টি-টোয়েন্টি র্যা কিংয়ে অস্ট্রেলিয়া পঞ্চম আর বাংলাদেশ দশম। এই বিস্তর ব্যবধান নিয়েও বাংলাদেশে এসে ধ্বংসস্তুপে পরিণত অস্ট্রেলিয়া। যেন ব্যাটিং ভুলে গেছেন তারা। দুই ম্যাচেই শোচনীয় হার।
অ্যারন ফিঞ্চের অবর্তমানে নেতৃত্ব পাওয়া ম্যাথিউ ওয়েড হয়তো ঘুমেও দুঃস্বপ্ন দেখছেন। তিনি স্বীকার করেছেন, বাংলাদেশি বোলারদের অসাধারণ নৈপুণ্যে ব্যাটিংয়ে ধরাশায়ী তার দল। এমন পরিস্থিতিতে অস্ট্রেলিয়ার গণমাধ্যমগুলোতে অসি ক্রিকেট দলকে তুলোধোনা করা হয়েছে।
একটি সংবাদমাধ্যমে শিরোনাম করা হয়েছে -‘অচেনা কন্ডিশনে বাঘের কামড় টের পাচ্ছে অস্ট্রেলিয়া’। অস্ট্রেলিয়া অলরাউন্ডার ময়জেস হেনরিকেস বলেছেন, ‘খুব দ্রুত আমাদের ঘুরে দাঁড়ানোর পথ বের করতে হবে।’
যদিও দ্বিতীয় ম্যাচে ৫ উইকেটে হারের পর বোঝা যাচ্ছে, মিরপুরের পিচে নিজেদের এখনও মানিয়ে নিতে পারেননি অসি ব্যাটসম্যানরা। যে কারণে অস্ট্রেলিয়ার সংবাদমাধ্যম ‘দ্য অস্ট্রেলিয়ান’ শিরোনাম দিতে বাধ্য হয়েছে – ‘২৪ ঘণ্টার মধ্যে বাংলাদেশের কাছে দ্বিতীয় হারে ভুল পথে এগোচ্ছে অস্ট্রেলিয়ার টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ পরিকল্পনা।’
টানা দ্বিতীয় হারের সংবাদমাধ্যম ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়া শিরোনাম করেছে ‘অচেনা কন্ডিশনে বাঘের কামড় টের পাচ্ছে অস্ট্রেলিয়া।’
এ দুই সংবাদমাধ্যমের চেয়ে একটু বেশি সমালোচনা করেছে দেশটির জনপ্রিয় সংবাদমাধ্যম ‘সিডনি মর্নিং হেরাল্ড’। বর্তমান জাতীয় দলকে ধুয়ে দিয়েছে তারা।
মূলত: বাংলাদেশ-অস্ট্রেলিয়া সিরিজ দেশটির কোনো টিভি চ্যানেলে না দেখানোর প্রসঙ্গ টানা হয়েছে ‘সিডনি মর্নিং হেরাল্ড’-এর এবারের প্রতিবেদনে। গণমাধ্যমটি লিখেছে, ‘গত ৩০ বছরের মধ্যে এই প্রথম ছেলেদের জাতীয় দলের কোনো সিরিজ ব্ল্যাকআউট (টিভিতে দেখানো হচ্ছে না)। সেটি আসলে সফরকারী দলের খেলা দেখার লজ্জা পাওয়া থেকে বাঁচিয়ে দিচ্ছে। কারণ এতটাই বিরক্তিকর যে ঘরে বসে কেউ দেখতে চাইবে না।’
দ্বিতীয় ম্যাচে ষষ্ঠ উইকেটে নুরুল হাসান ও আফিফ হোসেনের ৪৪ বলে ৫৬ রানের অবিচ্ছিন্ন জুটির প্রশংসা করেছে সিডনি মর্নিং হেরাল্ড।
ম্যাচে ২১ বলে ২২ রানে অপরাজিত ছিলেন নুরুল হাসান সোহান। তাকে নিয়ে গণমাধ্যমটি লিখেছে, ‘নুরুল উইকেটকিপিং করছে কারণ এ পজিশনে বাংলাদেশের প্রথম পছন্দ মুশফিকুর রহিমকে জৈব সুরক্ষাবলয়ে ঢুকতে দেয়নি অস্ট্রেলিয়া। কারণ বাবা-মা কোভিড-১৯ ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ায় জিম্বাবুয়ে থেকে তিনি আগেই দেশে ফিরে যান। অস্ট্রেলিয়ার বিকল্প খেলোয়াড়েরা যেখানে ব্যর্থ, সেখানে বাংলাদেশের বিকল্প খেলোয়াড়েরা সামনে থেকে লড়েছেন।’
প্রথম পরাজয়ের পরও অসিদের একহাত নিয়েছিল গণমাধ্যমটি। একটি প্রতিবেদনে তারা লিখেছিল, ‘স্বাগতিক দলকে ৭ উইকেটে ১৩১ রানের গড়পড়তা এক স্কোরে বেঁধে ফেলেছে অস্ট্রেলিয়া। কিন্তু নিজেরা এরপর গড়পড়তার চেয়েও কিছুটা বাজে ব্যাটিং করে ম্যাচটা হেরে গেছে ২৩ রানে।’
এদিকে ঘরের মাঠে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে টানা দুই জয়ে যখন বাংলাদেশ দলের প্রশংসা করছে বিশ্বক্রিকেট তখন ভারতীয় সংবাদমাধ্যমে এই জয় দেখল ‘অঘটন’ হিসেবে!
কলকাতার আনন্দবাজার পত্রিকা লিখেছে— ‘ফের অঘটন, দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টি ম্যাচেও অস্ট্রেলিয়াকে হারাল বাংলাদেশ’। এভাবেই বাংলাদেশের এই জয়কে খাটো করা হয়েছে ‘অঘটন’ শব্দ জুড়ে দিয়ে।
প্রসঙ্গত, পাঁচ ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজের প্রথম খেলায় অস্ট্রেলিয়াকে ২৩ রানে হারিয়ে সিরিজে ১-০ তে এগিয়ে যায় টাইগাররা। দ্বিতীয় ম্যাচে আফিফ-সোহানের দুর্দান্ত জুটিতে ভর করে ৫ উইকেটে জয় পেয়ে সিরিজে ২-০ তে এগিয়ে গেছে বাংলাদেশ।
খুলনা গেজেট/ টি আই