জাতীয় শিক্ষা কার্যক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের অষ্টম শ্রেণির বাংলাদেশ ও বিশ্ব পরিচয় নামক পাঠ্যপুস্তকটি দশ বছর ধরে একই ভুল ও অসম্পূর্ণ তথ্যে প্রকাশিত হচ্ছে। ২০১১ সালের প্রথম প্রকাশ হওয়ার পর ২০১৪ সালের পরিমার্জিত সংস্করণ ও ২০২০ সালের দ্বিতীয় পরিমার্জিত সংস্করণ হয়। তারপরও ভুল সংশোধন হয়নি।
বাংলাদেশ ও বিশ্ব পরিচয় পাঠ্যপুস্তকের ১৪ পাতায় বলা হয়েছে, ১৯৭১ সালের ২ মার্চ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রলীগ ও ডাকসুর পক্ষ থেকে স্বাধীন বাংলার প্রথম পতাকা উত্তোলিত হয়। এখানে পতাকা উত্তোলকের নাম নেই। একই পাতায় উল্লেখ করা হয়, ৩ মার্চ হরতাল পালন ও ছাত্র সংগ্রাম পরিষদ গঠিত হয়। ৩ মার্চ স্বাধীনতার ইশতেহার পাঠ করা হলেও পাঠ্যপুস্তকে তা উল্লেখ নেই। ছাত্র সংগ্রাম পরিষদ নয়, স্বাধীন বাংলা ছাত্র সংগ্রাম পরিষদ গঠিত হয়।
বইটির ২০ পাতায় উল্লেখ আছে, ১০ এপ্রিল মুজিবনগর সরকারের শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়। এ অনুষ্ঠানে জাতীয় পতাকা উত্তোলন ও জাতীয় সংগীত পরিবেশিত হলেও পাঠ্যপুস্তকে তা উল্লেখ নেই। ২১ পাতায় মুক্তিযুদ্ধের ১১টি সেক্টরের বর্ণনা থাকলেও সেক্টর কমান্ডারদের নাম নেই। ২২ পাতায় আঞ্চলিক বাহিনীর তালিকায় সুন্দরবনে জিয়া বাহিনীর নাম অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।
২৭ পাতায় বলা হয়েছে, একাত্তরে সাংবাদিকদের মধ্যে নিজামুদ্দিন ও নাজমুল হক শহীদ হন। ৩০ পাতায় উল্লেখ করা হয়েছে, সাংবাদিকদের মধ্যে শহীদুল্লাহ কায়সার, নিজাম উদ্দিন, সিরাজ উদ্দিন হোসেন, সেলিনা পারভিন ও মেহেরুননেছা শহীদ হন। ২৭ পাতায় বিদেশী সাংবাদিকদের অবদানের মধ্যে শুধু মাত্র মার্ক টালি ও সাইমন ড্রিং-এর কথা উল্লেখ করা হয়েছে মাত্র। আর কোন বিদেশী সাংবাদিকের কথা উল্লেখ নেই।
২৮ পাতায় উল্লেখ করা হয়েছে ১১ থেকে ১২ ডিসেম্বরের মধ্যে ময়মনসিং, হিলি, কুষ্টিয়া, খুলনা, রংপুর, রাজশাহী, দিনাজপুর ও সিরাজগঞ্জ মুক্ত হয়।
এ প্রসঙ্গে বাংলাদেশ জাতীয় শিক্ষা কার্যক্রম পাঠপুস্তক বোর্ডের প্রধান সম্পাদক প্রফেসর সন্তোষ কুমার ঢালী এ প্রতিবেদককে জানান, কয়েক দফা পরিমার্জন করা হয়েছে। বাংলাদেশ ও বিশ্ব পরিচয় নামক পাঠ্যপুস্তকে ভুল তথ্যগুলো নিয়ে বিশেষজ্ঞদের সাথে আলোচনা করে সংশোধনের উদ্যোগ নেয়া হবে।
উল্লেখ্য, এ পাঠ্যপুস্তকের রচনায় ছিলেন প্রফেসর মমতাজ উদ্দিন পাটোয়ারীসহ অন্যান্যরা। সম্পাদনায় অন্যান্যের মধ্যে ছিলেন প্রফেসর ড. মুনতাসীর মামুন।
খুলনা গেজেট/ টি আই