সাতক্ষীরায় অপহৃত দশম শ্রেণীর স্কুলছাত্রী মেয়েকে উদ্ধারের দাবিতে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন এক অসহায় মায়ের। শনিবার সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে আশাশুনি উপজেলার দক্ষিণ একসরা গ্রামের আবদুল হাকিম মোল্যার স্ত্রী মোছাঃ ফিরোজা খাতুন এই দাবি জানান।
লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, আমার মেয়ে মোছাঃ জাকিয়া খাতুন (১৫) বিছট নিউ মডেল মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণীতে পড়ালেখা করে। স্কুলে যাতায়াতের পথে মধ্যম একসরা গ্রামের মোশারফ ঢালীর ছেলে মোঃ আলমগীর ঢালী তার সহযোগি একই গ্রামের মোজাম ঢালীর ছেলে মোঃ শহিদুল ঢালী ও কাকবসিয়া গ্রামের আইয়ুব ছেলে মোঃ নাজমুলের সহায়তায় আমার মেয়েকে বিভিন্নভাবে উত্যক্ত করতো। একপর্যায়ে আলমগীর ঢালী আমার মেয়েকে বিভিন্ন প্রলোভন দেখিয়ে বিয়ের প্রস্তাব দিলে জাকিয়া খাতুন তার প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করে। করোনার কারণে স্কুল বন্ধ থাকায় মেয়ে বাড়িতে থেকে লেখাপড়া করে। কিন্তু আলমগীর মেয়েকে রাস্তাঘাটে একা পেলে বিভিন্নভাবে উত্যক্ত করতে থাকে। বিষয়টি আলমগীরের অভিভাবকদেরকে অবহিত করলে সে ক্ষিপ্ত হয়ে উঠে এবং তার সহযোগিদের সহায়তায় আমার মেয়েকে অপহরণের ষড়যন্ত্র করতে থাকে।
ফিরোজা খাতুন আরো বলেন, গত ২৪ জুলাই বিকালে মেয়ে জাকিয়া খাতুন আনুলিয়ার একটি কম্পিউটার প্রশিক্ষণ কেন্দ্র থেকে বাড়ি ফেরার পথে সন্ধ্যা ৬ টার দিকে মধ্যম একসরা গ্রামের তিনরাস্তার মোড়ে পৌঁছালে আলমগীর, শহিদুল ও নাজমুল আমার মেয়েকে জোরপূর্বক মটর সাইকেলে উঠিয়ে অপহরণ করে নিয়ে যায়। পরে মেয়েকে একসরা গ্রামের নিকাহ রেজিস্ট্রার আনারুলের বাড়িতে নিয়ে তার ইচ্ছার বিরুদ্ধে জোরপূর্বক বিয়ের প্রস্তুতি নেয়। বিষয়টি জানতে পেরে ২৯ জুলাই ভোর রাত ২টার দিকে আমরা সেখান থেকে মেয়েকে উদ্ধার করি। এ ঘটনায় আমি নিজে বাদি হয়ে ৩ আগষ্ট আলমগীর ঢালী, শহিদুল ও নাজমুলের বিরুদ্ধে আশাশুনি থানায় একটি মামলা দায়ের করি। এতে আলমগীর গংরা আরো ক্ষিপ্ত হয়ে উঠে এবং মামলা তুলে না নিলে আমার মেয়েকে ফের অপহরণ করবে বলে হুমকি দিতে থাকে। এ ঘটনায় আমার ছেলে নুরুজ্জামান আসামীদের বিরুদ্ধে থানায় সাধারণ ডায়েরি করে।
ফিরোজা খাতুন অভিযোগ করে বলেন, গত ১৯ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যা সোয়া ৬টার দিকে আমার মেয়ে জাকিয়া খাতুন বাড়ির পিছনে পুকুরে হাত মুখ ধুতে গেলে আলমগীর, শহিদুল, নাজমুল ও মধ্যম একসরা গ্রামের মৃত তকিম ঢালীর ছেলে জহুরুল ঢালী, মোশরাফ ঢালী এবং মোজাম ঢালীসহ অজ্ঞাতনামা আরো ৩/৪ জন জোরপূর্বক মটরসাইকেল উঠিয়ে আমার মেয়েকে ফের অপহরণ করে নিয়ে যায়। এখনো পর্যন্ত আমার মেয়েকে উদ্ধার করতে পারিনি। অপহরণকারিরা প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়িয়ে মামলা তুলে নিতে আমাদেরকে বিভিন্নভাবে হুমকি ধামকি দিচ্ছে। আমার ধারণা আসামীরা আমার মেয়েকে হত্যা করে লাশ গুম করে ফেলতে পারে।
তিনি অপহৃত মেয়েকে উদ্ধার পূর্বক অপহরণকারিদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণে সাতক্ষীরা পুলিশ সুপারসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেন।
খুলনা গেজেট/এনএম