বর্ষা মৌসুমের শেষের দিকে এসেও বৃষ্টির অভাবে ভুগছে সাতক্ষীরার তালার কৃষকেরা। শ্রাবণের মাঝামাঝি সময়ে আমনের চারা রোপন করতে না পেরে বিপাকে পড়েছেন তারা।
তালার বারুইহাটি গ্রামের হায়বাত আলী সরদার জানান, ‘দুই বিঘা জমিতে ধান লাগাই। কিন্তু এবার বৃষ্টির অভাবে তাও কী হবে বলা যাচ্ছে না। বর্ষার অভাবে যদি ধান ঠিক মত না হয়, তাহলে আবার চাল কিনে খাওয়া লাগবে।’
একই অবস্থা তালা উপজেলার অন্য কৃষকদেরও। প্রচন্ড রোদে জমি শুকিয়ে যাওয়ায় আমন ধানের চারা আর পাট নিয়ে বিপাকে পড়েছেন তারা।
সরেজমিনে কৃষি জমি ঘুরে দেখা যায়, কৃষকেরা ভ্যানযোগে অর্ধশুষ্ক ও পরিপক্ব পাট নিয়ে ছুটছে দূরের কোনো খালে জাগ দিতে। আমন ধানের বীজতলা অনাবৃষ্টিতে চৌচির হয়ে গেছে। ভরা বর্ষা মৌসুমে কোনো খাল-বিলে পানি নেই, তাই পাট জাগ দেওয়ার (পচানোর) পানি নিয়ে চরম দুশ্চিন্তায় রয়েছেন কৃষকরা। পাশাপাশি আমন ধানের চাষ নিয়ে অনিশ্চয়তায় ভুগছেন তারা।
তালা উপজেলা কৃষি অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, এবছর তালা উপজেলায় নয় হাজার ছয়শ পাঁচ হেক্টর জমিতে আমন ধান চাষের লক্ষ্যমাত্রা স্থির করা হয়েছে এবং পাট চাষ হয়েছে তিন হাজার পঞ্চান্ন হেক্টর জমিতে।
আটারই গ্রামের কৃষক মোঃ জামাত আলী মোড়ল জানান, ‘আমি এবছর প্রায় ২২ কাটা জমিতে পাট লাগিয়ে ছিলাম, ফলনও ভালো ছিল। কিন্তু বৃষ্টির অভাবে পাট জাগ দেয়ার জায়গা না থাকায় কাটতে দেরি করছি। অনেক পাট গাছ শুকায় মরে গেছে। এখনও যদি বৃষ্টি না হয় তাহলে আমাদের আর বাঁচার কোনো উপায় নেই।’
তিনি আরও জানান, এবার বিঘে দুই জমিতে ধান করার জন্য বীজতলা করলেও বৃষ্টির অভাবে চারার মান খুব খারাপ। আর বৃষ্টি না হলে ধান চাষ করাও তাদের জন্য মুশকিল হয়ে যাবে।
তালা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ হাজিরা খাতুন জানান, বৃষ্টি না হওয়ায় এবার আমন চাষ কিছুটা বিলম্বিত হতে পারে। তবে লক্ষ্যমাত্রা ব্যাহত হবে না বলে আশা প্রকাশ করেছেন তিনি।
খুলনা গেজেট/ এস আই