সুন্দরবনের দস্যুতা ছেড়ে সরকারের সাধারন ক্ষমায় ঘোষণায় আত্মসমর্পণকারী দস্যুদের মাঝে ঈদ সামুগ্রী বিতরণ করেছে র্যাব। ৩০ এপ্রিল শনিবার সকাল ১১টায় মোংলা বন্দরের শিল্প এলাকায় তাঁদের উপহার সামগ্রী বিতরণ করা হয়।
র্যাব-৮ পক্ষ থেকে জানানো হয়, আত্বসর্মপন করা ২৭টি বাহিনীর ২৮৪ ব্যক্তিকে র্যাবের ডিজির পক্ষ থেকে ঈদ উপহার দেয়া হয়েছে। উপহার সামগ্রীর মধ্যে রয়েছে চাল, তেল, ঘি, সেমাই, চিনি, দুধ, লবণ, বাদাম, কিসমিস, জিরা, মসলা, পেয়াজসহ অন্যান্য দ্রব্য। র্যাব-৮-এর অধিনায়ক (অতিরিক্ত ডিআইজি) মো. জামিল হাসান ও উপঅধিনায়ক মেজর মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম ঈদের এ উপহার বিতরণ করেন।
উপ-অধিনায়ক মেজর মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম বলেন, আত্মসমর্পণকারী দস্যুরা পুনর্বাসিত হয়ে স্বাভাবিক জীবনযাপন করছেন। এ কারণে তাঁদের বিরুদ্ধে চাঞ্চল্যকর ও গুরুতর অপরাধের মামলা বাদে অন্যান্য সব সাধারণ মামলা সহানুভূতির সঙ্গে বিবেচনায় রয়েছে সরকারের। আশির দশক থেকে সুন্দরবন উপকূলের তান্ডব শুরু করে জলদস্যু ও বনদস্যুরা। এতে এই অঞ্চলে বনজীবী ও মৎস্যজীবীসহ বিভিন্ন পেশার মানুষ জিম্মি হয়ে পড়ে দস্যুদের কাছে। এরপর থেকে বনদস্যু ও জলদস্যু মুক্ত করতে প্রক্রিয়া শুরু করে র্যাব। ২০১২ সাল থেকে র্যাবের জোরালো অভিযানে কোণঠাসা হয়ে পড়ে বনের গহীনে থাকা জলদস্যুরা। র্যাবের তৎপরতায় দস্যু বাহিনীগুলো ফেরারি জীবন শুরু করে। এরপর দস্যুতার অবসান ঘটিয়ে আত্মসমর্পণের পথ বেছে নেয়। ২০১৬ সালের ৩১ মে থেকে ২০১৮ সালের ১ নভেম্বর পর্যন্ত সুন্দরবনের মোট ৩২টি দস্যু বাহিনীর ৩২৮ জন সদস্য ৪৬২টি অস্ত্র ও ২২ হাজার ৫০৪ রাউন্ড গোলাবারুদসহ আত্মসমর্পণ করে। এই কারণে সম্পূর্ণভাবে জলদস্যু মুক্ত হয় সুন্দরবন।
আত্মসমর্পণ করা দস্যু বাহিনীগুলোর মধ্যে- মাস্টার বাহিনীর ১০ জন, মজনু বাহিনীর নয়জন, ইলিয়াস বাহিনীর দুইজন, শান্ত বাহিনীর ১৪ জন, আলম বাহিনী ও সাগর বাহিনীর ১৩ জন, খোকাবাবু বাহিনীর ১২ জন, নোয়া বাহিনীর ১২ জন, জাহাঙ্গীর বাহিনীর ২০ জন, ছোট রাজু বাহিনীর ১৫ জন, আলিফ বাহিনী ও কবিরাজ বাহিনীর ২৫ জন, মানজু বাহিনীর ১১ জন, মজিদ বাহিনী নয়জন, বড় ভাই বাহিনীর ১৮ জন, ভাই ভাই বাহিনীর আটজন, সুমন বাহিনীর ১২ জন, ডন বাহিনীর ১০ জন, ছোট জাহাঙ্গীর বাহিনীর নয়জন, ছোট সুমন বাহিনীর আটজন, দাদা ভাই বাহিনীর ১৫ জন, হান্নান বাহিনীর নয়জন, আমির আলী বাহিনীর সাতজন, সুযর্য বাহিনীর ১০ জন, ছোট সামসু বাহিনীর নয়জন, মুন্না বাহিনীর সাতজন, আনোয়ারুল বাহিনীর আটজন, তইবুর বাহিনীর পাঁচজন, সিদ্দিক বাহিনীর সাতজন, আলামিন বাহিনীর পাঁচজন, সাত্তার বাহিনীর ১২ জন এবং শরীফ বাহিনীর ১৭ জন। তারা সবাই আত্মসমর্পণের মাধ্যমে বর্তমানে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে এসেছেন। এরপর ২০১৮ সালের ১ নভেম্বর সুন্দরবনকে দস্যু মুক্ত ঘোষণা করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
খুলনা গেজেট/ এস আই