মঙ্গলবার । ৪ঠা নভেম্বর, ২০২৫ । ১৯শে কার্তিক, ১৪৩২

ঐক্যের তৎপরতা নেই, চূড়ান্ত ফোনের অপেক্ষায় প্রার্থীরা

নিজস্ব প্রতিবেদক

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সঙ্গে বৈঠক শেষে উচ্ছ্বসিত বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশীরা। কেন্দ্রীয় নেতাদের ফোন, বৈঠকে অংশগ্রহণের আমন্ত্রণ এবং অংশগ্রহণকে প্রাথমিক বিজয় হিসেবে দেখছেন তারা। তবে বৈঠকে তারেক রহমানের ঐক্যের নির্দেশনা বাস্তবায়নে দৃশ্যমান কোনো তৎপরতা দেখা যায়নি। নিজেদের কর্মী সমর্থক নিয়ে মনোনয়নপ্রত্যাশীরা এখন চূড়ান্ত ফোনের অপেক্ষায় রয়েছেন।

দলীয় সূত্রে জানা গেছে, মনোনয়ন প্রত্যাশীদের সঙ্গে ধারাবাহিক বৈঠকের অংশ হিসেবে গত সোমবার সন্ধ্যায় খুলনা বিভাগের নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। চেয়ারপারসনের গুলশান কার্যালয়ে এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। এর তিন দিন আগে থেকেই ফোনে নেতাদের আমন্ত্রণ দেওয়া শুরু হয়। কারা কারা ওই বৈঠকে আমন্ত্রণ পান-তা জানতে উৎসুখ ছিলেন নেতাকর্মীরা।

দেখা গেছে, বিএনপির বর্তমান কমিটির নেতারা যেমন বৈঠকে আমন্ত্রণ পেয়েছেন, তেমনি দীর্ঘদিন যারা দলের মধ্যে কোনঠাসা ছিলেন-এমন মনোনয়নপ্রত্যাশীরাও আমন্ত্রণ পেয়েছেন। প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনী তৎপরতা দৃশ্যমান নয়, এমন কয়েকজনও আমন্ত্রণ পেয়েছেন তারেক রহমানের সঙ্গে বৈঠকে।

নেতাকর্মীদের ধারণা ছিল, বৈঠকে তারেক রহমানের প্রার্থীদের বক্তব্য শুনবেন এবং কয়েকজনকে গ্রীন সিগন্যাল দেওয়া হবে। কিন্তু বৈঠকে এর কিছুই হয়নি। এতে মনোনয়নের বিষয়ে শতভাগ আশাবাদী নেতারা হতাশ হলেও খুশি অন্যরা।

নেতাকর্মীরা জানান, গতবছর ১৯ সেপ্টেম্বর জেলা বিএনপির কমিটি ভেঙে দিলে জেলা বিএনপির রাজনীতিতে চাপে পড়েন সাবেক আহ্বায়ক আমীর এজাজ খান। তার এলাকার কোনো কমিটিতেই তার অনুসারীদের রাখা হয়নি। ওই এলাকায় আগত নতুন নেতা জিয়াউর রহমানের পাপুলের পেছনে ছিলেন বর্তমান কমিটির নেতারা। এমন সংকটে কেন্দ্রের ফোনকে প্রাথমিক বিজয় হিসেবে দেখছে আমীর এজাজ খানের অনুসারীরা।

জানতে চাইলে আমির এজাজ খান বলেন, দাকোপ-বটিয়াঘাটা আওয়ামী লীগের ঘাটি হিসেবে পরিচিত। কেউ এখানে নির্বাচনের সাহস করে না। তিন বার পরাজিত হয়েছি কিন্তু মাঠ ছাড়িনি। দল এই কাজের মূল্যায়ন করবে বলে আমার বিশ্বাস ছিল। চূড়ান্ত পর্বে আমিই মনোনয়ন পাব।

জিয়াউর রহমান পাপুল বলেন, স্থানীয় মানুষ ও নেতাকর্মীদের অনুরোধে প্রথমবারে মতো নির্বাচনে অংশ নেওয়ার জন্য কাজ করছি। কেন্দ্রের ফোন পেয়েছি, আশা করছি তারা আমার ওপর আস্থা রাখবেন।

খুলনা-২ আসন থেকে ফোন পেয়েছেন এই আসনের সাবেক এমপি ও মহানগর বিএনপির সাবেক সভাপতি নজরুল ইসলাম মঞ্জু, বর্তমান নগর সভাপতি শফিকুল আলম মনা ও সাধারণ সম্পাদক শফিকুল আলম তুহিন। নগর বিএনপির রাজনীতিতে মঞ্জু প্রায় ৪ বছর ধরে কোনঠাসা। তার আমন্ত্রণকে বিজয় হিসেবে দেখছেন তার অনুসারীরা।

নজরুল ইসলাম মঞ্জু বলেন, প্রার্থীদের তৎপরতা, সামাজিক গ্রহণযোগ্যতা সবকিছুর বিষয়ে চেয়ারম্যানের ধারণা রয়েছে। এজন্য আমাকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। আশা করি সিদ্ধান্ত নিতে তিনি ভুল করবেন না।

খুলনা-৪ আসনের মনোনয়নপ্রত্যাশী পারভেজ মল্লিক বলেন, ‘দীর্ঘদিন ধরে এলাকার মানুষের জন্য কাজ করছি। দল যে আমাকে মনোনয়নের জন্য ডেকেছে-এটাকে কাজের মূল্যায়ন বলে মনে করছি।’

খুলনা মহানগর বিএনপির সভাপতি শফিকুল আলম মনা বলেন, ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ঐক্যবদ্ধ থাকার নির্দেশ দিয়েছেন, কিন্তু ঐক্য কাদের সঙ্গে করবো। দলের দুঃসময় যারা মাঠে ছিলেন না। ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের নির্দেশ অমান্য করেছে-তাদের সঙ্গে ঐক্যের বিষয় কেন্দ্রের হস্তক্ষেপ প্রয়োজন।

 

খুলনা গেজেট/এনএম




খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন