অভিনয় থেকে এ বার রাজনীতির মঞ্চে অভিষেক হল অভিনেত্রী কৌশানী মুখোপাধ্যায়ের। একত দিন বিভিন্ন অনুষ্ঠানে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে দেখা যেত তাঁকে। এ বার আনুষ্ঠানিকভাবে তৃণমূলে যোগ দিলেন তিনি। রবিবার তৃণমূল ভবনে তাঁদের দলে যোগদান করান রাজ্যের মন্ত্রী ব্রাত্য বসু এবং তৃণমূলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষ। কৌশানীর সঙ্গে এ দিন তৃণমূলে যোগ দেন অভিনেত্রী তথা তৃণমূলের ইম্পার সদস্য পিয়া সেনগুপ্তও। পরিচালক অনুপ সেনগুপ্তের গৃহিণী পিয়া জনপ্রিয় অভিনেতা সুখেন দাসের মেয়ে। তাঁদের ছেলে বনিও পেশায় অভিনেতা।
এর আগে তৃণমূলের হাত ধরে রাজনীতিতে অভিষেক ঘটে দেবশ্রী রায়, শতাব্দী রায়েরও। দেব, মিমি, নুসরতও সেই পথেই এগিয়েছেন। কিন্তু ২০১৫-য় অভিনয় জগতে পা রাখা কৌশানী এত অল্পদিনেই রাজনীতিতে কেন, তা নিয়ে কৌতূহল রয়েছে। তবে কৌশানীর যুক্তি, ‘এখন যা টালমাটাল অবস্থা। এটাই সিদ্ধান্ত নেওয়ার সঠিক সময় বলে মনে হল। ছোট থেকেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ভক্ত আমি। আমার গোটা পরিবার একটা দলকেই অনুসরণ করে, সেটা হল তৃণমূল। তাই তৃণমূলের কাণ্ডারী হওয়া আমার কাছে সৌভাগ্যের ব্যাপার।’’
শুধুমাত্র মমতার জন্যই যে তিনি রাজনীতিতে এসেছেন, সে কথাও সাফ জানিয়ে দেন কৌশানী। তিনি বলেন, ‘‘আমার প্রথম ছবি পারব না আমি ছাড়তে তোকে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কেও ছাড়তে পারব না আমি। কী ভাবে লসাধারণ মানুষের জন্য উনি কাজ করেন, তা কাছ থেকে দেখেছি আমি। দিদি সারা ক্ষণ আমাদের পাশে ছিলেন এবং থাকবেন। জানি আমার বয়স অল্প। কিন্তু যে পেশায় রয়েছি, সেখানে অনেকে আমাকে দেখে অনুপ্রাণিত হন। তাই আমি চাই আমাকে দেখে আরও মানুষ এগিয়ে আসুন। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সৈনিক হয়ে উঠুন। অভিনেত্রী হিসেবে সাধ্যমতো মানুষকে সাহায্য করার চেষ্টা করেছি। দলের সঙ্গে যুক্ত হয়ে আরও বেশি করে মানুষের জন্য কাজ করতে চাই।’’
মুখ্যমন্ত্রীর আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়েই রাজনীতিতে আসার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বলে জানান পিয়াও। সেই সঙ্গে ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়ালে নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর জন্মবার্ষিকীর অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রীকে দেখে ‘জয় শ্রী রাম’ স্লোগানেরও তীব্র নিন্দা করেন তিনি। এই ধরনের আচরণ বাংলার সংস্কৃতির সঙ্গে খাপ খায় না বলে মন্তব্য করেন তিনি।
এর আগে, তারকা নামিয়ে ভোট কুড়নোর অভিযোগ উঠেছে তৃনমূলের। কৌশানীর মতো অভিনেত্রীকে রাজনীতির মঞ্চে নিয়ে আসায় নতুন করে সেই সেই প্রশ্ন মাথাচাড়া দিতে শুরু করেছে ইতিধ্যেই। কিন্তু ব্রাত্য বলেন, ‘‘দেশের শিল্প জগৎ সঙ্কটে। অনুরাগ কশ্যপ, নাসিরুদ্দিন শাহদের পর্যন্ত হুমকি দেওয়া হচ্ছে। দলিতদের হয়ে মুখ খোলায় আয়ুষ্মান খুরানাকেও হেনস্থা করা হচ্ছে। এ রাজ্যে পরিস্থিতি তেমন নয়। অনেকেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সমালোচনা করেন। কিন্তু তাঁদের এ রাজ্যে হেনস্থা করা হয় না। বিজেপি ক্ষমতায় এলে বাক স্বাধীনতা বলে থাকবে না।’’ যাঁরা তৃণমূল ছেডে় বিজেপি-তে গিয়েছেন, তাঁদের ফিরে আসার আর্জিও জানান ব্রাত্য।
খুলনা গেজেট/এনএম