সেনা অভ্যুত্থানের পরে প্রথমবারের মতো বিশ্বনেতাদের সঙ্গে দেখা করতে যাচ্ছেন মিয়ানমারের সেনাপ্রধান। সেনাবাহিনীর ক্ষমতা নেওয়ার পরে এটাই হবে তার প্রথম বিদেশ সফর। জেনারেল মিন অং হ্লাইং শনিবার ইন্দোনেশিয়ার রাজধানী জাকার্তায় আসিয়ান রিজিওনাল সামিটে অংশ নিবেন বলে জানা গেছে।
ইন্দোনেশিয়ার রাজধানীতে হওয়া এই আলোচনাই হবে এই সংকট চিহ্নিত করার প্রথম আন্তর্জাতিক প্রচেষ্টা। সেখানে অ্যাসোসিয়েশন অব সাউথ ইস্ট এশিয়ান ন্যাশনসের (আসিয়ান) ১০ সদস্য দেশের নেতৃবৃন্দ ও পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা উপস্থিত থাকবেন।
আশা করা হচ্ছে মিন অং হ্লাইং সেখানে স্বশরীরে উপস্থিত থাকবে। কিন্তু কোনো কিছুই নিশ্চিত করা হয়নি। অ্যাক্টিভিস্টরা জাকার্তায় তার উপস্থিতির খবর শুনে সেখানে বিক্ষোভের ডাক দিয়েছে।
থাইল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী ও ফিলিপাইনের প্রেসিডেন্ট জানিয়েছেন এই সম্মেলনে তারা শুধু তাদের পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে পাঠাবেন। আসিয়ানের অন্য সদস্যরা হলো মালয়েশিয়া, সিঙ্গাপুর, ভিয়েতনাম, ব্রুনাই, কম্বোডিয়া, ইন্দোনেশিয়া ও মিয়ানমার। এই জোট থেকে মিয়ানমারকে বহিস্কার করারও ডাক এসেছে কিন্তু আসিয়ানের সদস্যরা সচরাচর অন্য দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ করে না।
জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেস আসিয়ান সামিটকে এই সংকট সমাধানের আহ্বান জানিয়েছেন এবং মিয়ানমারের সীমানা ছাড়িয়ে সম্ভাব্য গুরুতর মানবিক অবক্ষয় রোধ করার আহ্বান জানিয়েছেন।
মিয়ানমারে জাতিসংঘের বিশেষ দূত ক্রিস্টিন সার্চনার বার্গেনারও জাকার্তায় উপস্থিত থাকবেন। সম্মেলনের সাইডলাইনে কিছু মিটিং করবেন তিনি। সেনাবাহিনী ও বেসামরিক সরকারের মধ্যে নির্বাচনে জালিয়াতি নিয়ে চলমান উত্তেজনার মধ্যেই ১ ফেব্রুয়ারি মিয়ানমারে সেনা অভ্যুত্থান ঘটে।
তার পরপরই এনএলডির শীর্ষ নেত্রী অং সান সু চি, দেশটির প্রেসিডেন্ট এবং মন্ত্রিসভার সদস্যসহ প্রভাবশালী রাজনীতিকদের আটক করে সেনাবাহিনী।
পরে সেনাবাহিনী এক ঘোষণায় জানায়, আগামী ১ বছরের জন্য মিয়ানমারের ক্ষমতায় থাকবে তারা।
গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত সরকারকে সরিয়ে দিয়ে সেনা অভ্যুত্থানের ঘটনায় হাজার হাজার মানুষ বিক্ষোভ করতে রাস্তায় নেমে আসে। বড় জনসমাগমে নিষেধাজ্ঞা ও রাত্রিকালীন কারফিউ থাকা সত্ত্বেও তারা বিক্ষোভ দেখায়।
জরুরি অবস্থা শেষ হলে মিয়ানমারে মুক্ত ও অবাধ নির্বাচন দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে সেনাবাহিনী। গত কয়েক সপ্তাহে সেখানে বিক্ষোকারীদের বিপরীতে সেনার ব্যবহার বাড়ছে। প্রত্যক্ষদর্শীরা সেনাদের ভারী অস্ত্র ব্যবহার করতে দেখেছে আর কোনো কিছু নড়াচড়া করলেই গুলি করতেও দেখেছে। এরই মধ্যে সেখানে প্রাণ হারিয়েছে ৭০০ জনেরও বেশি মানুষ।
খুলনা গেজেট/এনএম