করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধে আজ শনিবার থেকে দিনের বেলায় ফেরি চলাচল পুরোপুরি বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন করপোরেশন (বিআইডব্লিটিসি)। তবে সন্ধ্যার পর থেকে সীমিত পরিসরে কয়েকটি ফেরি চলবে। রাতে চলা ফেরিগুলোয় শুধুমাত্র জরুরি প্রয়োজনে আসা যানবাহন, অ্যাম্বুলেন্স ও পণ্যবাহী ট্রাক পারাপার করবে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বিআইডব্লিউটিসি শিমুলিয়া ফেরিঘাটের ব্যবস্থাপক (বাণিজ্য) সাফায়াত আহম্মেদ।
শুক্রবার রাতে তিনি জানান, ‘ঈদ ঘিরে দিনের বেলায় ফেরিতে ঘরমুখো যাত্রী চাপ খুব থাকে। আপতত কাল (শনিবার) সকাল থেকে ফেরি টোটাল বন্ধ থাকবে। শুক্রবার রাতেই সব কয়টি ফেরি নোঙর করা হবে। মন্ত্রণালয় থেকে এমন সিদ্ধান্তই আমাদের জানানো হয়েছে। তবে রাতে কি পরিমাণ ফেরি ছাড়া হবে বা অন্যান্য বিবিধ বিষয়গুলো এখনো নির্দিষ্ট করে বলা যাচ্ছে না।’
বিআইডব্লিউটিসি ঘাট কর্তৃপক্ষ জানায়, বাংলাবাজার-শিমুলিয়া নৌপথে সাধারণত ১৬টি যাত্রী ও যানবাহন নিয়ে পারপার হয়। চলমান করোনাভাইরাসের লকডাউনে চলায় ১৪ এপ্রিল থেকে সীমিত করা হয় ফেরি চলাচল। লকডাউনের শুরুতে দিনের বেলায় ২ থেকে ৩টি ফেরি ছাড়া হলেও শুক্রবার থেকে যাত্রী ও জরুরি প্রয়োজনে আসা যানবাহনের চাপ বেশি থাকা প্রায় সব কয়টি ফেরি চলাচল করে এ নৌপথে। এসব ফেরিতে জরুরি প্রয়োজনে আসা যাত্রী, অ্যাম্বুলেন্স, পণ্যবাহী ট্রাক, কুরিয়ার সার্ভিসের গাড়ি অগ্রাধিকার ভিত্তিতে পারাপারের কথা থাকলেও সাধারণ যাত্রীরাই বেশি পারাপার হতে দেখা যায়। এ কারণে বিআইডব্লিউটিসি’র পক্ষ থেকে শনিবার সকাল থেকে দিনের বেলায় ফেরি চলাচল সম্পূর্ণ বন্ধ রেখেছে।
বিআইডব্লিউটিসি’র বাংলাবাজার ঘাটের ব্যবস্থাপক মো. সালাউদ্দিন আহমেদ বলেন, রাত ৩টা থেকে আমরা আর কোন ফেরি ছাড়বো না। কাল থেকে বন্ধ থাকবে ফেরি চলাচল। আপতত এর থেকে বেশি কিছু বলা যাচ্ছে না।’
পবিত্র ঈদুল ফিতরকে ঘিরে শুক্রবার সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত দক্ষিণাঞ্চলমুখী যাত্রীদের উপচে পড়া ভিড় ছিল মুন্সিগঞ্জের শিমুলিয়া ও মাদারীপুরের বাংলাবাজার ফেরিঘাটে। চলাচলরত প্রতিটি ফেরিতেই যানবাহনের তুলনায় মানুষে ভরা ছিল যাত্রীতে। ফেরিগুলোয় তিল ধারণের ঠাঁই ছিল না। যাত্রীদের ভিড় সামলাতে গিয়ে বিপাকে পড়েন ঘাট কর্তৃপক্ষ।
এদিকে শনিবার (৮ মে) সকাল ৬ টা থেকে পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া নৌরুটে ফেরি চলাচল বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন করপোরেশন (বিআইডব্লিটিসি)।
শনিবার ভোর সাড়ে ৩ টার দিকে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন করপোরেশন (বিআইডব্লিটিসি) আরিচা কার্যালয়ের ডিজিএম মো. জিল্লুর রহমান এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
মো. জিল্লুর রহমান বলেন, গতকাল শুক্রবার (৭ মে) সকালের দিকে পাটুরিয়া ঘাট এলাকায় সাধারণ যাত্রীদের চাপ বেড়ে যায়। জরুরি যানবাহনের সাথে এসকল যাত্রীরাও পারাপার হয়। সকালের দিকে যাত্রীদের চাপ থাকায় পাটুরিয়া দৌলতদিয়া নৌরুটে ১৬টি ফেরি চলাচল করে। করোনা সংক্রমণ ঠেকাতে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ আজ শনিবার সকাল ৬ থেকে ফেরি চলাচল বন্ধ রাখার নির্দেশনা দিয়েছে। তবে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সাথে কথা বলে দিনে জরুরি যানবাহন ও এ্যাম্বুলেন্স পারাপার করা যাবে। আর সন্ধ্যার পর থেকে পচনশীল জরুরি পণ্যবাহী ট্রাক পারাপার করা হবে।
খুলনা গেজেট/কেএম