Edit Content
খুলনা বাংলাদেশ
বুধবার । ২৩শে জুলাই, ২০২৫ । ৮ই শ্রাবণ, ১৪৩২

ই-পেপার

Edit Content

জীবনের ঝুঁকি নিয়ে করোনা রোগী সিজারিয়ান ডাঃ আছমা মানবিকতার উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত

বশির হোসেন

করোনা মহামারিতে সর্বত্রই ‘ইয়া নাফছি, ইয়া নাফছি’ অবস্থা। সন্তান ফেলে আসছে জন্মদাতা মাতা-পিতাকে। শেষ বিদায়ে দাফন-সৎকারেও অংশ নিচ্ছেন না স্বজনরা। আক্রন্তের খবর শুনে শুধু সঙ্গ নয়, যোগাযোগও রাখছেন না বন্ধুরা। সেখানে করোনা আক্রান্ত গর্ভবতীকে সিজার করে যাবতীয় স্বাস্থ্যসেবা দিয়ে মানবতার এক উজ্জ্বল নিদর্শন সৃষ্টি করলেন ডাঃ আছমা। খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের গাইনী বিভাগের রেজিস্ট্রারের দায়িত্ব পালন করছেন তিনি।

খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে কোভিড-১৯ পজিটিভ নিয়ে মুসলিমা নামের একজন গর্ভবতী ভর্তি করা হয়। তখন তার স্বামী ও বাড়ির অনেকেই অবহেলা শুরু করলেও, দায়িত্ব অবহেলা করেননি ডাঃ আছমা। ওই রোগীর প্রসব বেদনা ও বাচ্চার কম নড়াচড়ার কারণে সিজারিয়ান অপারেশন অপরিহার্য হয়ে পড়লে দায়িত্ব কাঁদে তুলে নেন ডাঃ আছমা। প্রাথমিকভাবে পরীক্ষার পরে গাইনী বিভাগের প্রধান প্রফেসর ডাঃ শামসুন্নাহার লাকির সাথে পরামর্শ করে দ্রুত সময়ের মধ্যে সিজারের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। ডাঃ আছমার নেতৃত্বে সিজারিয়ান দল সকল ভয় বাঁধা তুচ্ছ করে সফল অপারেশন করেন। একটি ফুটফুটে পুত্র সন্তানের জন্ম হয়। সুচনা হল মানবিকতার উজ্জ্বল উদহারণ।

এছাড়া খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের করোনা আইসোলেশন ওয়ার্ডেও মেডিকেল অফিসার হিসাবে টানা দায়িত্ব পালন করেছেন ডাঃ আছমা। খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে করোনা সাসপেকেটেড প্রত্যেকটি সিজারিয়ান অপারেশনের সাথে সম্পৃক্ত আছেন মানবিক এই করোনা যোদ্ধা।
সাতক্ষীরা জেলার দেবহাটা থানার চকমাহমুদালিপুর গ্রামের জন্ম নেয়া ডাঃ আছমা খুলনা মেডিকেল কলেজ থেকে ১৬তম ব্যাচে এমবিবিএস পাশ করেন। ৩৩তম বিসিএস ক্যাডারের এই কর্মকর্তা বর্তমানে রেজিষ্ট্রার হিসাবে খুমেক হাসপাতালের গাইনী বিভাগে সেবা দিচ্ছেন। তার স্বামী ডাঃ ফরিদ বর্হিবিভাগের মেডিসিন বিভাগের মেডিকেল অফিসার হিসাবে কর্মরত আছেন। পেশাগত জীবনে ইতিমধ্যে গাইনীতে এফসিপিএস, এমএস ও এমআরসিওজি (লন্ডন) ডিগ্রি সম্পন্নের শেষ ধাপে আছেন তিনি।

ডাঃ আছমা বলেন, খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের গাইনি বিভাগ বাংলাদেশের যেকোন উন্নতমানের হাসপাতালের সার্ভিসের থেকে কোন অংশে কম নয়। এখানের সিনিয়র ম্যাডামরা আমাদের সরাসরি শিক্ষক ছিলেন, এখনও আমাদের হাতে-কলমে শিক্ষা দেন। পেশাগত দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি মানবিক হওয়ার শিক্ষাও আমরা তাদের কাছে পাই। করোনাভাইরাসের সংক্রমনের পুরোবিশ^ আতঙ্কিত হয়ে গুটিয়ে নিলেও আমরা একদিনের জন্য আমাদের সেবা বন্ধ করিনি। যখন করোনা পজেটিভ একজনের সিজারিয়ান অপারেশন করতে হবে শুনলাম। আমরা যদি তাকে ফিরিয়ে দিতাম তার যাওয়ার তো কোন যায়গা ছিল না। তাই জীবনের ঝুঁকি থাকলেও তাকে বাঁচানোই তখন মুখ্য হিসাবে দেখেছিলাম। সামনের জীবনেও মানুষের সেবা করতে চান করোনা যুদ্ধের এই উজ্জ্বল নক্ষত্র।

খুলনা গেজেট/এমবিএইচ




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন