চলমান আন্দোলনের অংশ হিসেবে সিটি করপোরেশনের নির্বাচনে বিএনপির অংশ নেওয়া উচিত। এতে এই সরকারের অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচন যে কোনোভাবেই সম্ভব না, সেটা প্রমাণ করা সম্ভব হবে। নির্বাচনকালীন নির্দলীয় সরকারের পক্ষে আন্তর্জাতিক সমর্থন ও চাপ আরও জোরদার করা যাবে। তবে বিএনপি আনুষ্ঠানিকভাবে নির্বাচনে না গেলে আমি প্রার্থী হবো না।
খুলনা গেজেটের সঙ্গে একান্ত সাক্ষাতকারে এ সব কথা বলেন খুলনা মহানগর বিএনপির সাবেক সভাপতি ও সাবেক সংসদ সদস্য নজরুল ইসলাম মঞ্জু।
সিটি নির্বাচনের বিষয়ে নিজের মতামতের যৌক্তিকতা ব্যাখ্যা করে নজরুল ইসলাম মঞ্জু বলেন, আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে বিএনপি মানুষের ভোটের অধিকার ও নির্বাচনকালীন সরকার প্রতিষ্ঠার দাবিতে আন্দোলন করছে। ঠিক তার আগ মূহুর্তে ৫ সিটির নির্বাচন অনেক গুরুত্বপূর্ণ। এজন্য যে এই নির্বাচন অংশ নিয়ে বিএনপি বর্তমান সরকার ও নির্বাচন কমিশনের প্রকৃত স্বরুপ উন্মোচন করতে পারতো। আর নূতন করে তাদের ভোট ডাকাতির বিরুদ্ধে চলমান আন্দোলন নতুন প্রাণ শক্তি পেত এবং এর মাধ্যমে দেশে বিদেশে ব্যাপক জনমত গঠন করে সরকারকে জনবিচ্ছিন্ন করা ও সরকারের আন্তর্জাতিক চাপ বৃদ্ধি করে সরকারকে বেকায়দায় ফেলা যেত। সেক্ষেত্রে সিটি নির্বাচনই হত সরকার পতন আন্দোলনের নূতন মাইল ফলক। আমাদের দল সেটি ভেবে দেখতে পারে।
তিনি বলেন, বিগত খুলনা সিটি নির্বাচনে ভোট ডাকাতির মডেল দিয়েই বর্তমান সরকার দেশের সকল নির্বাচনে ভোট ডাকাতি করে সফল হয়েছে। সেক্ষেত্রে বর্তমান সরকারকে ক্ষমতায় রেখে নির্বাচনে না যাবার সিদ্ধান্ত শতভাগ সঠিক। শুধুমাত্র কৌশলগত কারণে সরকারের উপর চাপ সৃষ্টির লক্ষে আন্দোলনের অংশ হিসেবে এই নির্বাচন করা যায় কিনা বিএনপি নির্বাচন টেষ্ট কেস হিসেবে দেখতে পারে। এর আগেও বিএনপি পূর্বের সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করে নির্বাচনে অংশ নিয়েছে। যেহেতু এটি জাতীয় নির্বাচন নয় এবং জাতীয় নির্বাচনের পূর্বে এ নির্বাচনের দিকে আন্তর্জাতিক মহলের দৃষ্টি থাকবে সেক্ষেত্রে সরকার চাপে থাকবে বলে সকলে মনে করছে। এছাড়া নির্বাচন তো জনগনকে নিয়ে ভোটের লড়াই সেকারণে আমরা সরকারকে পরাস্ত করতে এ পথ বেছে নিতে পারি কিনা তা আমাদের ভাবা উচিৎ, এটি একটি নতুন সুযোগ সৃষ্টি করতে পারে সেকারণে আমার ব্যক্তিগত মত আন্দোলন ও নির্বাচন দুটোতেই বিএনপির থাকা উচিত।
ব্যক্তিগতভাবে এই নির্বাচনে যাওয়ার কোনো আগ্রহ আছে কিনা জানতে চাইলে বিএনপির সাবেক এই মেয়র প্রার্থী বলেন, বিএনপি জনপ্রিয় দল। সে দলের একজন জনপ্রিয় প্রার্থী ছিলাম আমি। নির্বাচনে যাওয়ার ব্যাপারে যে আমাদের আগ্রহ নেই, তা না। বিএনপি যদি নির্বাচনে যায়, তাহলে আমি প্রার্থী হতে চাইবো।
আওয়ামী লীগ বলছে, শেষ সময়ে ঘোমটা পড়ে বিএনপি নির্বাচনে আসবে। অনেকে উকিল আবদুস সাত্তারের উদাহরণ দিচ্ছেন। খুলনায় অনেকে আপনাকে ইঙ্গিত করছে। গুঞ্জনের সত্যতা কতোটুকু জানতে চাইলে নজরুল ইসলাম মঞ্জু বলেন, দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনে বিএনপি আমাকে অনেক কিছু দিয়েছে। বিএনপির সঙ্গে বেইমানি করা আমাদের পক্ষে সম্ভব নয়। আমি বিএনপির প্রকাশ্য প্রার্থী হতে চাই, দল নির্বাচনে গেলে প্রার্থী হব। দল আন্দোলন করলে আন্দোলনে…। এভাবে পালিয়ে, লুকিয়ে, দল ছেড়ে কোনো প্রক্রিয়ার মধ্যে যেতে চাই না। বিএনপি নির্বাচন বর্জন করলে স্বতন্ত্র প্রার্থী হওয়ার কোনো সম্ভাবনা নেই।
খুলনা গেজেট/হিমালয়/এনএম