অভয়নগরে ভবদহ অঞ্চলের সড়ক গুলো গিলে খেয়ে ফেলেছে কিছু অসাধু মৎস্য ঘের ব্যবসায়ীরা। তারা সড়কের গ্যাঁ ঘেসে পাড় না বেধেঁ তৈরি করেছে মাছের ঘের। যে কারণে ভবদহ অঞ্চল জলাবদ্ধ হওয়াই বছরের বেশির ভাগ সময়ে পানি থাকে অত্র অঞ্চলের বীল গুলোতে।
জানা গেছে, দুই পাশে পাড় না বাধাঁয় ভেঙ্গে পড়েছে সড়ক। কিছু দিন যেতে না যেতেই রাস্তা গুলো বিলিন হয়েগেছে। এখন ওই সড়কে দিয়ে যাতায়াতে করতে কঠিন সমস্যা ভুগতে হয় সাধারণ মানুষের। তাছাড় কোটি কোটি টাকা খরচ করে সরকারে অনেক অর্থ নষ্ঠ হয়েছে। এক দিকে যেমন অর্থ যায়। অন্য দিকে পোহাতে চরম ভোগান্তি। এ উপজেলায় যত্র তত্র গড়ে উঠেছে মৎস্য ঘেরের ব্যবসা। তবে বেশির ভাগ ঘের পাড় না বেঁেধ তৈরি করা হয়েছে সরকারী সড়ক ব্যবহার করে। সরজমিনে, তেমন কোথাও সড়কের পাশে মাটি দিয়ে পাড় তৈরি করতে দেখা যায়নি। ধোপাদী হতে সুন্দলী সড়কের পাশে থাকা অনেক গুলো মৎস্য ঘের রয়েছে। সড়কের সাথে সংযুক্ত বেশির ভাগ ঘেরে দেখা যায় কোন পাড় নেই। সুন্দলী হতে ডহর মশিয়াহাটি সড়কে থাকা একই চিত্র। আবার দেখতে পাওয়া যায় নওয়াপাড়া হতে কালিবাড়ী, মশিয়াহাটি থেকে কুলটিয়া পর্যন্ত সড়কের দুপাশে অসখ্য ঘের তৈরি হয়েছে। তবে সরকারী সড়কের সাথে কোথাও পাড় তৈরি করতে দেখা যায়নি। তবে স¤প্রতি যা একটু বাঁশ দিয়ে বাঁধ দেওয়া আছে তা কোন কাজে আসছে না। ফলে বেশির ভাগ স্থানে সড়ক গিলছে অপরিকল্পীত ঘের ব্যবসায়। সড়ক গুলো আস্তে আস্তে ভেঙ্গে যাচ্ছে। যানবহন চালাতে ভারী সমস্যা পড়চ্ছে। ভ্যানে করে মালামাল নিতে পোহাতে হয় চরম ভোগান্তি। বেশির ভাগ গাড়ি গুলো অকেজো হয়ে পড়ে। ডুমুরতলা এলাকার বাসিন্দা অসিম কুমার, আষিস বিশ্বাস তারা বলেন, সড়কের সাথে মাছের ঘের তৈরি করে মাছ চাষ করা হচ্ছে। কিন্তু পাড় না বেধে অপরিকল্পিত ভাবে তারা এ কাজ করে যাচ্ছে। সড়কের অবস্থা অনেক নাজুক । এই সড়ক দিয়ে প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষ কর্মের জন্য নওয়াপাড়া বন্দরে যায়। রাস্তার বেহাল দশা যে কারণে সময় মত তারা কাজে যেতে পারে না। উপজেলা প্রশাসন সড়কের পাশে থাকা জমিতে পাড় বেধে ঘের করতে বলচ্ছে। তারা কোন কর্নপাত করচ্ছে না। গতবছর কয়েকজন অসাধু ঘের ব্যবসায়ীকে জরিমানা করেছিল। তাতে কয়েকজন সে কাজে সাড়া দিয়ে ছিল। বাকিরা আগের মতই কাজ করচ্ছে। মশিয়াহাটি গ্রামের দুলাল চন্দ্র জানান, ঘেরে সাধারণত বছরের বেশির ভাগ সময়ে পানি থাকে। ফলে পানির ঢেও লাগতে লাগতে বর্তমানে সড়ক ভেঙে পড়ছে পানিতে। বেশির ভাগ স্থানে ইতি মধ্য সড়ক ভাংতেও শুরু করেছে। দুই পাশে পাড় না বাধায় ভেঙ্গে পড়ে সড়ক। কিছু দিন যেতে না যেতেই রাস্তা গুলো বিলিন হয়ে যায়। ওই সড়কে দিয়ে যাতায়াতে করতে কঠিন সমস্যা ভুগতে হয় সাধারণ মানুষের।এমত অবস্থাতে এলাকার সচেতন মহল সরকারী ভাবে ঘেরের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার আহবান জানিয়েছেন। এ দিকে হাটগাছা গ্রাম থেকে ডুমুরতলা সড়কটিতে তৈরি হয়েছে বড় বড় গর্ত। পাশে বৈদ্যুতিক খুটি, যে কোন সময় খুটি পড়ে তৈরি হতে পারে বড় ধরনের র্দূঘটনা।সুন্দলী গ্রামের সমীরণ বিশ্বাস জানান, এখনো পর্যন্ত এ সমস্যা সমাধানের সরকারী ভাবে তেমন কোন উদ্যোগ চোখে পড়েনি। সরকারী ভাবে নানা আইন থাকলেও আইনের প্রয়োগ না থাকায় সর্বত্য এ অনিয়ম শুরু হয়েছে ।
ভবদহ পানি নিষ্কাশন সংগ্রাম কমিটির আহবায়ক রনজীত বাওয়ালী বলেন, সব সমস্যার কারণ সরকারী ব্যবস্থা। আইন থাকলেও তার প্রয়োগ না থাকার কারণে এ সকল সমস্যা প্রকট হচ্ছে।
এ বিষয়ে উপজেলা প্রকৌশলী মোঃ সানাউল হক বলেন, ২১ কোটি টাকার বরাদ্দ চাওয়া হয়েছে নওয়াপাড়া টু মশিয়াহাটি পর্যন্ত ৭ কিঃ মিঃ সড়ক পূণরায় নির্মাণ করার জন্য। মৎস্য ঘেরের ব্যাপারে কথা হলে তিনি উপজেলা মৎস্য অধিদপ্তরের কথা বলেন।
এ বিষয়ে উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা মোঃ ফারুক হোসাইন সাগর বলেন, কেউ যদি সড়কের পাশে ঘের করে তাহলে আমাদেরকে জানাতে হবে। তবে অনেকই এখনো গোপনে এটা করছে। আমরা জানতে পারলে সঙ্গে সঙ্গেই ব্যবস্থা নিয়ে থাকি। আমি গত বছর কয়েক জন আসাধু ঘের ব্যবসায়ীকে জরিমানা করে আদায় করেছি। ঘের সংলগ্ন এলাকার বাসিন্দারা যদি অভিযোগ দেয়। তাহলে আমরা তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে পারি। এছাড়াও আমরা এ ব্যাপরে প্রচার প্রচারণা করেছি। এ বিষয়টি নিয়ে সরকার কঠিন আইন করেছে।
এ বিষয়টি নিয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মেজবাহ উদ্দীনের সাথে কথা হলে তিনি বলেন, অতি দ্রæত ব্যবস্থা নেয়া হবে। কোন ভাবে সড়কের সাথে পাড় না বেধেঁ মৎস্য ঘের করা যাবে না।