারকন্টিনেন্টাল ব্যালিস্টিক মিসাইল মোতায়েনের ঘোষণাও করেন পুতিন।
রুশ প্রেসিডেন্ট জানান, বড় আকারে আকাশভিত্তিক হাইপারসোনিক কিনজাল সিস্টেম ও পানিভিত্তিক জিরকন হাইপারসোনিক ক্ষেপণাস্ত্রের উৎপাদন চালিয়ে যাওয়া হচ্ছে। বৃহস্পতিবার (২৩ ফেব্রুয়ারি) ‘ডিফেন্ডার অব দ্য ফাদারল্যান্ড’ উপলক্ষ্যে রাশিয়ায় ছুটির সকালে ক্রেমলিন থেকে রাশিয়ার প্রেসিডেন্টের এই বার্তা প্রকাশিত হয়।
উল্লেখ্য, পরমাণু অস্ত্র নিয়ন্ত্রণের লক্ষ্যে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ‘নিউ স্টার্ট’ চুক্তি চলতি সপ্তাহেই বাতিল করেছেন পুতিন।
পরমাণু অস্ত্র ও ক্ষেপণাস্ত্র নিয়ে আস্ফালন সত্ত্বেও ইউক্রেনে ‘বিশেষ সামরিক অভিযানের’ ব্যর্থতা নিয়ে পুতিন প্রকাশ্যে মুখ খোলেন নি। বিশেষ করে যুদ্ধে বিশাল সংখ্যায় রুশ সৈন্য হারানোর বিষয়টি তার মুখে স্থান পাচ্ছে না। তবে সম্ভবত চীন ও ভারতের মতো ‘মিত্র’ দেশের চাপে পড়ে রুশ প্রেসিডেন্ট সরাসরি পরমাণু অস্ত্র প্রয়োগের হুমকি দিচ্ছেন না।
বুধবার জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিয়ো গুতেরেস গত সেপ্টেম্বর মাসে পুতিনের দুটি ভাষণে পরমাণু অস্ত্রের হুমকির তীব্র নিন্দা করেন। ইউক্রেনের ওপর হামলাকেও জাতিসংঘের সনদের পরিপন্থি বলে উল্লেখ করেন তিনি।
ইউক্রেনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী দিমিত্রি কুলেবা বুধবার জাতিসংঘে রাশিয়ার বিরুদ্ধে গণহত্যার অভিযোগ আনেন। শান্তি ফেরানোর লক্ষ্যে তিনি সাধারণ পরিষদে এক প্রস্তাব পেশ করেন। অন্যদিকে জাতিসংঘে রাশিয়ার দূত ভাসিলি নেবেনজিয়া পশ্চিমা বিশ্বের বিরুদ্ধে রাশিয়াকে ধ্বংস করার ষড়যন্ত্রের অভিযোগ করেন। বৃহস্পতিবার জাতিসংঘে জার্মান পররাষ্ট্রমন্ত্রী আনালেনা বেয়ারবকসহ একাধিক নেতা বক্তব্য দিবেন।
পশ্চিমা বিশ্বের কড়া নিষেধাজ্ঞার মুখে পড়ে রাশিয়া চীনের সঙ্গে সখ্য বাড়ানোর চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। বুধবার পুতিন মস্কোয় চীনের শীর্ষ কূটনীতিক ওয়াং ইকে স্বাগত জানান। তিনি জানান, চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংও রাশিয়া সফরে আসছেন। শুক্রবার ইউক্রেনের ওপর হামলার বর্ষপূর্তির দিনে শি এক ‘শান্তি ভাষণ’ দেবেন বলে শোনা যাচ্ছে।
এদিকে ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলে বাখমুত ও অন্যান্য কিছু শহরের ওপর রাশিয়া লাগাতার হামলা চালিয়ে যাচ্ছে বলে ইউক্রেনের সেনাবাহিনী জানিয়েছে। ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি ও প্রাণহানির মুখে রাশিয়ার বাহিনী সামান্য কিছু জমি দখল করতে পেরেছে বলে ইউক্রেন দাবি করছে।
খুলনা গেজেট/কেডি