খুলনা, বাংলাদেশ | ৫ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ | ২০ নভেম্বর, ২০২৪

Breaking News

  বিশ্বকাপ বাছাই : মার্টিনেজের ভলিতে পেরুর বিপক্ষে জয় পেল আর্জেন্টিনা

অনুমতি ছাড়াই ভোট কেন্দ্রের ভেতরে গিয়েও ছবি তুলতে পারবেন সাংবাদিকরা

গেজেট ডেস্ক

ভোটের স্বচ্ছতা তুলে ধরতে সংবাদকর্মী ও পর্যবেক্ষকরা প্রিজাইডিং অফিসারের অনুমতি ছাড়াই কেন্দ্রে ঢুকে ছবি তুলতে পারবেন বলে জানিয়েছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল।

মঙ্গলবার চট্টগ্রামের ১৬ আসনের প্রার্থী ও মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলাদাভাবে মতবিনিময়ের পর সাংবাদিকদের তিনি বলেন “আমরা বলেছি আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনটি যেকোনোভাবে অবাধ, সুষ্ঠু, গ্রহণযোগ্য ভাবে তুলে আনতে হবে। এ বার্তা আমরা সবাইকে দিয়েছি। তারাও অনুধাবন করতে পেরেছেন।

“ভোট প্রক্রিয়ার স্বচ্ছতা ফুটে উঠবে মিডিয়ার মাধ্যমে। মিডিয়া কর্মীরা ভোট কেন্দ্রের ভেতরে গিয়েও ছবি তুলতে পারবেন। এক্ষেত্রে মিডিয়া কর্মী এবং পর্যবেক্ষকদের কেন্দ্রে প্রবেশে প্রিজাইডিং অফিসারের অনুমতি নিতে হবে না, সরাসরি প্রবেশ করতে পারবেন। তারা ছবি তুলতে পারবেন এবং সত্য মিথ্যা জনগণকে তাৎক্ষণিক জানিয়ে দিতে পারবেন।”

তিনি জানান, নির্বাচন কমিশন একটা অ্যাপ তৈরি করেছে, যার মাধ্যমে দুই ঘণ্টা পরপর কত ভোট পড়েছে মানুষ সেটি মোবাইল ফোনে জানতে পারবে।

সিইসি সকালে নগরীর ষোলশহর এলাকায় এলজিইডি মিলনায়তনে মতবিনিময় করেন চট্টগ্রাম জেলার ১৬ আসনের প্রার্থীদের সাথে। দুপুরে আইস ফ্যাক্টরি রোডের পিটিআই মিলনায়তনে মাঠ প্রশাসনের কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন।

প্রার্থীদের সঙ্গে মতবিনিময়ের প্রসঙ্গে হাবিবুল আওয়াল বলেন, “প্রার্থীদের জানিয়েছেন কিছু কিছু বিক্ষিপ্ত ঘটনা ছাড়া আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি সার্বিকভাবে ভালো আছে। কয়েকটি স্থানে পোস্টার ছেঁড়াছিঁড়ি, দুই একটা নির্বাচনি কার্যালয়ে আগুন দেওয়া এবং মারামারির ঘটনা ঘটেছে।

“সার্বিকভাবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী এবং রিটার্নিং কর্মকর্তা যেমন- জেলা প্রশাসক, এসপি, বিভাগীয় কমিশনার- তাদের আচরণে তারা সন্তুষ্ট। ঝামেলার ব্যাপারে তাদের অবহিত করার পরপর তারা দ্রুত পদক্ষেপ নিয়েছেন বলে প্রার্থীরা জানিয়েছেন।”

কোনো কোনো প্রার্থী অভিযোগ করেছেন তাদের বিরোধী প্রার্থীরা প্রচার চালাচ্ছেন যে, ভোট দিয়ে কী হবে? আবার কেউ কেউ বলছেন ভোট যেখানে দেন, জায়গা মত চলে যাবে।

প্রধান নির্বাচন কমিশনার বলেন, “আমরা শুনেছি, এর মধ্যে আমরা জেনে গেছি এটা ইচ্ছাকৃত অপপ্রচার কিংবা ভ্রান্ত ধারণাপ্রসূত।

“তাদের আমরা আশ্বস্ত করেছি ভোট যেখানেই দেন, সেটা আরেক জায়গায় চলে যাবার সম্ভাবনা নেই, সেটা একশ পার্সেন্ট নিশ্চিত। আগের রাতে ভোট নিয়ে যেসব কথা হয়েছে, সেগুলো ৯৯ নয় ১০০ শতাংশ নিশ্চিত করতে পারি, সেটা কোনো অবস্থাতেই হবে না।”

