সন্ধ্যায় কলকাতার কেওড়াতলা মহাশ্মশানে অভিনেতা সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়ের শেষ কৃত্য সম্পন্ন হয়েছে। ‘অপুর সংসার’ দিয়ে ক্যারিয়ার শুরু করা অপুর শেষ বিদায়ে আজ হাজির হয়েছিলেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জিসহ রাজ্যের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিরা। পরিবারের সদস্যদের বাইরে ফেলুদাকে বিদায় জানাতে হাজির হয়েছিলেন সূর্যকান্ত মিশ্র, বিমান বসু, দেব, রাজ চক্রবর্তী, কৌসিক সেনসহ বিশিষ্টজনেরা।
ভারতীয় গণমাধ্যমগুলোর খবর, ভারতীয় সময় ৬টা ৩৮ মিনিটে কেওড়াতলা মহাশ্মশানে নেওয়া হয় সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়ের মরদেহ। এরপর রাজ্য সরকারের পক্ষে সৌমিত্রকে সম্মাননা জানান রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি। পরে সৌমিত্রের শেষকৃত্যানুষ্ঠান শুরু হয়।
এর আগে ভারতীয় সময় দুপুর ১টায় কলকাতার বেলভিউ নার্সিংহোমে সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়কে দেখতে যান পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি। এ ছাড়া কলকাতার সিনেমায় অভিনয় করা একধিক তারকা তাঁকে দেখতে গিয়েছিলেন।
এরপর বাংলা সিনেমার অপুকে নেওয়া হয় তাঁর বাসভবনে। সেখান থেকে তাঁকে নেওয়া হয় তাঁর কাজের স্থান টেকনিশিয়ান স্টুডিওতে। সেখান থেকে ভারতীয় সময় সাড়ে ৩টায় তাঁকে নেওয়া হয় রবীন্দ্রসদনে। সেখানে শেষবার শিল্পী-কুশলী-স্বজন শ্রদ্ধা জানান এ অভিনেতাকে।
১৯৩৫ সালে জন্মগ্রহণ করা সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায় ১৯৫৯ সালে অস্কারজয়ী পরিচালক সত্যজিৎ রায়ের ‘অপুর সংসার’ সিনেমার মাধ্যমে অভিনয়জগতে পা রাখেন। এরপর তিনি সত্যজিৎ রায়ের ৩৪টি সিনেমার ১৪টিতে অভিনয় করেছেন। তাঁর অভিনীত চরিত্রগুলোর মধ্যে সবচেয়ে জনপ্রিয় ‘ফেলুদা’। তিনি সত্যজিৎ রায়ের পরিচালনায় ‘সোনার কেল্লা’ এবং ‘জয় বাবা ফেলুনাথ’ সিনেমায় ফেলুদার ভূমিকায় অভিনয় করেছিলেন। পরে তিনি মৃণাল সেন, তপন সিংহ, অজয় করের মতো জনপ্রিয় পরিচালকদের সঙ্গে কাজ করেছেন।
শুধু সিনেমা নয়, অসংখ্য নাটক, যাত্রা এবং টিভি ধারাবাহিকে অভিনয় করেছেন সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়। আবৃত্তিশিল্পী হিসেবেও তাঁর নাম অত্যন্ত সম্ভ্রমের সঙ্গে উচ্চারিত হয়। তিনি কবি ও অনুবাদক।
ভারত সরকার কর্তৃক সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায় ২০০৪ সালে ‘পদ্মভূষণ’ ও ২০১২ সালে ‘দাদাসাহেব ফালকে পুরস্কার’ লাভ করেন। এ ছাড়া ২০১৭ সালে তিনি ফ্রান্স সরকার কর্তৃক ‘লিজিওন অব অনার’ লাভ করেন। একই বছর পশ্চিমবঙ্গ সরকার কর্তৃক ‘বঙ্গবিভূষণ’ পুরস্কার অর্জন করেন। যদিও ২০১৩ সালে এই পুরস্কার প্রত্যাখ্যান করেছিলেন বর্ষীয়ান এ অভিনেতা।
খুলনা গেজেট/কেএম