শেরপুরের নকলায় ভ্রাম্যমাণ আদালতে ৬ মাসের কারাদণ্ডপ্রাপ্ত দৈনিক দেশ রূপান্তর পত্রিকার উপজেলা সংবাদদাতা শফিউজ্জামান রানা (৪৫) জামিন পেয়েছেন। মঙ্গলবার (১২ মার্চ) বিকেল পাঁচটায় আপিল আদালতের বিচারক অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট জেবুন নাহার উভয় পক্ষের শুনানি শেষে তার অর্ন্তবর্তীকালীন জামিনের আদেশ দেন। আপিলকারী সাংবাদিক রানার পক্ষে শুনানিতে অংশ নেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী-সাংবাদিক আব্দুর রহিম বাদল ও রফিকুল ইসলাম আধার। রাষ্ট্রপক্ষে অংশ নেন সহকারী পাবলিক প্রসিকিউটর আরিফুর রহমান সুমন।
এদিকে জামিন আদেশের পর সন্ধ্যায় জেলা কারাগার থেকে মুক্তি পেয়েছেন সাংবাদিক শফিউজ্জামান রানা। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন জেল সুপার হুমায়ুন কবীর খান।
জানা যায়, মঙ্গলবার দুপুরে ভ্রাম্যমাণ আদালতে সাজার বিষয়ে জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আব্দুল্লাহ আল খায়রুমের কাছে সাজা বাতিল ও জামিনের জন্য আপিল দায়ের করেন সাংবাদিক রানার আইনজীবীরা। পরে তিনি তা গ্রহণ ও শুনানির জন্য অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট জেবুন নাহারের আদালতে পাঠান। এর আগে নকলের আবেদনের প্রেক্ষিতে সোমবার দুপুরে নকলা থেকে ভ্রাম্যমাণ আদালতের নথি জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের জুডিসিয়াল মুন্সিখানায় এসে পৌঁছে। পরে নকলখানা থেকে সন্ধ্যায় পাওয়া যায় সহিমুহুরির নকল।
এর আগে সাংবাদিক রানার ভ্রাম্যমাণ আদালতে সাজার ঘটনায় প্রকাশিত খবরের প্রেক্ষিতে ১০ মার্চ থেকে দুদিনের জন্য সরেজমিন তদন্তে আসেন তথ্য কমিশনার শহীদুল আলম ঝিনুক। ওই সময় জেলা কারাগারে আটক সাংবাদিক রানার নকলার বাসায় গিয়ে রানার স্ত্রী বন্যা আক্তার ও দশম শ্রেণি পড়ুয়া ছেলে শাহরিয়ার জামান মাহিম এবং নকলার ইউএনও সাদিয়া উম্মুল বানিন ও ইউএনও’র সিএ শিলা আক্তারসহ শেরপুর প্রেসক্লাবের সভাপতি রফিকুল ইসলাম আধার, সাধারণ সম্পাদক আদিল মাহমুদ উজ্জল ও যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মানিক দত্তের সঙ্গে কথা বলেন।
উল্লেখ্য, গত ৫ মার্চ মঙ্গলবার দুপুরে নকলার ইউএনও কার্যালয়ে প্রবেশ করে সিএ শীলা আক্তারকে নাজেহাল, অফিসের গুরুত্বপূর্ণ ফাইল তছনছ এবং উপজেলা পর্যায়ে দাপ্তরিক এক সভায় ইউএনও সাদিয়া উম্মুল বানিনের কর্তব্য কাজে বাধাসহ বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির অভিযোগে তাকে আটক করা হয়। পরে উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যজিস্ট্রেট মো. শিহাবুল আরিফ পরিচালিত ভ্রাম্যমাণ আদালতে তাকে ৬ মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দিয়ে জেল হাজতে পাঠানো হয়।
পরিবারের তরফ থেকে অভিযোগ করা হয়, সাংবাদিক রানা তথ্য অধিকার আইনে একটি প্রকল্পের তথ্য চাইতে গিয়ে ওই পরিস্থিতির শিকার হয়েছেন। ঘটনাটি নিয়ে সারাদেশে তোলপাড় সৃষ্টি হলেও রানার নানা বিতর্কিত কর্মকাণ্ডের কারণে নীরব থাকে নকলার গণমাধ্যমকর্মীরা।
খুলনা গেজেট/কেডি