খুলনা, বাংলাদেশ | ১১ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ | ২৬ নভেম্বর, ২০২৪

Breaking News

  ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গুতে ১০ জনের মৃত্যু, হাসপাতালে ভর্তি ৯৯০
  কিশোরগঞ্জের ভৈরবে বাসা থেকে ২ সন্তানসহ বাবা-মায়ের মরদেহ উদ্ধার
  কুমিল্লায় অটোরিকশায় ট্রেনের ধাক্কায় নিহত বেড়ে ৭

আনছার শেখ হত্যা মামলায় বারাকপুর ইউপি চেয়ারম্যান পাভেলসহ আসামি ৩১

একরামুল হোসেন লিপু

দিঘলিয়া উপজেলার বারাকপুর বাজার কামিটির সাধারণ সম্পাদক  শেখ আনছার হত্যাকান্ডের ২ দিন পর ছেলে তানভীর শেখ বাদী হয়ে থানায় মামলা দায়ের করেছেন। মামলায় ৩১ জনকে আসামি করা হয়েছে। এখানে বর্তমান বারাকপুর ইউপি চেয়ারম্যান গাজী সাহাগীর হোসেন পাভেলকে প্রধান ও হুকুমের আসামি করা হয়েছে। এদিকে হত্যা মামলায় তিনজনকে পুলিশ আটক করেছে। এদের মধ্যে ২ জন এজাহারভুক্ত ও অপরজন সন্দিগ্ধ।

এজারভুক্ত ২ জন হল, মাহবুব এবং ফরহাদ ও সন্দিগ্ধ আসামি হল এবাদুল। জিজ্ঞাসাবাদে পুলিশ অনেক তথ্য পেয়েছে তবে তা তদন্তের স্বার্থে প্রকাশ করা হচ্ছেনা বলে অফিসার ইনচার্জ জানিয়েছেন।

খানজাহান আলী থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ কামাল হোসেন খান খুলনা গেজেটকে বলেন, দিঘলিয়া থানা পুলিশের সহযোগীতায় ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে (রবিবার ২৬ মার্চ) ভোরে বারাকপুর থেকে গাজী ফরহাদ হোসেন (৫৫), মাহাবুব (৩৯) নামে নামে এজাহারভুক্ত ২ আসামীসহ সন্দেহভাজন অপর ১ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বাকী আসামীদের গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।

তিনি আরও বলেন, নিহতের পরিবার দাবি করেছে স্থানীয় নির্বাচনসহ এলাকার আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে এ হত্যাকান্ড সংগঠিত হতে পারে। ঘটনাস্থলের পার্শবর্তী সকল সিসি ক্যামেরার ফুটেজ পর্যালোচনা করা হচ্ছে।

তিনি বলেন, হত্যাকান্ডের মোটিভ উদঘাটনে এবং ঘটনার সাথে জড়িতদের গ্রেপ্তারে পুলিশের একাধিক টিম মাঠে কাজ করছে। নিহত শেখ আনছারের পরিবারের দাবিসহ হত্যাকান্ডের পর উঠে আসা বিভিন্ন বিষয় মাথায় রেখে পুলিশ কাজ করছে।

মামলার প্রধান আসামী কে জানতে চাওয়া হলে তদন্তকারী কর্মকর্তা পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) কবির হোসেন মাতব্বর খুলনা গেজেটকে বলেন, তদন্তের পর বলা যাবে মামলার প্রধান আসামী কে বা কারা?

প্রসঙ্গতঃ ২৪ মার্চ জুমার নামাজ শেষে ভাড়া বাসায় ফেরার পথে খানজাহান আলী থানার শিরোমনি লিন্ডা ক্লিনিকের সামনে দুর্বৃত্তের গুলিতে নিহত হন শেখ আনছার উদ্দিন (৬০)। দুর্বৃত্তরা এ সময় তাঁকে লক্ষ্য করে ৬ রাউন্ড গুলি করে। ৩ টি গুলি তাঁর বুকে বিদ্ধ হলে তিনি ঘটনাস্থলেই মারা যান। প্রকাশ্য দিবালোকে প্রথম রমজানের দিন এ হত্যাকান্ডটি নিয়ে ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়।

নিহত শেখ আনছার উদ্দিনের বাড়ি দিঘলিয়া উপজেলার বারাকপুর ইউনিয়নের লাখোহাটি গ্রামে। বিগত ইউপি নির্বাচনে তিনি ঐ ইউনিয়নের স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করে পরাজিত হন। এলাকার আধিপত্য এবং বারাকপুর বাজারের নির্বাচন এবং নিয়ন্ত্রণ নিয়ে গাজী জাকির হোসেন তাঁর সমর্থক এবং গাজী পরিবারের সংগে তাঁর বিরোধ চরম পর্যায়ে পৌঁছায়। বিরোধের সূত্রধরে বারাকপুর ইউনিয়নের ৮ টি গ্রাম গত ৩ বছর ধরে অশান্ত হয়ে ওঠে। প্রায়শই দু’ পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ, ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ, পাল্টা হামলা চলতো।

২০২২ সালের ১২ জুন বিজয়ী ইউপি চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগ নেতা গাজী জাকির হোসেন সন্ত্রাসীদের নৃশংস হামলার শিকার হন। ৫০ দিন চিকিৎসাধীন অবস্থায় ঢাকার একটি বেসরকারি হাসপাতালে মারা যান তিনি। ঐ হামলার অন্যতম কুশীলব ছিলেন সদ্য নিহত শেখ আনছারউদ্দিন। যিনি চেয়ারম্যান গাজী জাকির হোসেন হত্যা মামলার হত্যা মামলার ২ নং এজাহারভূক্ত আসামী। এ ছাড়া দিঘলিয়া থানায় তাঁর বিরুদ্ধে রয়েছে ৭ টি মামলা। হত্যা

উচ্চ আদালত থেকে জামিন নিয়ে তিনি নিজ এলাকায় তার সমর্থকদের নিয়ে উপ-নির্বাচনের কার্যক্রম শুরু করেন এবং ২০২২ সালের ২ নভেম্বর শূন্য হওয়া বারাকপুর ইউপি’র চেয়ারম্যান পদে উপ-নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র জমা দেন। কিন্তু ঋণ খেলাপির অভিযোগে তাঁর মনোনয়নপত্র বাতিল হয়। এরপর থেকে তিনি খানজাহান আলী থানার শিরোমণি লিন্ডা ক্লিনিকের পার্শ্ববর্তী এলাকার একটি বাড়িতে পরিবার নিয়ে ভাড়া থাকতেন। নিহত শেখ আনছার উদ্দিন বারাকপুর বাজার কমিটির সাধারণ সম্পাদক এবং সাবেক বারাকপুর ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সাংস্কৃতিক বিষয়ক সম্পাদক ছিলেন।

খুলনা গেজেট/ এসজেড




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!