ভোটের দিন সকালে কেন্দ্রে ব্যালট পেপার যাবে জানিয়ে সিইসি বলেন, “প্রার্থীদের পোলিং এজেন্ট সকলে ভোট কেন্দ্রে অবস্থান করে এবং স্বচ্ছ ব্যালট বাক্সগুলো খালি কিনা সেটা দেখে নিয়ে বাক্সগুলো বন্ধ করা হয় এবং পোলিং এজেন্টরা যদি সর্বক্ষণ সেখানে উপস্থিত থেকে ভোট প্রক্রিয়াটা পর্যবেক্ষণ করেন সেক্ষেত্রে ব্যালট পেপার ১০ মাস আগে গেলেও অবৈধ ব্যালট পেপার বক্সে ঢোকানোর কোনো সম্ভাবনা নেই।”

“পাশাপাশি ভোট শুরু হওয়ার পর থেকে গণনা ও ঘোষণা পর্যন্ত পোলিং এজেন্টরা সেখানে দাঁড়িয়ে থেকে দেখবেন গণনা সঠিকভাবে হয়েছে কিনা। যদি গণনা সঠিকভাবে হয়ে যায়, তাহলে নিশ্চিতভাবে ভোট অবাধ সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হয়ে গেল।”

ভোটগ্রহণ প্রক্রিয়া নিয়ে মানুষের অনাস্থা ও অবিশ্বাস দূর করতে নির্বাচনে কোনো পেশীশক্তির আবির্ভাব হলে ভোট গ্রহণ বন্ধ করে দেওয়ার কথাও জানান তিনি।

“পেশীশক্তির যদি কোনো ঘটনা ঘটে থাকে তাহলে আমরা মাঠ প্রশাসনকে বলে দিয়েছি ভোটগ্রহণ বন্ধ করে দিতে। তারা না করলে আমরা অবগত হলে ঢাকা থেকে বন্ধ করে দিতে পারব, ভোটগ্রহণ প্রক্রিয়া নিয়ে যে একটা অনাস্থ বা অবিশ্বাস, যাতে তা দূরীভূত হয়।”

প্রশাসনের কর্মকর্তার সঙ্গে মতবিনিময়েও ওসি, এসপি, ইউএনওদের বক্তব্যেও ভোটের পরিবেশ ভালো থাকার তথ্য এসেছে বলে জানান প্রধান নির্বাচন কমিশনার।

ভোটের শেষ দিন পর্যন্ত মাঠ পরিস্থিতি যাতে স্বাভাবিক রাখা হয় সবাইকে এমন বার্তা দেয়া হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, “ভোটগ্রহণের দিনের বিষয়টা কিন্তু অনেকদিন ধরে থাকবে। ভোট অবাধ, সুষ্ঠু হয়েছে কিনা, সেখানে কারচুপি হয়েছে কিনা সেটা নিশ্চিত করার জন্য যারা ভোট পরিচালনা করবেন তাদের বলা হয়েছে। আনঅথরাইজড কেউ যাতে কেন্দ্রে প্রবেশ করতে না পারে সেটা শতভাগ নিশ্চিত করতে হবে। …আমরা কঠোর বার্তা দিয়েছি এ জিনিসটা টলারেট করা যাবে না।”

এক প্রশ্নে প্রধান নির্বাচন কমিশনার বলেন, “সহিংসতা কম-বেশি হচ্ছে, সেটাতে আমরা থেমে নেই। শুধু নির্বাচন কমিশন নয়, নির্বাচন কমিশনের এখতিয়ারটা শুধু ডেলিগেইট করে দেয়া আছে রিটানিং কর্মকর্তা ও পুলিশের কাছে। তারা যদি ব্যবস্থা নিতে না পারেন, আমাদের কাছে রেফার করতে বলেছি।

“অনেক ঘটনায় আমরা অনেককেই গ্রেপ্তার করেছি। তারপরও যদি কোনো ঘটনা ঘটে, আমরা চট করে প্রার্থিতা বাতিল করতে পারি না। তিনি গুরুতর অসদাচরণ করেছেন এবং সে লক্ষ্যে যদি সাক্ষ্যসাবুদ আমাদের সামনে উপস্থাপিত হয়, আমরা যদি তা বিশ্বাস করি, তাহলে কমিশন তার প্রার্থিতা বাতিল করতে পারবে।”

চট্টগ্রামের বিভাগীয় কমিশনার মো. তোফায়েল ইসলামের সভাপতিত্বে মতবিনিময় সভায় বক্তব্য রাখেন চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন কমিশনার কৃষ্ণপদ রায়, চট্টগ্রাম রেঞ্জের ডিআইজি নূর-ই আলম মিনা, ও জেলা প্রশাসকরা।

খুলনা গেজেট/কেডি




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!