যশোরের অভয়নগর উপজেলায় চাল সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা পূরণে রীতিমত গলদঘর্ম হচ্ছেন খাদ্য বিভাগের কর্মকর্তারা। সরকার নির্ধারিত সময়ের মধ্যে কোন মিল মালিক চাল সরবরাহে চুক্তিবদ্ধ না হওয়ায় পূণরায় সময় বৃদ্ধি করা হয়েছে। তথাপি বর্ধিত সময় শেষ হতে আর মাত্র দুই দিন বাকি থাকলেও অদ্যবধি কোন মিল মালিক চাল সরবরাহের চুক্তিপত্রে আবদ্ধ হয়নি। ফলে চলতি মৌসুমে নওয়াপাড়া খাদ্য গুদামে চাল সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ নিয়ে সংশয় দেখা দিয়েছে।
উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রকের কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, সরকার নির্ধারিত চালের মূল্য থেকে বাজার মূল্য বেশি থাকায় সারাদেশে চাল সংগ্রহ বাঁধাগ্রস্থ হচ্ছে। যে কারণে চাল কল মালিকদের সাথে চুক্তির মেয়াদ ইতিমধ্যেই একদফা বাড়িয়েছে সরকার। পূর্বে চাল সংগ্রহের চুক্তির সময়সীমা ১৭ নভেম্বর ২২ তারিখ হতে ২৬ নভেম্বর ২২ তারিখ পর্যন্ত নির্ধারণ করলেও পরবর্তীতে তা ৮ ডিসেম্বর ২২ পর্যন্ত বার্ধিত করা হয়। কিন্তু বর্ধিত সময় শেষ হতে আর মাত্র দুই দিন বাকি থাকলে উপজেলার কোন চাল কল এখনও চুক্তিবদ্ধ হয়নি।
সূত্র জানায়, সম্প্রতি গত ২৭ নভেম্বর যশোর জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক (ভারপ্রাপ্ত) নিত্যানন্দ কুন্ডু অভয়নগর উপজেলা খাদ্য গুদামে চাল সংগ্রহ তরান্বিত করতে মিল মালিকদের সাথে জরুরী বৈঠকে বসেন। সেখানে উপজেলার ২১ টি চালকলের মালিকগণ বৈঠকে উপস্থিত হন এবং সরকারি নীতিমালা অনুযায়ী তাদেরকে দ্রুত চাল সরবরাহের জন্য চুক্তিবদ্ধ হওয়ার তাগিদ দেয়া হয়।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক চাল কল মালিক জানিয়েছেন, বাজার মূল্যের চেয়ে সরকার নির্ধারিত চালের মূল্য কেজি প্রতি ৪ টাকা থেকে ৫ টাকা কম। এই দরে চাল দিলে তারা চরম লোকসানের মুখে পড়বেন। যে কারণে তার গুদামে চাল সরবরাহে অনিহা প্রকাশ করেছেন।
নওয়াপাড়া খাদ্য গুদাম সূত্রে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে এ উপজেলায় ২ হাজার ৯শ’ ২০ মেট্টিকটন চাল সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে এবং আগামী ২০২৩ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত সংগ্রহ চলমান থাকবে। তবে এখনও এক কেজি চালও সংগ্রহ করা সম্ভব হয়নি এবং কোন চাল কল মালিক চুক্তিবদ্ধ হয়নি।
এ ব্যাপারে নওয়াপাড়া খাদ্য গুদামের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসিএলএসডি) অসিম কুমারও বাজার মূল্যের চেয়ে সরকার নির্ধারিত মূল্যের পার্থক্যের কথা স্বীকার করে বলেন, আমরা মিল মালিকদের সাথে আলোচনাপূর্বক চাল সংগ্রহের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। আশাকরি দ্রুতই মিলাররা চুক্তিবদ্ধ হবেন। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে সরকারি নীতিমালা মেনেই চাল সংগ্রহ সম্পন্ন হবে।
এ বিষয়টি নিয়ে উপজেলা নিবার্হী অফিসার মেজবাহ উদ্দিন বলেন, চাল সংগ্রহের মিল মালিকদের সরবরাহে চুক্তিবদ্ধ করা হচ্ছে। আশা করি দ্রুত সমাধান পাওয়া যাবে।
খুলনা গেজেট/ টি আই