বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, একাত্তর ও গণতন্ত্র প্রশ্নে কোনো কম্প্রোমাইজ নয়। ১৯৭১ হচ্ছে আমাদের মূল কথা। স্বাধীনতার যুদ্ধ আমাদের মূল কথা, ওখানে কোনো কম্প্রোমাইজ নেই। গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় আমাদের কোনো কম্প্রোমাইজ নেই। আমরা অবশ্যই গণতন্ত্রে বিশ্বাস করি এবং গণতন্ত্রই চাই।
শনিবার (১৯ জুলাই) জাতীয় প্রেসক্লাবে গণতন্ত্র মঞ্চের উদ্যোগে জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তিতে ‘গণঅভ্যুত্থানের প্রত্যাশা ও দেশে গণতান্ত্রিক উত্তরণের পথ’ শীর্ষক এক আলোচনা সভায় তিনি এ কথা বলেন।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, ভয়াবহ হাসিনা পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়েছে, আমরা একটা সুযোগ পেয়েছি নতুন করে বাংলাদেশে একটা গণতান্ত্রিক ব্যবস্থাকে প্রতিষ্ঠিত করবার।দুর্ভাগ্যজনকভাবে আমরা দেখছি, যত দিন যাচ্ছে পরিস্থিতি যেন জটিল হয়ে উঠছে।
তিনি বলেন, আমরা কাছে যেটা মনে হয়, যত দিন যাচ্ছে ততই যারা গণতন্ত্র বিশ্বাস করে না, যারা জনগণের অগ্রযাত্রা বিশ্বাস করে না, যারা একটা শোষনহীন সমাজ গড়ে উঠার যে রাজনীতি, সেই রাজনীতি বিশ্বাস করে না- তারা আবার জোট পাকাচ্ছে। আমার কাছে মনে হয়েছে যে, ফ্যাসিস্ট ভেতরে ভেতরে আবার সংগঠিত হচ্ছে এবং ক্ষমতা ফিরে পাওয়ার চক্রান্তে লিপ্ত হয়েছে।
মির্জা ফখরুল বলেন, আমি সরকারের প্রতি আহ্বান জানাতে চাই যে, বাংলাদেশের বিরুদ্ধে যারা রয়েছে, গণতন্ত্রের বিরুদ্ধে যারা রয়েছে তারা আবার সংগঠিত হচ্ছে, গণতন্ত্রকে নস্যাৎ করবার জন্য কাজ শুরু করেছে।তাই দেরি না করে যত দ্রুত সংস্কার, সনদ এবং নির্বাচন- এই তিনটি বিষয়কে সামনে দ্রুত এগিয়ে যেতে পারা যায় ততই দেশের জন্য মঙ্গল হবে। দায়িত্বটা নি:সন্দেহে এই অন্তর্বর্তী সরকারের। আমরা খুব আশাবাদী যে, আমাদের অন্তবর্তীকালীন সরকারের যিনি নেতা, তিনি হচ্ছেন এদেশের একজন বরণ্যে ব্যক্তিত্ব, তিনি আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃতি একজন ব্যক্তি। যিনি তার বুদ্ধিমত্তা, প্রজ্ঞা, সততা এবং দেশপ্রেম দিয়ে গোটা জাতিকে ঐক্যবদ্ধ করে আমাদেরকে সেই লক্ষ্যে পৌঁছে দিতে সক্ষম হবেন।
তিনি বলেন, আমরা হঠাৎ হঠাৎ লক্ষ্য করে দেখছি যে, মবোক্রেসি, হত্যা, ছিনতাই, গুম ভয়ানকভাবে বেড়ে যাচ্ছে। এই বিষয়গুলো বিশেষ করে সচেতন নাগরিক এবং রাজনৈতিক কর্মী হিসেবে আমাদেরকে অত্যন্ত উদ্বিগ্ন করে তুলছে।আমি পার্টিকুলারলি কোনো রাজনৈতিক দল বা ব্যক্তির প্রতি কোনো কথা বলতে চাই না এবং বলিও না। আমি সংক্ষেপে যে কথাটা বলতে চাই যে, সুযোগ আমাদের সামনে এসেছে, এই সুযোগকে যদি আমরা হারিয়ে ফেলি তাহলে বাংলাদেশ আরও বহু বছর পিছিয়ে যাবে। প্রতিবার একটা করে অভ্যুত্থান হবে, জনগণ প্রাণ দেবে, আমাদের ছেলেরা প্রাণ দেবে এবং সুযোগ তৈরি হবে। আর আমরা আমাদের দায়িত্বহীনতার কারণে আমরা সেই সুযোগ হারাবো এটা হতে দেয়া উচিত নয়।
ফ্যাসিস্ট আন্দোলনে রাজনৈতিক দলগুলো ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনের কথা উল্লেখ করে ফখরুল বলেন, আমরা প্রমাণ করেছি যে, আমরা দেশকে ভালোবাসি। আমাদের শক্তি ক্ষুদ্র হোক, বৃহৎ হোক আমাদের যতটুকু শক্তি আছে, সেই শক্তি দিয়ে আমরা এদেশকে কিন্তু ফ্যাসিবাদ মুক্ত করার জন্য চেষ্টা করেছি। কেউ রক্তাক্ত হয়েছে, কেউ প্রাণ দিয়েছে, কেউ কারাগারে গেছে এবং দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া পর্যন্ত দীর্ঘ ৬ বছর কারাগারে কাটিয়েছেন, আমাদের তারেক রহমান সাহেব নির্বাসিত অবস্থায় আছেন।
তিনি বলেন, আজকে যে দায়িত্বশীলতা আমরা বিরোধী দলগুলো দেখিয়েছি, আমরা আশা করব যে, সরকারের প্রতিটি পর্যায়ে যারা দায়িত্বে রয়েছেন একটি সকল দলের কাছে গ্রহণযোগ্য একটা ব্যবস্থা যেটা জনগণের বন্দোবস্ত সেই বন্দোবস্তের একটা রুপরেখা আমাদের সামনে তুলে ধরবে এবং সেই রুপরেখা নিয়ে একমত হয়ে আমরা জনগণের কাছে যাবো,নির্বাচন হবে সেই নির্বাচনে আমাদের বিএনপির যে কমিটমেন্ট আমরা আবার সবাই মিলে দেশকে নির্মাণ করবার জন্য যে বিষয়গুলো কমিট করেছি সেই ৩১ দফা, তার বাস্তবায়ন করব।
খুলনা গেজেট/এএজে