অন্তর্বর্তী সরকার ও নির্বাচন কমিশন আন্তরিক হলে আগামী জুনের মধ্যে সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন দেওয়া সম্ভব বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি জাতীয় নির্বাহী কমিটির তথ্য বিষয়ক সম্পাদক আজিজুল বারী হেলাল। তিনি বলেন নির্বাচন নিয়ে ধোয়াশাপূর্ণ বক্তব্য না দিয়ে নির্বাচনের দিন-তারিখ ঠিক করে দিলে জনগণ নির্বাচনমুখী হয়ে যাবে। নির্বাচন যত তাড়াতাড়ি হবে ততই এই সরকার এবং সাধারণ মানুষের জন্য মঙ্গলজনক হবে। বুধবার (১৮ ডিসেম্বর) বিকেলে রূপসায় ৮দলীয় চেয়ারম্যান কাপ ফুটবল প্রতিযোগিতার পুরস্কার বিতরণী প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, বাংলাদেশের জনগণ প্রত্যাশা করে এই সরকার দ্রুত সময়ের মধ্যে একটি নির্বাচন ব্যবস্থা করে দেবে। অতি দ্রুত সময়ের মধ্যে নির্বাচন দিলে জনগণ তাদের পছন্দমতো প্রার্থীকে ভোট দিতে পারবে। নির্বাচিতরা এ দেশের সার্বভৌমত্বকে আরও শক্তিশালী করবে, সব ষড়যন্ত্র মোকাবিলা করবে। এ দেশের মানুষও চায় এই সরকার একটি নির্বাচনের মধ্য দিয়ে দেশের স্বাধীন সার্বভৌমত্ব ও গণতন্ত্র আরও শক্তিশালী করবে। ফ্যাসিস্ট সরকারের দোসররা দেশকে অশান্ত করার অপচেষ্টা করছে, দ্রব্যমুল্যের উর্ধ্বগতিতে জনগণের নাভিশ্বাস উঠেছে। দেশের মহামারী আকার ধারণ করেছে ডেঙ্গু। এসব কিছুই সমাধান করতে পারে একটি নির্বাচিত গণতান্ত্রিক সরকার।
পতিত আওয়ামী স্বৈরচারের দোসররা এখনো ঘাপটি মেরে আছে মন্তব্য করে কেন্দ্রীয় এ নেতা আরো বলেন, ভারত আমাদের মুক্তিযুদ্ধের সময় পাশে দাঁড়িয়েছিল সে জন্য কৃতজ্ঞ। তবে বিগত বহু বছর তারা কড়ায়গণ্ডায় প্রতিদান আদায় করেছে। আজও ফারাক্কার পানির সমস্যা নিরসন হয়নি। সীমান্তে মানুষ মারা হচ্ছে। ভারতের বাঁধ খুলে দিয়ে বাংলাদেশকে অনাকাক্সিক্ষত বন্যার সৃষ্টি করা হয়। আমরা রাষ্ট্র মেরামত করার লক্ষ্যে ৩১ দফা নিয়ে কাজ করছি। অতিদ্রুত জাতীয় নির্বাচন দিতে হবে। নির্বাচন করতে কত দিন লাগে সেটি দেশের মানুষ জানে। যেহেতু পতিত স্বৈরাচার সরকার সাড়ে ১৫বছরে দেশের সকল গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে ধ্বংস করেছে। সে জন্যই সকল রাজনৈতিক দলগুলো অন্তর্বর্তী সরকারকে সহযোগিতা করছেন। তিনি অন্তর্বতীকালীন সরকারের উদ্দেশে বলেন, সব সংস্কার তো আপনারা করতে পারবেন না। কখন নির্বাচন হবে সেটা স্পষ্ট করুন। প্রধান উপদেষ্টা বলেন একরকম। আবার তার প্রেস সচিব বলেন আরেক রকম। আপনাদেরকে তো আমরাই সবাই মিলে সহযোগিতা করছি। আপনার কে কথা বলবেন দায়িত্ব নিয়ে বলুন। না হলে মানুষ বিভ্রান্ত হবেন। মানুষের দুর্বিষহ জীবন। এখান থেকে উত্তরণের জন্য জনগণের নির্বাচিত সরকার প্রতিষ্ঠার বিকল্প নেই। পতিত স্বৈরাচার সরকারের প্রেত্মাত্মারা এখনো ঘাপটি মেরে আছে। তাদেরকে চিহ্নিত করে গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনুন। তবেই পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসবে। যারা দেশের ভেতরে ও বাইরে থেকে ষড়যন্ত্র করতে চায় তাদেরকে দেশবাসী স্বাধীনতা সার্বভৌমত্বের প্রশ্নে ঐক্যবদ্ধ হয়ে প্রতিরোধ গড়ে তুলবে, ইনশাআল্লাহ।
এন.সি ইউনাইটেড ক্লাব ও ৫নং ঘাটভোগ ইউনিয়ন বিএনপির আহবায়ক এস এম এ মালেক এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন খুলনা জেলা বিএনপির সদস্য সচিব আবু হোসেন বাবু, জেলা বিএনপির সাবেক যুগাম আহবায়ক খান জুলফিকার আলী (জুলু), এনামুল হক সজল, রূপসা উপজেলা বিএনপির আহবায়ক মোল্লা সাইফুর রহমান, সদস্য সচিব জাবেদ হোসেন মল্লিক, জেলা কৃষকদলের সদস্য সচিব আবু সাইদ, আরাফাত রহমান কোকো স্মৃতি সংসদ খুলনা জেলার আহবায়ক আরিফুর রহমান, সঞ্চালনায় ছিলেন ৫নং ঘাটভোগ ইউনিয়ন বিএনপি যুগ্ম আহবায়ক মিকাইল বিশ্বাস প্রমূখ। এর আগে বুধবার খুলনা মহানগর ও জেলা কৃষক দলের ৪৪তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে দুস্থ অসহায় শীতার্ত মানুষের মাঝে কম্বল বিতরণ করেছেন আজিজুল বারী হেলাল।
খুলনা গেজেট/ টিএ