যশোরের অভয়নগরের বুইকারা ড্রাইভারপাড়ার মাছুরা বেগম হত্যা মামলায় আটক আরমান আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে। একই এলাকার মাদক বিক্রেতা ওয়াহিদুল তাকে ছুরি দিয়ে গলা কেটে হত্যা করেছিল। এরপর তারা দুইজন লাশ বস্তায় ভরে পুকুর পাড়ে ফেলে পালিয়ে যায়। শনিবার বিকেলে আদালতে দেয়া জবানবন্দিতে এ তথ্য জানিয়েছে আটক আরমান।
এদিন আসামির এ জবানবন্দি গ্রহণ শেষে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক মামুনুর রহমান। আরমান নওয়াপাড়া স্টেশন বৌবাজার এলাকার মৃত ওয়াহাবের ছেলে।
আরমান জবানবন্দিতে জানিয়েছে, ওই সময় সে কাঠমিস্ত্রির কাজ করতো। মাঝে মধ্যে ওয়াহিদুলের কাছ থেকে মাদক কিনে সেবন করত। ২০১৫ সালের ওই রাতে নেশা করার ইচ্ছা হওয়ায় ওয়াহিদুলের বাড়ি যেয়ে দুই পুরিয়া গাঁজা কিনে সেবন করে। এরপর গভীর রাতে আবারও গাঁজা কিনতে ওয়াহিদুলের বাড়িতে যাচ্ছিল আরমান।
পথিমধ্যে তার পূর্ব পরিচিত মাছুরার সাথে দেখা হয়। সে মাছুরাকে সাথে নিয়ে ওয়াহিদুলের বাড়িতে গাঁজা কিনতে গেলে তাদের মারপিট করে ঘরের মধ্যে নিয়ে যায়। এরপর মাছুরাকে ধাক্কা দিলে দেয়ালে আঘাত পেয়ে পড়ে যায়। ওয়াহিদুল তখন একটি ছুরি দিয়ে মাছুরার গলা কেটে হত্যা করে। এরপর তারা দুইজন মাছুরার লাশ বস্তায় ভরে বৌবাজার মন্দিরের পুকুরের পাড়ে ফেলে দেয়।
মামলা সূত্রে জানা গেছে, মাছুরার স্বামীর সাথে বনিবনা না হওয়ায় ছেলের কাছে ঢাকায় থাকত। সে মাদকাশক্ত হয়ে পড়ে। মাঝে মধ্যে পিতার বাড়ি যশোর নওয়াপাড়ার বুইকারার ড্রাইভার পাড়ায় বেড়াতে আসত। ২০১৫ সালের ১২ আগস্ট তার মামাবাড়িতে বেড়াতে আসে মাছুরা বেগম। ১৩ আগস্ট ঢাকায় ফিরে যাওয়ার কথা বলে নিখোঁজ হয় মাছুরা বেগম। ১৫ আগস্ট দুপুরে বৌবাজার মন্দিরের পুকুর পাড় থেকে মাছুরা বেগমের লাশ উদ্ধার করে স্থানীরা।
এ ব্যাপারে নিহতে ছেলে মাসুদ শেখ বাদী হয়ে অপরিচিত ব্যক্তিদের আসামি করে অভয়নগর থানায় হত্যা মামলা করেন। মামলাটি বর্তমানে সিআইডি পুলিশ তদন্ত করছে। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই ফকরুল ইসলাম হত্যার সাথে জড়িত সন্দেহে আরমানকে আটক করে শনিবার আদালতে সোপর্দ করেন। আরমান হত্যার সাথে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে সে আদালতে ওই জবানবন্দি দিয়েছে।
খুলনা গেজেট/এনএম