চট্টগ্রামে নগরীতে যৌতুকের জন্য আইনজীবী স্বামীর বিরুদ্ধে স্ত্রীকে হত্যার অভিযোগ উঠেছে। এই ঘটনার স্বামী এডভোকেট আনিসুল ইসলামকে আটক করেছে পুলিশ। নিহত গৃহবধূ মাহমুদা খানম আঁখি (২২) একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের এলএলবির দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী।
রোববার (১৯ ডিসেম্বর) সন্ধ্যার দিকে নগরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় এই গৃহবধূর মৃত্যু হয়।
নিহত আঁখি ও স্বামী আনিসুল বাঁশখালী উপজেলার জলদী ইউনিয়নের বাসিন্দা। আনিসুল ইসলাম চট্টগ্রাম জেলা আইনজীবী সমিতির সদস্য।
নিহত আঁখির ভগ্নিপতি আবুল কালাম বলেন, ‘আমার শ্যালিকা আঁখির সাথে আইনজীবী আনিসুল ইসলামে বিয়ে হয় প্রায় দেড় বছর আগে। বিয়ের পর তারা নগরীর চান্দগাঁও থানার পাঠানিয়া গোদা এলাকায় ভাড়া বাসায় থাকতো। আনিস বিয়ের পর থেকে যৌতুকের জন্য আঁখির ওপর নির্যাতন চালিয়ে আসছিল। সে তার পরিবারকে নির্যাতনের কথা জানালে স্বামী আরও বেশি নির্যাতন চালাতে থাকে। ৬ মাস আগে তার ফোন কেড়ে নেয় আনিসুল। যার কারণে এতো দিন পরিবারের সাথে যোগাযোগ করতে পারেনি।’
আবুল কালাম বলেন, ‘কয়েকদিন আগে তার ওপর পাশবিক নির্যাতন চালানো হয়। পেটে লাথি মারলে আঁখি গুরুতর আহত হয়। শনিবার (১৮ ডিসেম্বর) তাকে নগরীর পার্কভিউ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। চিকিৎসকরা পরীক্ষা নিরীক্ষা করে দেখে নির্যাতনে আঁখির পেটের নাড়িভূঁড়ি ছিঁড়ে যায়। কিন্তু জটিল এ অপারেশন করতে তারা অপরাগতা প্রকাশ করলে রোববার (১৮ ডিসেম্বর) সকালে আঁখিকে পাঁচলাইশ সার্জিস্কোপ ক্লিনিকে ভর্তি করানো হয়। সেখানেই ওইদিন সন্ধ্যায় সে মারা যায়।’
এদিকে ঘটনার পরেই পুলিশ আঁখির স্বামী আইনজীবী আনিসুল ইসলাম ও তার খালাতো ভাইকে আটক করেছে। পরে আঁখির বড় ভাই মিজানুর রহমান বাদী হয়ে চান্দগাঁও থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলায় আরিফুল ইসলামকে প্রধান আসামি ও নির্যাতনে সহযোগীতার অভিযোগে ফরিদা আক্তার (৫০) ও হামিদা বেগমকে (৩৪) আসামি করা হয়।
এই বিষয়ে চান্দগাঁও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাইনুর রহমান বলেন, ‘আঁখির মৃত্যুর ঘটনাটি আমরা তদন্ত করে দেখছি। নিহতের বড় ভাই মিজানুর রহমান বাদী হয়ে তিন জনকে আসামি করে মামলা দায়ের করেছেন। এ ঘটনায় আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
খুলনা গেজেট/এনএম